১১ ডিসেম্বর ২০১৭, সোমবার, ১০:১৪

হঠাৎ করে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত : কঠোর ভাষা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি

ভেবেছিলাম আজকের কলামটি সম্পূর্ণভাবেই নিবেদিত করবো বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১০ লক্ষ রোহিঙ্গার ভবিষ্যৎ নিয়ে। কিন্তু পুরো লেখাটা রোহিঙ্গা ইস্যুতে ডেডিকেট করা যাবে কিনা তাতে আমার সন্দেহ হচ্ছে। কারণ এর মধ্যে দেশে এবং বিদেশে এমন গুরুতর সব ঘটনা ঘটছে যেগুলো সম্পর্কেও দুটো কথা না বললে চলে না। আমার আফসোস হয়, যখন দেখি যে দেশের এবং বিদেশের কয়েকজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীও ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে স্পষ্ট এবং সত্য কথা বলেন। অথচ বাংলাদেশে মুসলমান নামধারী কিছুসংখ্যক ব্যক্তি আছেন যারা বুদ্ধিজীবীর সাইনবোর্ড নিয়ে ঘুরে বেড়ান। অথচ ইসলাম এবং মুসলমান এই দুটি শব্দ শুনলে ওদের গায়ে জ্বালা ধরে। আসলে এরা কোনদিন ভাল জিনিস থেকে শিক্ষা নেবেন না। আমি একজন অতি বিখ্যাত হিন্দু মহিলার কথা দিয়ে শুরু করছি। তার নাম শোনেননি, এমন মানুষ ভারত ও বাংলাদেশে খুব কমই আছে। তার নাম মমতা ব্যানার্জী। সকলেই জানেন যে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

সেই মমতা ব্যানার্জী পবিত্র ইসলাম ও রাসূল (সা:) সম্পর্কে কি বলেছেন শুনুন। গত ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দৈনিক সংগ্রামের প্রথম পৃষ্ঠায় এ সম্পর্কে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তার শিরোনাম হলো, “ধর্ম জাতি বর্ণ নিয়ে উসকানি দেয়া হচ্ছে/ রাসূল (সা:) কাউকে আঘাত করেননি, মানুষের মুক্তির জন্য এসেছিলেন”। খবরে বলা হয়েছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমি সব ধর্মকে ভালোবাসি ও বিশ্বাস করি। যতক্ষণ জীবন থাকবে সব ধর্মের জন্য লড়াই করে যাব। মমতা বলেন, “বিশ্বনবী (সা:) দিবস পালিত হল ক’দিন আগে। তিনি কী বলেছেন? তাঁকে যখন আহত করা হয়েছে, তিনি বলেছেন, আমাকে আঘাত করেছ বলে আমি কাউকে আঘাত করবো না। আমি অভিশাপ দিতে পৃথিবীতে আসিনি। আমি মানুষকে মুক্তি দিতে এসেছি। আমি মানুষকে রক্ষা করতে এসেছি। এটা আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়।”

