২ জানুয়ারি ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৩৪

বিদায়ী বছরে সড়কে প্রাণ গেল ৫৩৯৭ জনের

তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

গত তিন বছরের মধ্যে বিদায়ী ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনা ও এর ফলে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংগঠন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ (নিসচা)। সংগঠনটি জানিয়েছে, বিদায়ী বছরে সারা দেশে তিন হাজার ১৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার ৩৯৭ জন নিহত ও সাত হাজার ৭৩৬ জন আহত হয়েছেন। ২০১৬ সালে দুই হাজার ৩১৬টি দুর্ঘটনায় চার হাজার ১৪৪ জন নিহত ও পাঁচ হাজার ২২৫ জন আহত হয়েছেন। এক বছরের ব্যবধানে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুহার বেড়েছে ২৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর ২০১৫ সালে দুই হাজার ৬২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার তিনজন নিহত ও ছয় হাজার ১৯৭ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। দুর্ঘটনার জন্য আইন ও নিয়ম উপেক্ষাকে বড় কারণ হিসেবে দায়ী করেন তিনি।

ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, বিদায়ী বছরে সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে মোট দুর্ঘটনা ঘটেছে তিন হাজার ৩৪৯টি। এতে পাঁচ হাজার ৬৪৫ জন নিহত ও সাত হাজার ৯০৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রেলপথে ১৪৭টি দুর্ঘটনায় ২০১ জনের মৃত্যু ও ১১৭ জন আহত হয়েছেন। আর নৌপথে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ৫৫ জন আহত হয়েছেন। সারা দেশের সব জেলার তুলনায় ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনার হার গত বছর ছিল সবচেয়ে বেশি। ঢাকা জেলায় ৪০১টি দুর্ঘটনা ঘটে। যেখানে মারা গেছেন ৪২৭ জন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুর্ঘটনার জন্য বেশি দায়ী বাস ও ট্রাক। বিদায়ী বছরে ৯৬৩টি বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাসের কারণে দুর্ঘটনা হয়। এ ছাড়া ৯৪১টি দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ট্রাক, মিনি ট্রাক ও মালবাহী গাড়ি। এ ছাড়া মোটরসাইকেলের কারণে ৭২০টি, কাভার্ডভ্যান জাতীয় যানবাহন ১০৭টি ও অন্যান্য যানবাহনের ৬১৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। আরও জানানো হয়, ২০১৭ সালে গাড়ি চাপায় দুই হাজার ৮০৪ জন মারা গেছেন। এ ছাড়া মুখোমুখি সংঘর্ষের কারণে এক হাজার ১৩১ জন, গাড়ি খাদে পড়ে ৩১১ জন, গাড়ি উল্টে গিয়ে ২০৬ জন ও অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনায় এক হাজার ১৯৭ জন মারা গেছেন।

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, জনবহুল এ দেশে সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থা যথেষ্ট উপযুক্ত নয়। এ কারণে দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। অশিক্ষিত চালক, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, অসচেতনতা, অনিয়ন্ত্রিত গতি, রাস্তা নির্মাণে ত্রুটি, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। দুর্ঘটনা কমানোর বিষয়ে কিছু সুপারিশ তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত সড়ক আইনে কঠোর সাজার বিধান যুক্ত এবং তা বাস্তবায়ন করা হলে সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে। সড়কের ত্রুটিগুলো দূর করতে হবে। রাজধানীর বিমানবন্দর, ফার্মগেট, নিউমার্কেটসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আন্ডারপাস নির্মাণ করতে হবে। পরিবহন ব্যবসাকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।

 

 

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/1870