১৬ ডিসেম্বর ২০১৭, শনিবার, ৯:৫১

ঢাকা-টাঙ্গাইল-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে নিত্যযানজট

ঢাকা-টাঙ্গাইল-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে নিত্য যানজটে চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এ মহাসড়কে চার লেনের কাজ চলমান থাকায় বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত যানজট হচ্ছে। তবে টাঙ্গাইল শহর বাইপাস থেকে এলেঙ্গা হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সড়কে যানজট বেশি হচ্ছে।
টাঙ্গাইল শহর থেকে এলেঙ্গার দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। যানজটের কারণে মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করতে সময় লাগছে দুই ঘণ্টা। কয়েক দিন ধরেই এ মহাসড়কে ধীর গতিতে যানবাহন চলাচল করছে। এতে ক্ষণে ক্ষণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। কোনো কোনো সময় রাস্তার ওপর যানবাহন বিকল হয়ে পড়লে যানজট তীব্র হয়। এ ছাড়া রাস্তায় খানাখন্দতো আছেই।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার ভোর ৪টায় এলেঙ্গায় একটি আলুবোঝাই ট্রাক বিকল হয়ে যায়। এতে মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। বিকল হওয়া ট্রাকটি সরিয়ে নিতেও দেরি হয়েছে। এ জন্য মহাসড়কে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টাঙ্গাইল শহর বাইপাস পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া সাপ্তাহিক ছুটি এবং শনিবার বিজয় দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ৩০টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচলকারী যানবাহনের সংখ্যা গড়ে ১৩ হাজার।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইল শহর বাইবাসের রাবনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ সারিতে আটকে আছে যানবাহন। অন্তত আধা ঘণ্টা পর কয়েক মিনিট খুবই ধীর গতিতে গাড়ি চলে আবার থেমে যায়। সেখানে কথা হয় ট্রাকচালক মিলনের সাথে। তিনি বলেন, আমি সাড়ে ৯টায় টাঙ্গাইলের করটিয়া থেকে বগুড়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছি। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মাত্র রাবনা বাইপাস পর্যন্ত আসতে পেরেছি। অথচ এটুকু রাস্তা আসতে সময় লাগে মাত্র ১০ মিনিট। এ রাস্তা নিয়ে আমরা খুবই যন্ত্রণায় আছি।
প্রায় ৪০ মিনিট ধরে রাবনা বাইপাসে বসে আছেন আরেক ট্রাকচালক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘টাঙ্গাইলে খুব যানজট হয়। আমরা গাড়ি নিয়ে চলতেই পারছি না।’
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় প্রতি বৃহস্পতিবার এ মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে টাঙ্গাইল শহর থেকে কালিহাতীর পালিমার উদ্দেশে বাসে উঠেন হোমিও ডাক্তার মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘টাঙ্গাইল শহর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছতেই আমার সময় লেগেছে সোয়া দুই ঘণ্টা। এভাবে কি যাতায়াত করা যায়?’

গত বুধবার টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড মসজিদ থেকে আসরের নামাজ পড়ে ভূঞাপুরের উদ্দেশে বাসে উঠেন শিক্ষানবিশ আইনজীবী মোশারফ হোসেন খান। টার্গেট ছিল ভূঞাপুরে গিয়ে মাগরিবের নামাজ পড়া। কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ভূঞাপুর গিয়ে মাগরিবের নামাজ পড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য! যানজটের কবলে পড়ে এলেঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছতেই আমার মাগরিবের নামাজ কাজা হয়ে গেল।’ কেউ কেউ আবার যানজট এড়াতে চার গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে বিকল্প রাস্তায় চলাচল করছেন।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময় রাস্তার ওপর গাড়ি বিকল হয়ে যায়। সেগুলো রেকার দিয়ে সরিয়ে নিতে নিতেই যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া চার লেনের কাজ চলমান থাকায়ও বিভিন্ন সময় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট নিরসনে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। আশা করছি, দ্রুতই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/276927