১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, বুধবার, ৯:৫৮

তিন মাসে জ্বালানি কাঠের দাম দ্বিগুণ

দক্ষিণাঞ্চলে ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ

দক্ষিণাঞ্চলে গত তিন মাসের ব্যবধানে জ্বালানি কাঠের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। দাম বৃদ্ধির কারণে এক শ্রেণির মানুষ উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী উজাড় করে ফেলছে। এদিকে দফায় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় এলপি গ্যাস ব্যবহারে উত্সাহ হারিয়ে ফেলছে মানুষ।

দক্ষিণাঞ্চলে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরকারিভাবে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ সাধারণত জ্বালানি কাঠের ওপর নির্ভরশীল। শহর অঞ্চলে বিত্তবানরা বেসরকারি কোম্পানির সিলিন্ডার ভর্তি এলপি গ্যাস ক্রয় করে রান্নার কাজ করেন। গত এক বছরে এ গ্যাসের দাম বেড়েছে ৫ বার।

জানা গেছে, দারিদ্র্যপীড়িত দক্ষিণাঞ্চলের ৮০ ভাগ পরিবারই বাসা-বাড়িতে জ্বালানি হিসেবে কাঠ (লাকরি) ব্যবহার করে। তবে যে পরিমাণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে সে পরিমাণ কাঠ উত্পাদন বা সরবারহ নেই। বিসিকের কাঠ ব্যবসায়ী আবুল মিয়া জানান, এখন তারা অগ্রিম টাকা দিয়েও কাঠ কিনতে পারছেন না। উপকূল কিংবা নগরীর আশপাশের যেসব এলাকা থেকে দৈনিক হাজার হাজার মণ কাঠ আসতো তা এখন সীমিত আকারে আসছে। বেশি দামে ক্রয়ের কারণেই তারা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। গত তিন মাস পূর্বে প্রতিমণ রেইনট্রি জ্বালানি কাঠ বিক্রি হয়েছে দেড়শ’ টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২শ’ থেকে ২২০ টাকায়।

এদিকে নগরীর একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলপি গ্যাসের মূল্য তিন মাসের ব্যবধানে সিলিন্ডার প্রতি ৫০ টাকার ওপরে বেড়েছে। এ নিয়ে গত ৬ মাসের ব্যবধানে সিলিন্ডার প্রতি দাম বেড়েছে ১শ’ টাকার ওপরে । লাফিয়ে লাফিয়ে গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে অনেকেই নতুন করে জ্বালানি কাঠের দিকে ঝুঁকছেন।

কাঠের এ চড়া মূল্য দেখে এক শ্রেণির লোক কাঠ চুরি ও পাচার করছে। তারা বনবিভাগের প্রহরীদের ম্যানেজ করে মূল্যবান কাঠ নৌকা ও ট্রলার ভর্তি করে মোকামে নিয়ে বিক্রি করছেন। ইটভাটার পাশাাশি এসব কাঠ নগরীর মোকামগুলোতেও বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারা মাঝে-মধ্যে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করছেন। তবে যেভাবে কাঠের দাম বাড়ছে তাতে বন রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনকে আরো সতর্ক হতে হবে। উপকূলের বন উজাড় হলে ঝড় জলোচ্ছ্বাসসহ বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাবে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নগর সংলগ্ন চর হোগলা, শায়েস্তাবাদ, দুর্গাপুর, চরবাড়িয়া ও বাবুগঞ্জ রহমতপুর, চাঁদপাশা, কেদারপুর, বাকেরগঞ্জ, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ইটভাটাগুলোতে প্রকাশ্যে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।

 

http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/last-page/2017/12/13/242630.html