২৩ নভেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৯:১৬

এশিয়ার নয় দেশের মধ্যে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কম

আঙ্কটাডের তথ্য

বাংলাদেশে গ্রামের ৫১ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পান। আর শহরে এই হার ৮৪ শতাংশ। যারা বিদ্যুৎ সুবিধা পান না, তাদের ৯০ শতাংশই গ্রামে বসবাস করেন। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে, যা এশিয়ার ৯টি স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মধ্যে সবচেয়ে কম।

ইউনাইটেড ন্যাশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) ‘এলডিসি ২০১৭’-তে এই কথা বলা হয়েছে। গতকাল একযোগে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। আঙ্কটাডের পক্ষে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এ উপলক্ষে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনেরও আয়োজন করা হয়।
আঙ্কটাড প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এলডিসি দেশগুলোতে সবার জন্য বিদ্যুৎ দিতে হলে প্রয়োজন হবে সর্বোচ্চ চার হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে এলডিসি দেশগুলোতে সবার জন্য বিদ্যুৎ দিতে হলে বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে ১২ শ’ কোটি ডলার থেকে চার হাজার কোটি ডলার। এই বিনিয়োগের জন্য এলডিসি দেশগুলো মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।
আঙ্কটাড প্রতিবেদনে এবারকার বিষয় ছিলÑ রূপান্তরমুখী জ্বালানি প্রাপ্যতা। প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের ২০১৪ সালের বিদ্যুৎ সুবিধার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রস্তুত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ প্রাপ্যতার সুবিধা নিশ্চিত করতে এশিয়ার নেপাল ও ভুটান বেশ এগিয়ে আছে। তবে এলডিসিগুলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতি বছর সাড়ে তিন গুণ হারে বেশি মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে হবে। তবে বাংলাদেশকে প্রতি বছর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হারে বিদ্যুৎ সংযোগ বাড়াতে হবে। বিদ্যুৎ প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে এলডিসিগুলোর জন্য চারটি সুপারিশ করেছে আঙ্কটাড। এগুলো হলোÑ শক্তিশালী বিদ্যুৎ কাঠামোব্যবস্থা গড়ে তোলা, সুশাসন ও অর্থায়ন নিশ্চিত করা, উন্নয়নের কৌশল হিসেবে জ্বালানি খাতকে প্রাধান্য দেয়া এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা নেয়া।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০৩০ সালে এসডিজি লক্ষ্য অর্জন এবং ২০৪১ সালে যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার আকাক্সা রয়েছে, সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতটিকে বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, জ্বালানি খাতের সাথে তিনটি বিষয় সম্পৃক্ত। এগুলো হলো অর্থনৈতিক রূপান্তর অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা ও পরিবেশগত ভারসাম্য। জ্বালানি উৎপাদন হতে হবে সুলভ মূল্যে, সুশাসনের সাথে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করে।
প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশের ৫৩ শতাংশ কোম্পানি মালিক বলেছেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রাপ্যতাই তাদের প্রধান সমস্যা। কম্বোডিয়ার ৬ শতাংশ ব্যবসায়ী এই কথা বলেছেন। আর নেপালের মাত্র ১২ শতাংশ ব্যবসায়ী এই মত দিয়েছেন। অনুষ্ঠানের প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এ ছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন সিপিডির গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/270781