সমঝোতায় স্বাক্ষরের পরও রাখাইনে নিধনযজ্ঞ থামেনি। সমঝোতার পরও রোহিঙ্গাদের স্থাপনায় প্রতিদিনই আগুন দিচ্ছে উগ্রপন্থী বৌদ্ধরা। রোহিঙ্গা পালিয়ে আসা কিছুতেই থামছে না। কোনো না কোনো সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসছেন। গত রোববার রাতে কিয়ক্ততে উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে স্কুলপড়ুয়া দুই রোহিঙ্গা ছাত্র মারা গেছে। নিহত দু’জনই কিয়ক্তের উচ্ছিপাড়া এলাকার ইলিয়াছের ছেলে বলে জানা গেছে। তাদের একজন দশম শ্রেণী এবং অন্যজন নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিল। সূত্র জানিয়েছে, প্রতিদিনের মতো নিজস্ব ওষুধের দোকানে রাতে ঘুমিয়ে পড়ে দুই ভাই। এ সময় বাইরে থেকে দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয় উগ্রপন্থীরা। দোকান থেকে বের হওয়ার পথ না পেয়ে আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে দুই ভাই। এ দিকে রাখাইন রাজ্য থেকে টেকনাফের কোনো না কোনো সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে রাতে ও দিনে রোহিঙ্গারা নৌকায় এখনো বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন। গত রবি ও সোমবার ৮০ পরিবারের ২৪৭ জনকে ত্রাণ সহযোগিতা দিয়ে টেকনাফে নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সাবরাং হারিয়াখালী ত্রাণকেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো: দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, রোববার সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পালিয়ে আসেন আরো ৮০টি পরিবারের ২৪৭ জন রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষ হারিয়াখালী ত্রাণ কেন্দ্রে। পরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা ও প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, সুজি, চিনি, তেল, লবণ ও একটি করে কম্বল দিয়ে বাসে ২৪৭ জনকে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে পাঠানো হয়েছে।
২৩ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হয়। তবে ২৫ নভেম্বর আরাকানের মংডুর কাছে মিয়াও মি চ্যাঙ গ্রামে আগুন দিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। পরের এক সপ্তাহের মধ্যে চারটি গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। এখনো বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। মংডু, বুচিডং আর রাচিডং শহরের আশপাশের প্রায় এক হাজার গ্রামে আগুন দেয়। এ বছর আগস্ট মাসের শেষের দিকে আরাকানে সামরিক অভিযান শুরুর পর এসব গ্রামে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা শুরু হয়।