১৫ ডিসেম্বর ২০১৭, শুক্রবার, ৯:৫৮

রংপুরে সেনা মোতায়েন হচ্ছে না সংসদ নির্বাচনেও সিদ্ধান্ত নেই

নির্বাচন কমিশন প্রকারান্তরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দাবিই পূরণ করে যাচ্ছে। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে রয়েছে আওয়ামী লীগ। আগামী ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। নির্বাচনী আইনে সেনা মোতায়েনের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে না। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের দাবি সত্ত্বেও সংসদ নির্বাচনে সেনা বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি উল্লেখ না করেই নির্বাচনী আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের এসব সিদ্ধান্ত প্রকারান্তরে আওয়ামী লীগের দাবিই পূরণ করছে বলে মনে করছে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্রমতে, গত ১৭ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপে আওয়ামী লীগের দাবিগুলোর মধ্যে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি ছিল অন্যতম। সেদিন ক্ষমতাসীন এ দলটি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিরোধিতা করে বলেছে, নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর হতে আইনশৃংখলা রক্ষার ক্ষেত্রে কোন পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা যাবে তা ১৮৯৮ সালের প্রণীত ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৯-১৩১ ধারায় ও সেনা বিধিমালায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। এটি দেশের এমন পরিস্থিতিতে যখন আইনশৃংখলা বাহিনী ব্যর্থ হয় তখন সেনা মোতায়েনের বিধান। এ বিধানের মাধ্যমে স্বাভাবিক নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সুযোগ নেই।
এদিকে ইতোমধ্যে ইসি রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ একত্রিত করেছে এবং নির্বাচনী আইনের খড়সা প্রস্তুত করেছে। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিদ্যমান সংজ্ঞায় কোনো পরিবর্তন আনছে না নির্বাচন কমিশন। ফলে আগামী নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েনের বিষয়টি অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিষয়টি বাদ রেখেই নির্বাচনী আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। এরইমধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ-আরপিও’র প্রায় এক ডজন অনুচ্ছেদে সংশোধনী আসছে। রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, নারী সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে এসব আইন সংস্কারের সুপারিশ আসে। সংলাপে পাওয়া প্রায় চার শতাধিক সুপারিশের মধ্যে ৩১টি প্রস্তাব খসড়া আকারে আমলে নিচ্ছে ইসির আইন সংশোধন কমিটি।

অপরদিকে আগামী ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করবে না নির্বাচন। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে না। বরং চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সিইসি জানান, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ২২ থেকে ২৩ জন সশস্ত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়াও আনসার-ভিডিপি, র্যা ব, বিজিবি, পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়াও আচরণবিধি লংঘনসহ বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণের জন্য ২২টি টিম ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। শুক্রবার থেকে নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজ শুরু করবেন।

http://www.dailysangram.com/post/311232