২৯ নভেম্বর ২০১৭, বুধবার, ১০:৪১

ভল্ট থেকে বের করা ৪৫ লাখ টাকা হাওয়া!

জয়পুরহাট জনতা ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান শাখা থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা রহস্যজনকভাবে চুরি হয়ে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা ও এক পিয়নকে জয়পুরহাট থানা-পুলিশ আটক করেছে। থানায় নিয়ে পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

জয়পুরহাট জনতা ব্যাংক লিমিটেড ও পুলিশের ভাষ্যমতে, জয়পুরহাট শহরের কেন্দ্রস্থল বাটার মোড় এলাকার প্রধান সড়কের উত্তর পাশের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় ব্যাংকটি। আজ মঙ্গলবার ব্যাংক খোলার পর ব্যাংকে স্বাভাবিক লেনদেন শুরু হয়। সকাল ১০টার দিকে ব্যাংকের ওই শাখার ক্যাশিয়ার রায়হান হোসেন ও পিয়ন আমানত হোসেন ৪৫ লাখ টাকা ব্যাংকের ভল্ট থেকে বের করে একটি কালো ব্যাগে ভরে ক্যাশ কাউন্টারের মেঝেতে রাখেন। ক্যাশ কাউন্টারের সঙ্গেই ব্যাংকের টাকা রাখার ভোল্ট। ক্যাশ কাউন্টারটির নিচের অংশ কাঠের ডেস্ক ও ওপরের অর্ধেক অংশ কাচ দিয়ে ঘেরা। ওই ক্যাশ কাউন্টারে সাধারণত বাইরের লোকের প্রবেশ নিষেধ।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, টাকাগুলো ক্যাশ কাউন্টারে রেখে ক্যাশিয়ার অন্য কাজ করছিলেন। ১০-১৫ মিনিট পর ক্যাশিয়ার তাঁর পাশে রাখা টাকার ব্যাগ দেখতে না পেয়ে বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে জানান। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও টাকার ব্যাগটি না পাওয়ায় ব্যবস্থাপক বিষয়টি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান।
খবর পেয়ে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মো. রশীদুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সদর থানা-পুলিশ ব্যাংকের ক্যাশিয়ার মো. রায়হান হোসেন ও পিয়ন আমানত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
জনতা ব্যাংকে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ১০টা ৫৩ মিনিটের সময় লুঙ্গি পরা এক মাঝবয়সী ব্যক্তি ক্যাশ কাউন্টারে মাথা হেলিয়ে ক্যাশিয়ারের পাশে থাকা টাকার ব্যাগটি হাতে নিয়ে বের হচ্ছেন। ব্যাংকের ওই কক্ষের দক্ষিণ দিকে এসে আরেক ব্যক্তির হাতে ওই টাকার ব্যাগ তুলে দিতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এ চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও চার-পাঁচজন ব্যাংকে থাকতে পারে।

জয়পুরহাট জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শাহ আলম জানান, তিনি তাঁর কক্ষে বসে কাজ করছিলেন। ব্যাগ খোয়া যাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর ক্যাশিয়ার এসে তাঁকে ৪৫ লাখ টাকাসহ ব্যাগটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না দাবি করে ঘটনাটি জানান। পরে তিনি বিষয়টি পুলিশ ও ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে শাহ আলম জানান।

এ ঘটনার পর মঙ্গলবার বিকেলে জনতা ব্যাংক লিমিটেড বগুড়া অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান ব্যাংকের ওই শাখায় পরিদর্শনে আসেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, কীভাবে ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জয়পুরহাট সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল হক জানান, এ ঘটনায় ব্যাংকের ক্যাশিয়ার রায়হান হোসেন ও পিয়ন আমানতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দাবি করা টাকা উদ্ধার ও জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1375876