১৪ ডিসেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১১:০১

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট

মিয়ানমারের জেনারেলদের বিরুদ্ধে শাস্তির প্রস্তাব

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের দায়ে এবার মিয়ানমারের জেনারেলদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। মিয়ানমারের জেনারেলদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতাসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে আইনি ব্যবস্থাসহ ১২ দফা প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ফ্রান্সের স্ত্রাসবুর্গে ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে বলেন। মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়াসহ চলমান সংকটের মূল সমস্যাগুলো সমাধানের তাগিদ দিয়ে ৬ ডিসেম্বর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ১২ দফা প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। আজ বৃহস্পতিবার ওই প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হতে যাচ্ছে।
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং এর সদস্যরা রোহিঙ্গাদের ওপর ‘মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগের’ অভিযোগে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের ভবিষ্যতে আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এ ছাড়া দেশটির সঙ্গে সব ধরনের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা পর্যালোচনা করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। লুক্সেমবার্গে ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাউন্সিলের সদস্যরা ২৮ দেশের জোটের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান হলেও ওই আলোচনায় মূলত অধিকাংশ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নেন।

গত মঙ্গলবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ওই আলোচনায় ইইউর পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি ফেদেরিকা মোঘেরিনি তাঁর বক্তৃতায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্কতার সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সই হওয়া চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দেন। তাঁর মতে, পুরো পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে তা সূক্ষ্মভাবে নজর দেওয়া উচিত। নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া এখন আর রাজনৈতিক কোনো বিষয় নয়, বরং এটি এখন নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের কথা তুলে ধরে বলেন, তিনি যে দৃশ্য দেখেছেন, তা কখনো ভোলার নয়। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশই শিশু।
তবে ওই আলোচনায় মোঘেরিনি ছাড়া যে ২৬ জন এমপি অংশ নিয়েছেন, তাঁদের প্রায় সবাই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি, দায়ী সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য অবরোধ আরোপ ও বাণিজ্যসুবিধা বন্ধের তাগিদ দেন।

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1386306