১১ ডিসেম্বর ২০১৭, সোমবার, ৫:১৬

দৃশ্যমান কোন ত্রুটি ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং

দৃশ্যমান কোন ত্রুটি ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং-এ রাজশাহীর জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় দিনই এই ঘটনা ঘটে চলেছে। কিন্তু এর প্রতিকার মিলছে না। এনিয়ে রাজশাহী বিদ্যুৎ বিভাগ যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে কর্মকর্তারাও যেন মুখে কুলুপ এঁটেছেন। প্রকৃত সমস্যাটা কোথায়- তাও তারা বলতে চান না।

গত শনিবার অপরাহ্নে টানা প্রায় চার ঘণ্টা বিদ্যুতবিহীন ছিলো রাজশাহী মহানগরী। গতকাল রোববারও বিকেলজুড়ে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়নি। শনিবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও ঝড়-ঝাপটা ছিল না, ছিল না দৃশ্যমান যান্ত্রিক কোনো ত্রুটিও। এরপরও শনিবার বিকেল পৌনে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত পুরো রাজশাহীতে বিদ্যুৎ ছিল না। কেন এ বিপর্যয়? তার প্রকৃত জানতে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চেষ্টা করা হলেও বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো কর্মকর্তা তার প্রকৃত কারণ জানাতে চাননি। উদ্বিগ্ন নাগরিকরাও ফোন করে হয়রান। অভিযোগের নম্বরের টেলিফোন তুলে রাখা হয়। শনিবার একে ছিলো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, তার ওপর বিদ্যুৎ গোলযোগ। সন্ধ্যা নামার পর দুইয়ে মিলে ভূতুড়ে নগরীতে পরিণত হয় বিভাগীয় শহর রাজশাহী। দুর্ভোগে পড়ে সন্ধ্যার মধ্যেই শহরের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎহীন শহরে সন্ধ্যায় কর্মস্থল থেকে বাড়িমুখো মানুষকে রিকশা, অটোরিকশা ও সিএনজি না পেয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় জরুরি কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। হঠাৎ এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ক্ষোভ জন্মে নগরবাসীর মধ্যে। খোঁজ নিতে গেলে মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালির রেন্টালা পাওয়ার গ্রিড কন্ট্রোল রুমের এক কর্মচারি জানান, জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে এই অবস্থা। ত্রুটিটাও বেশ হাস্যোদ্দীপক। ট্রান্সফরমারে পাখির বিষ্ঠা জমা হয়ে এই বিপর্যয় ঘটেছে। অতঃপর সে বিষ্ঠা পরিষ্কার করা হলে রাতে রাজশাহীর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল হয়। তবে এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি কাটাখালি পাওয়ার গ্রিডের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী পিজুস কুমার। জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা সাফ জানিয়ে দেন, নিষেধ আছে। এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না।

রাজশাহীতে বিদ্যুতের এই বেহাল দশা বেশ পুরনো। এনিয়ে ক্ষমতাসীন নেতাদের মাঝে-মধ্যে ‘কড়া’ বক্তব্য দিতে শোনা যায়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। নগরীর একজন ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি দলের নেতারা সামনে কী করে ক্ষমতা কব্জা করবেন তার প্ল্যান-প্রোগ্রাম সাজাচ্ছেন। কিন্তু বিদ্যুতের মতো জরুরি বিষয়ে তাদের যেন কিছুই করার নেই। বিদ্যুতসংশ্লিষ্ট একজন কর্মচারি জানান, এই বিভাগে এখন কোন জবাবদিহিতা বলে কিছুই নেই। কতোক্ষণ বিদ্যুৎ থাকলো কি আদৌ থাকলো না- এনিয়ে কারো কোন মাথাব্যাথাও নেই।

 

http://www.dailysangram.com/post/310775