মমতা এরপর বলেন, “এটা মাথায় রাখবেন। তারা (মুসলমানরা) সবাই খারাপ হয়ে গেল? আর তোমরা বড় বড় শক্তি হয়ে গেলে? একটা করে সব গেরুয়া পতাকা হাতে নিচ্ছে, আর জিন্দাবাদ- জিন্দাবাদ, ধান্দাবাদ-ধান্দাবাদ, মুর্দাবাদ-মুর্দাবাদ করে বেড়াচ্ছে!” মমতা বলেন, “কে কী খাবেন তা কি ওরা ঠিক করে দেবেন? পাঞ্জাবিরা কী খাবেন তা কি ওরা ঠিক করে দেবেন? মুসলিম ভাই-বোনেরা কি খাবেন তা কি ওরা ঠিক করে দেবেন? হিন্দু ভাই-বোনেরা কি খাবেন তা কি ওরা ঠিক করে দেবেন? যার যা ইচ্ছা তা খাবেন।” দেশে ধর্ম, জাতি, বর্ণ নিয়ে উসকানি দেয়া হচ্ছে বলেও মমতা অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘২৫ বছর আগে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ জোর করে ভেঙ্গে ফেলা নিয়ে হিন্দু মুসলিম যে বিভাজন সৃষ্টি হয় সেই বিভাজন আজও চলছে। ‘অসহিষ্ণুতা’ আজ একটি রাজনৈতিক দল ও সরকারের কর্মসূচি!’‘একটা সরকারের কর্মসূচি কখনো একটা ধর্ম নিয়ে হতে পারে না। সরকারের কর্মসূচি সব মানুষকে নিয়ে হওয়া উচিত বলে মনে করেন মমতা ব্যানার্জী।
মমতা ব্যানার্জী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, যে রাজ্যে ৭২ শতাংশ মানুষ হলো হিন্দু। আর ২৮ শতাংশ মানুষ হলো মুসলমান। এমন হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও মুসলমানদের পক্ষে, বিশেষ করে তাদের রাসূল (সা:) সম্পর্কে এমন নির্ভিক ও বলিষ্ঠ উক্তি করলেন মমতা ব্যানার্জী। তিনি একবারও ভাবলেন না যে তার এই ধরনের উক্তির ফলে ৭২ শতাংশ হিন্দু সম্প্রদায় কি মনে করবে।
অথচ এর বিপরীতে বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মুসলমান এবং ১০ শতাংশ মানুষ হিন্দু। এক শ্রেণীর মুসলমান নামধারী তথা কথিত প্রগতিবাদী ব্যক্তি মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ এবং রাসূল (সা:) সম্পর্কে মমতার মত বলিষ্ঠ উক্তি তো দূরের কথা, তাদের ভাল দিক সম্পর্কে বলতেও কুণ্ঠাবোধ করেন।

॥দুই॥
ভারতে কট্টর হিন্দুরা বাবরি মসজিদ ভেঙ্গেছে। অত্যন্ত স্বাভাবিক কারণেই এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়। ভারতীয় মুসলমানদের এই প্রতিবাদকে বাংলাদেশের সেক্যুলার ও বাম নামে পরিচিত ঐ চিহ্নিত মুখগুলো সাম্প্রদায়িকতা বলে অপবাদ দেয়। মুসলমানরা প্রতিবাদ করলে হিন্দুরা মুসলমানদের ওপর চড়াও হয় এবং নির্বিচারে মুসলমানদের হত্যা করে। এই মুসলিম নিধন যজ্ঞের নায়ক ছিলেন তৎকালীন বিজেপির সুপ্রিমো লাল কৃষ্ণ আদবানি এবং গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদি। আদবানি এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পুরস্কার হিসেবে ভারতের উপ প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এবং কট্টর হিন্দুরা নরেন্দ্র মোদিকে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রমোশন দিয়ে বর্তমানে ভারতের প্রধান মন্ত্রী বানিয়েছেন। কট্টর হিন্দুরা অন্তত ২ হাজার মুসলমানকে সেদিন কচুকাটা করে। তার প্রতিবাদেও বাংলাদেশের এইসব তথাকথিত প্রগতিবাদীরা প্রতিবাদে একটি টুঁ-শব্দও করেনি। ভারত প্রেমে এতই মশগুল তারা।

