৩ জানুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ৯:১৪

আকিয়াবে রোহিঙ্গাদের এনভিসি কার্ড নিতে বাধ্য করছে প্রশাসন

অকালবৃষ্টিতে দুর্ভোগ

এবার রাখাইনের আকিয়াবে রোহিঙ্গাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) গ্রহণে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রোহিঙ্গারা। সম্প্রতি বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বললে তারা এ অভিযোগ করেন।

গত বৃহস্পতিবার আকিয়াবের ইমিগ্রেশন প্রধান উ সো টুয়ে এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বোমে ওয়্যার্লেস পাড়ায় স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সাথে বৈঠক করে। বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এনভিসি গ্রহণের জন্য রোহিঙ্গাদের চাপ দেয় এবং কার্ড নিতে বাধ্য করে।
ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জানান, সরকারি আদেশে রোহিঙ্গাদের প্রত্যেককে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) নিতে হবে। এটি নিলে সব কাজে সুযোগ-সুবিধা পাবে। অন্যথায় জীবন-জীবিকা দুর্বিষহ হবে রোহিঙ্গাদের।
প্রত্যুত্তরে রোহিঙ্গারা সরকারি কর্মকর্তাদের সাফ জানিয়ে দেন, অভিবাসন কার্ড নিবেন না তারা। ‘আমরা মিয়ানমারের নাগরিক। আমরা অভিবাসন কার্ড নিবো না।’

সম্প্রতি সেনা অভিযানের কারণে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে এলে আন্তর্জাতিক চাপে রাখাইন প্রদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মিয়ানমার সরকার। জাতীয় যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়ার আওতায় ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত সাত হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে এনভিসি কার্ড দেয়া হয়েছে।

অকাল বৃষ্টির দুর্ভোগে রোহিঙ্গারা
উখিয়া-টেকনাফে অকালে বৃষ্টি ও কনকনে শীতে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে ক্যাম্পের বাসিন্দাদের। বর্ষণের পানিতে চলাচলের রাস্তা কাদায় একাকার হয়ে গেছে। পলিথিন আর ত্রিপলের ছাউনির ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে ক্যাম্পের অনেক রোহিঙ্গার আশ্রয়স্থল।

গত দুই দিনের মাঝারি বর্ষণে জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা তাদের চাহিদা মতো ত্রাণসামগ্রী পেয়ে থাকলেও হঠাৎ বৃষ্টিতে চলাচলের রাস্তা কাদায় একাকার হয়ে পড়ার কারণে ঝুপড়ি থেকেই বের হতে পারছেন না। রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, দুর্ভোগের শিকার রোহিঙ্গাদের অনেকেই বৃষ্টি থেকে ছেলেমেয়েদের রক্ষার জন্য মাথার ওপর পলিথিন দিয়ে কোনো রকম দিন কাটাচ্ছেন। খাবার কিনতে কিংবা প্রয়োজন মেটাতে কেউ বাইরে যেতে পারছেন না। পাহাড়ি ঢালুর ক্যাম্পগুলোতে একটু বৃষ্টি হলে হাঁটুপরিমাণ কাদা হয়। পথঘাট হয়ে পড়েছে মারাত্মক পিচ্ছিল।

রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ-দুর্দশার কথা স্বীকার করে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: নিকারুজ্জামান জানান, বৃষ্টি হলে শিবিরের রাস্তাঘাটের অবস্থা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য রোহিঙ্গা শিবিরের রাস্তাঘাটের উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/281779