১৭ ডিসেম্বর ২০১৭, রবিবার, ৯:০৪

কল্যাণপুরে খণ্ডিত লাশের পর সদরঘাটে দুই পা উদ্ধার

রাজধানীর কল্যাণপুরে সড়কে ফেলে রাখা একটি পরিত্যক্ত লাগেজ থেকে মাথা ও হাত-পাবিহীন এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের এক দিন পর কোমর থেকে খণ্ডিত দুটি পা উদ্ধার করা হয়েছে সদরঘাট থেকে। পুলিশ বলছে, এ দুটি পা কল্যাণপুরে উদ্ধার করা লাশের খণ্ডিত অংশ হতে পারে।
ডিএনএ পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে। এর মাধ্যমেই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
গতকাল শনিবার সকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালসংলগ্ন ব্যস্ত সড়কে পড়ে থাকা দুটি লাগেজে পাওয়া গেছে দুটি পা।
সূত্রাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আকতার হোসেন কালের কণ্ঠকে জানান, পা দুটি লাগেজের ভেতর প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়ানো ছিল। এর মধ্যে কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশ ছিল ছোট একটি লাগেজে। আর হাঁটু থেকে নিচের অংশ ছিল আরেকটি বড় লাগেজে। আর্থাৎ একজনকে হত্যার পর দেহের বিভিন্ন অংশ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে আলাদা করা হয়েছে। সেই অংশ আবার দুই ভাগ করে দুটি লাগেজে ভরা হয়।

যেভাবে উদ্ধার : প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আকতার বলেন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের পূর্ব পাশের লালকুঠি ‘সাইকেল’ মাঠসংলগ্ন ব্যস্ত সড়কে পাশাপাশি দুটি লাগেজ পড়ে ছিল।
স্থানীয়দের চোখে পড়লেও তারা কেউ ওই লাগেজের খোঁজ নেয়নি। সকাল ৭টার দিকে মানসিকভাবে অসুস্থ এক ব্যক্তি লাগেজ দুটি দেখে এগিয়ে যায়। কৌতূহলবশত একটি লাগেজ খুলে মানবদেহের অংশ দেখে চিৎকার করে ওঠে। স্থানীয় লোকজন দেখার পর পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, উদ্ধার করা দুই পা প্রথমে সূত্রাপুর থানায় নেওয়া হয়। এরপর মিটফোর্ড মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। কারণ গত শুক্রবার কল্যাণপুরে যে ব্যক্তির শুধু দেহটি উদ্ধার করা হয়, তার আনুমানিক (৩৮-৪০ বছর) বয়সের সঙ্গে এখানে উদ্ধার হওয়া দেহের অংশগুলোর মিল আছে। দুই জায়গায় উদ্ধার হওয়া দেহের অংশ একই ব্যক্তির হতে পারে। এখন দুই হাত ও খণ্ডিত মাথা উদ্ধার হলেই বিষয়টি আরো পরিষ্কার হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ।
দারুস সালাম থানার ওসি মো. সেলিমুজ্জামান কালের কণ্ঠকে জানান, হত্যাকাণ্ডটি অতি সম্প্রতি ঘটতে পারে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে।

এক দিনের ব্যবধানে দুটি থানা এলাকায় মানবদেহের অংশ উদ্ধার হওয়া নিয়ে পুলিশও কিছুটা বিপাকের মধ্যে আছে। এরই মধ্যে দারুস সালাম থানা ও সূত্রাপুর থানার পুলিশ যৌথভাবে এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন। গতকাল বিকেলে তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, ওই ব্যক্তিকে কোথাও খুন করে শরীরের বিভিন্ন অংশ আলাদা করা হয়েছে। অনেকটা গাছের ডালপালার মতো শরীর থেকে মাথা, হাত, পা আলাদা করা হয়েছে। সূত্রাপুরে উদ্ধার করা পা দুটি কল্যাণপুরে উদ্ধার করা ব্যক্তিরই হতে পারে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে জানিয়ে এসআই দেলোয়ার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কেউ এসে লাশের খোঁজ করেনি। নিখোঁজ ব্যক্তিদের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ঘেঁটে দেখা হচ্ছে। ’

 

http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2017/12/17/578416