অথচ বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যেও দুয়েকজনকে পাওয়া যায় যারা ভারতের সাম্প্রদায়িক সরকারকে তুলোধুনো করে এবং তাদের বাংলাদেশী অনুচরদেরও ধোলাই করে। এদের একজন হলেন বিশিষ্ট ব্লগার পিনাকি ভট্টাচার্য। তিনি লিখেছেন, “ আজ থেকে ২৫ বছর আগে ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছিল। ঠিক এইরকমের একটা ন্যক্কারজনক কাজ করেছিল তালেবানেরা আফগানিস্তানে বামিয়ানের হাজার বছরের প্রাচীন বুদ্ধমূর্তি ডিনামাইট বেধে উড়িয়ে দিয়েছিল। জঙ্গি ইসলামপন্থীদের হাতে বামিয়ানের মূর্তি ভাংগার পরে সারা পৃথিবীর শুভবুদ্ধির মুসলিম সংগঠনগুলো প্রতিবাদ জানিয়েছিল; আর তালেবানরা ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাবরি মসজিদ ভাঙার পরে আজ পর্যন্ত কোন হিন্দু সংগঠন এই ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদ তো জানায়ইনি বরং এই মসজিদ ভাংগার দুই কুশীলব ভারতের মতো পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একজন প্রধানমন্ত্রী আরেকজন উপ প্রধানমন্ত্রী হয়েছিল। বিষয়টা ইন্টারেস্টিং নয় কি?” বলাবাহুল্য, পিনাকি ভট্টাচার্য প্রধান মন্ত্রী বলতে অটল বিহারি বাজপেয়ী এবং উপপ্রধান মন্ত্রী বলতে লাল কৃষ্ণ আদবানিকে বুঝিয়েছেন। আমার প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশে ঐসব সেক্যুলার, বাম এবং তথাকথিত প্রগতিবাদী মুসলমানদের একজনও কি পিনাকির মত হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তির মত সত্য কথা বলার সততা রাখেন?
॥তিন॥
এতক্ষণ ধরে ওপরে যা বললাম সে বিষয় নিয়ে আজকে আর লিখব না। কারণ আজ ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সংবাদে দেখলাম, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কম্বোডিয়া থেকে ফিরে এসে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ঐ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন কিছু কথা বলেছেন যেটি সম্পর্কে দুটো কথা না বললে বিষয়টি বাসি হয়ে যাবে এবং এমন গুরুতর বিষয় তার গুরুত্ব হারাবে। তাই আসুন দেখা যাক ঐ দিনের সংবাদ সম্মেলনে দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া ও আগাম নির্বাচন সম্পর্কে তিনি কি বলেছেন। ৭ ডিসেম্বর দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণ থেকে আমরা তার বক্তব্য উদ্ধৃত করছি। তিনি বলেন, “বিএনপি নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে আসবে। এবার আর তারা ভুল করবে না। আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই। আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, এমন কোনো দৈন্যদশা সরকারের হয়নি যে আগাম নির্বাচন দিতে হবে। প্রায় এক ঘণ্টার সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিক একটি দেশে যে দলগুলো গণতন্ত্র চর্চা করে, সেসব দলের নির্বাচনে আসা কর্তব্য। তবে কে নির্বাচনে আসবে আর কে নির্বাচনে আসবে না, সে ব্যাপারে সরকারের কিছু করণীয় নেই। বিএনপিকে নির্বাচনে আনা নিয়ে সরকারের করণীয় বিষয়ে বারবার প্রশ্ন না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিএনপিকে নির্বাচনে আনা নিয়ে যদি আপনাদের এতই আগ্রহ থাকে, তাহলে তেলের টিন, ঘিয়ের টিন নিয়ে সেখানে যান। আমি অপাত্রে ঘি ঢালি না। তাকে আরো প্রশ্ন করা হয়, আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকার কোনো উদ্যোগ নেবে কি না? উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বরণডালা পাঠাতে হবে?’ একবার তাঁর (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে আমন্ত্রণ জানিয়ে ঝাড়ি খেয়েছি, অপমানিত হয়েছি, আর ঝাড়ি খাওয়ার-অপমানিত হওয়ার ইচ্ছে নেই। যাদের মধ্যে ভদ্রতাজ্ঞান নেই, তাদের সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছে নেই।’ তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘এ ধরনের ছোটলোকিপনা যারা করে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলেন কোন মুখে। আমার ওপর আপনারা এত জুলুম করেন কেন? কোন দল নির্বাচন করবে কোন দল নির্বাচন করবে না, তা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। এখানে আমাদের কী করার আছে।’

