সাতক্ষীরায় ছয় দিনেও সন্ধান মেলেনি দু’শিবির নেতার
৮ জানুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ১০:২৩

কোথায় আছেন ওই দুই শিবির নেতা?

পুলিশ অভিযানে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর ছয় দিনেও সন্ধান মেলেনি দুই শিবির নেতার। গত মঙ্গলবার ভোরে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের চরগ্রামের পুরনো মসজিদের দোতলা থেকে আটককৃত সাতজনের মধ্যে পাঁচজনকে ঘটনাস্থল ও ভিন্ন সময় উল্লেখ করে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয় পাঁচ শিবির কর্মীকে।

সন্ধান না পাওয়া দুইজন হলো- সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক ও তালা উপজেলার মকলন্দকাটি গ্রামের শেখ আব্দুল হকের ছেলে শেখ আব্দুল গফুর (২০)। তিনি সাতক্ষীরা সিটি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। অপরজন তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীমন্দকাটি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মোড়লের ছেলে শিমুল মোড়ল (১৮)। তিনি সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ইসলামিক ইতিহাসের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
গত রোববার সকালে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাব এলাকায় এসে তালার মকলন্দকাটি গ্রামের আব্দুল হক শেখ ও তার স্ত্রী শাহনাজ খাতুন জানান, তাদের ছেলে আব্দুল গফুর মাগুরায় যাওয়ার কথা বলে মঙ্গলবার ভোরে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে বের হয়। বিকেলে লোকমুখে খবর পান যে চরগ্রাম পুরনো মসজিদের দোতলা থেকে তাদের ছেলেসহ সাতজনকে পুলিশ পরিচয়ে চোখ বেঁধে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরদিন বুধবার খবর পান যে আটককৃত সাতজনের মধ্যে তার ছেলে গফুর ও শ্রীমন্দকাটি গ্রামের শিমুল মোড়ল ব্যতীত পাঁচজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে।

শ্রীমন্দকাটি গ্রামের আক্তারবানু জানান, গত মঙ্গলবার সকালে তার দুই ছেলে সুজন মোড়ল ও শিমুল মোড়লসহ সাতজনকে চোখ বেঁধে চরগ্রাম পুরনো মসজিদ থেকে পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে যায়। পরদিন সুজনসহ পাঁচজনকে পুলিশের ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। অথচ ছেলে ছাত্রশিবির কর্মী শিমুল মোড়লের সন্ধান রোববার সন্ধা পর্যন্ত পাননি।
তিনি আরো জানান, বুধবার থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা ও তাদের স্বজনরা তালা থানা, ডিবি অফিস ও জেলখানাসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় গফুর ও শিমুলের সন্ধান চালিয়েছেন। পুলিশ তাদের আটকের কথা অস্বীকার করলেও জেলহাজতে থাকা সুজন মোড়ল ও অন্য আসামিরা তালা থানা পুলিশ একইসাথে গফুর ও শিমুলসহ সাতজনকে আটক করে বলে দাবি করেছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, চরগ্রাম পুরনো মসজিদ এলাকায় গেলে শাহাদাৎ হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, আঞ্জুয়ারা খাতুন, শাহানারা খাতুন, ইউপি সদস্য শেখ মোজাম্মেল হোসেন, মসজিদের ইমামসহ অনেকেই জানান, গত মঙ্গলবার সকালে দিকে উপপরিদর্শক নাজমুলসহ পুলিশের চারজন দু’টি মোটরসাইকেলে প্রথমে নতুন মসজিদ এবং পরে পুরনো মসজিদ এলাকায় আসেন। পরে পুলিশের একটি জিপ এসে মসজিদের দোতলা থেকে কম বয়সী সাতজন যুবককে চোখমুখ বেঁধে নিয়ে যায়।
এ সময় তাদের এলাকা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হয়। কপোতাক্ষ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশের কামরুল ইসলাম, সবুজ, তুহিনসহ কয়েকজন জানান, গত বুধবার সকালে এই বিদ্যালয়ের ভেতর থেকে কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে এমনটি তারা শোনেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান জানান, আব্দুল গফুর ও শিমুল সম্পর্কে তার কিছু জানা নেই।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/283166