২৫ নভেম্বর ২০১৭, শনিবার, ৯:১৫

দুই হাজার কোটি টাকার ব্যাংক ঋণে আবাসিক প্রকল্প!

আর্থিক ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) এই প্রথম ব্যাংক ঋণ নিয়ে কোনো আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। সংস্থাটি ‘অনন্যা আবাসিক (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প’ বাস্তবায়নের জন্য দুই হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ নিয়ে সংস্থার কর্মকর্তাদের মধ্যেই দেখা দিয়েছে নানা সংশয়। কারণ বিশাল অঙ্কের ঋণ যথাসময়ে পরিশোধ করতে না পারলে সুদের বোঝা চাপবে চউকের ঘাড়ে। এতে আর্থিক ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে সংস্থাটি।

সূত্র জানায়, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪১৮ দশমিক ৭৩ একর জমির ওপর ‘অনন্যা আবাসিক প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়)’ বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৮৩২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে ও বাকি টাকা চউকের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। প্রকল্পে আবাসিক প্লট থাকবে ২ হাজার ৮২৫টি। বাণিজ্যিক প্লট থাকবে ১১০টি। আবাসিক প্লটের আকার হবে চার ও পাঁচ কাঠা আয়তনের। প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ ব্যয় হবে ২ হাজার ৬৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬০ কোটি টাকা।

১২ অক্টোবর চউকের অনুষ্ঠিত চউকের বোর্ড সভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইসলামী ব্যাংক থেকে ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২০২১ সালে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে পারলে ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হবে ৩০৬ কোটি টাকা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টদের অনেকেই।
সর্বশেষ ২০০৫ সালে অনন্যা আবাসিক প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে চউক। শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল জুন ২০১৩ সালে। কিন্তু নানা কারণে সাড়ে ৩ বছর বিলম্বে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যস্ত সময় লাগে প্রকল্প বাস্তবায়নে। এ কারণেই অনন্যা আবাসিক প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় রয়েছে।

অনন্যা আবাসিক প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) পরিচালক আহমদ মঈনুদ্দীন যুগান্তরকে বলেন, ‘চউক প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৫৮ বছরে ১২টি আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এর কোনোটিতে ব্যাংক ঋণ নেয়া হয়নি। এই প্রথম কোনো আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাংক ঋণ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম যুগান্তরকে বলেন, ‘এটি অনেক বড় প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে অনেক টাকার প্রয়োজন। তাই আমরা ব্যাংক ঋণ নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছি। গ্রাহকদের কাছ থেকে যে টাকা পাওয়া যাবে তা থেকেই ঋণের টাকা পরিশোধ করা হবে। সুতরাং বিলম্ব হওয়ার সুযোগ নেই। যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। আর ঋণের বোঝা চউকের ঘাড়ে চাপারও কোনো সম্ভাবনা নেই।’

https://www.jugantor.com/last-page/2017/11/25/174572