প্রধান মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে মেজর জেনারেল বানিয়েছেন আমার বাবা। বউ নিয়ে তিনি আসতেন। আমাদের বাসার নিচে মোড়া পেতে বসে থাকতেন। তাঁকে আপনারা বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক বলেন। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন, এটাই বহুদলীয় রাজনীতি?’ তিনি খালেদা জিয়ার সরকার প্রসঙ্গে বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছে। তারপরও দেশের স্বার্থে তাদের সঙ্গে কথা বলার উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, এবার নির্বাচনে না এসে আগুনসন্ত্রাস করলে জনগণই জবাব দেবে। জনগণই ব্যবস্থা নেবে।”
বহুদলীয় রাজনীতিতে বহু মত এবং বহু পথ থাকে। সেজন্যই সেটির নাম বহুদলীয় রাজনীতি। বহু মত বহু পথ না থাকলে বহু দলের প্রয়োজন কি? তাহলে তো এক দল হলেই চলতো। তাই একজন সাচ্চা গণতন্ত্রী হিসেবে আমরাও সমালোচনা এবং পাল্টা সমালোচনায় বিশ্বাস করি। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি। একই সাথে তিনি দেশের প্রধান মন্ত্রী। অন্যদিকে বেগম খালেদা জিয়ার দল সংসদে না থাকলেও তারাই যে আসল বিরোধী দল, সেটি শুধু বাংলাদেশীরা নয়, বিশ্ব সম্প্রদায়ও মেনে নিয়েছে। এছাড়া দেখুন, ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলুন, আর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলুন- সকলেই বাংলাদেশ সফরে এলে প্রধান মন্ত্রীর পরেই বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেন। বেগম খালেদা জিয়া তথা বিএনপি তথা বিরোধী দলের বক্তব্যের সাথে সরকারি দলের নেতা শেখ হাসিনা এক মত পোষণ নাও করতে পারেন। তিনি বিরোধী দলের মতের তীব্র বিরোধিতাও করতে পারেন। কিন্তু তার সমালোচনারও একটি ধরন থাকতে হবে। আমরা ওপরে তার বক্তব্যের একটি অংশের উদ্ধৃতি হুবহু তুলে দিয়েছি। এখন আপনারাই বলুন, এই ধরনের তীব্র ব্যক্তিগত আক্রমণের পর রাজনৈতিক পরিবেশ কি শান্ত থাকতে পারে? সেদিনই বিকাল বেলা এবং পরদিন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান মন্ত্রীর বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন। তার বক্তব্যের ভাষা ছিল অত্যন্ত কঠোর। পর্যবেক্ষক মহল বলেন, মির্জা ফখরুল একজন সদালাপী, সজ্জন, মৃদুভাষী ভদ্রলোক। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এবং মহাসচিব হিসেবে ৫/৬ বছর হলো তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। সর্বত্র তার বাচনভঙ্গি ও শব্দ চয়নকে জনগণ সাধুবাদ জানিয়েছে। সেই মির্জা ফখরুলও এবার কঠোর ভাষা প্রয়োগ করেছেন। আমরা দুঃখের সাথে বলছি যে, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচ্য সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি বিশেষ করে খালেদা জিয়ার সমালোচনা করতে গিয়ে যে ভাষা ব্যবহার করেছেন সেটির সুর এবং শব্দ চয়ন আরো মোলায়েম হতে পারতো। তিনি কি ভাষা ব্যবহার করেছেন সেটি আমরা ওপরে তুলে দিয়েছি। এই ভাষায় মির্জা ফখরুলের ভাষাকে কঠোর ভাষা প্রয়োগে উদ্বুদ্ধ করেছে।
এর ফলে গত ২/৩ দিন ধরে রাজনীতির মাঠ আবার উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। এই উত্তাপ যদি সীমা ছাড়িয়ে যায় তাহলে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য অনেকেই ওঁৎ পেতে আছে। প্রধান মন্ত্রী কি তাদেরকে এই মাছ শিকারের সুযোগ দেবেন? যদি দিতে না চান তাহলে বিবেকবান মানুষ আশা করবে যে আর দেরি না করে সরকার যেন অবিলম্বে বিএনপির দেওয়া সংলাপের প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন এবং আলাপালোচনার মাধ্যমে কেমন করে সর্বোচ্চসংখ্যক দলকে নির্বাচনে আনা যায় তার পথ বের করেন। অন্যথায় যেভাবে পরিস্থিতি গড়াচ্ছে তাতে সহসাই সেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তখন হায় হায় বলে বুক চাপড়ালে আর কোন লাভ হবে না। সুতরাং সময় থাকতেই সমস্ত রাজনীতিবিদ যেন স্বেচ্ছায় তাদের মুখে লাগাম টেনে ধরেন।

http://www.dailysangram.com/post/310638