৩০ নভেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৮

নন-ক্যাডারই থাকবেন শিক্ষকরা

আত্তীকরণে সরকারি হওয়া কলেজ

আত্তীকরণের মাধ্যমে সরকারি হওয়ায় কলেজের ১২ হাজার শিক্ষককে ক্যাডার নয়, নন-ক্যাডার পদই দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে তিনি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মন্ত্রী জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে এই বিধান রেখে নতুন আত্তীকরণ বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ বিষয়ে সম্মতিও পাওয়া গেছে।
ওই কলেজগুলোর ১২ হাজার শিক্ষককে ক্যাডার পদ না দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। এ বিষয়ে আশ্বাস দেওয়ার পরও আন্দোলন থেকে সরে যেতে রাজি নয় তারা। নতুন বিধিমালা প্রণয়ন বা পরিপত্র জারি হওয়ার পরই কেবল আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করবে বলে জানিয়েছেন সমিতির নেতারা।
তবে ক্যাডার মর্যাদার দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন আত্তীকরণের মাধ্যমে সরকারি হওয়ায় কলেজের শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতরাতে শিক্ষামন্ত্রী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিসিএস ও জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকরা দুজন দুই পদ্ধতিতে নিয়োগ পেয়েছেন। তাই জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের নন-ক্যাডার পদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি।
তিনি সম্মতি দিয়েছেন। ’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগে বছরে দু-একটি কলেজ সরকারি হতো। এখন একবারে অনেক কলেজ সরকারি হচ্ছে। তাই আত্তীকরণ বিধিমালায় পরিবর্তন আসছে।
তবে বিসিএস শিক্ষা সমিতির আন্দোলনের ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা যে আন্দোলন করছে তা অন্যায়। আমরা তাঁদের আশ্বাস দিয়েছি। তার পরও তাঁরা সেটা বুঝতে চাচ্ছেন না। বিসিএস শিক্ষকদের আমরা সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাঁদের যত সম্ভব পদোন্নতি দেওয়া যায় তা দিয়েছি। এরপরও তাঁরা কেন এমন করছেন তা বুঝতে পারছি না। ’

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার গতরাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা এক বছর ধরে নমনীয় কর্মসূচি পালন করেছি। এর মধ্যে যত কলেজ সরকারি হয়েছে সবই ২০০০ বিধিমালা অনুসারেই হয়েছে। তাই আমরা আশঙ্কা করছি নতুন যে ২৮৩টি কলেজ সরকারি হয়েছে সেগুলোও ওই বিধিমালা অনুসারে হবে। এ জন্য আমরা কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি পালন করেছি। ’
অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার জানান, তাঁদের পরবর্তী কর্মসূচি ৬ জানুয়ারি। মন্ত্রণালয়কে সময় দেওয়ার জন্যই তাঁরা কর্মসূচিতে দীর্ঘ বিরতি রেখেছেন। এর মধ্যে যদি জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডার বহির্ভূত রেখে নতুন বিধি প্রণয়ন করে বা পরিপত্র জারি করে তাহলে অবশ্যই তাঁরা কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন বলে জানান সেলিম উল্লাহ।

তবে জাতীয়করণে তালিকাভুক্ত কলেজ শিক্ষক পরিষদের এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান বলেন, ‘৪০ বছর যা চলছে তা উপড়ে ফেলা যায় না। আমাদের ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না করলে বিভেদ তৈরি হবে। একই কলেজে দুই ধরনের শিক্ষক থাকলে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব তৈরি হবে। সংবিধান অনুযায়ী কর্মের সমতা বিধান হবে না। ভবিষ্যতে শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে। ’
বিসিএস শিক্ষা সমিতির আন্দোলনকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে আতাউর রহমান বলেন, ‘জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার (আজ) আমরা জাতীয়কৃত সব কলেজে কালো ব্যাচ ধারণ কর্মসূচি পালন করছি। একই দাবিতে আগামী ৬, ৭ ও ৮ জানুয়ারিও আমরা একই কর্মসূচি পালন করব। ’


http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2017/11/30/571841