২১ নভেম্বর ২০১৭, মঙ্গলবার, ৮:২৯

রক্ত শূন্যতায় ভুগছে ৯০ লাখ শিশু

দেশ খাদ্য উত্পাদনে সফলতা অর্জন করলেও পুষ্টির ক্ষেত্রে এখনও আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি সম্ভব হয়নি। এখনও দেশের ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে প্রায় ৯০ লাখ শিশু রক্তশূন্যতায় ভুগছে এবং ৭৩ লাখ শিশু খর্বকায়। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের জন্য এটা বড় চ্যালেঞ্জ।

গতকাল স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে পুষ্টি উন্নয়ন বিষয়ে গ্লোবাল প্যানেলের নীতিমালার সারসংক্ষেপ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ব্র্যাক এবং গ্লোবাল প্যানেল নামক জোট যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এর সহ-আয়োজক ছিল গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (আইএফপিআরআই), পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়া (পিএইচএফআই)।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আরও বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির পরিচালক ডা. কাওসার আফসানা, গ্লোবাল প্যানেলের সদস্য এমি সিমন্স, যুক্তরাজ্য সরকারের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট-এর ঢাকা অফিসের প্রধান জেন এডমন্ডসন, গ্লোবাল প্যানেলের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার পেট্রিক ওয়েব প্রমুখ।

বক্তারা বলছেন, বায়ুদূষণ, মাদক ও তামাক সেবনের কারণে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে মানুষের রোগ ও মৃত্যুর যতটা ঝুঁকি, তার চেয়ে বেশি ঝুঁকি রয়েছে অপুষ্টিকর খাবার গ্রহণের কারণে। ধারণা করা হয়, শুধু এ কারণে আফ্রিকা ও এশিয়া অঞ্চলে প্রতি বছর জিডিপিতে ১১ শতাংশ নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জন করতে হলে পুষ্টি উন্নয়নের ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের ছয়টি বিষয়কে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এগুলো হচ্ছে: এসডিজি লক্ষ্যপূরণের জন্য খাদ্যমানের পরিকল্পনার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া, খাদ্যব্যবস্থা পদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে উন্নত খাদ্যাভাস এবং এসডিজি লক্ষ্যপূরণ করা, নবজাতক, শিশু, কিশোরী ও নারীদের জন্য উন্নত খাদ্যাভাসের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া, সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পুষ্টি গ্রহণের পথে বাধাসমূহ চিহ্নিতকরণ, ক্ষুধামুক্তি বা এসডিজি-২ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জাতীয় নীতিমালাকে আরও সম্প্রসারিত করা এবং খাদ্যমানের সঠিক উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া।

জাহিদ মালেক এমপি বলেন, ১৬-১৭ কোটির এই দেশটিতে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ সত্ত্বেও আমরা এখন টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছি। আমরা ২০২১ সাল বা তারও আগে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হব বলে আশা করছি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৪ সালের (২০১১-২০১৪) বাংলাদেশের জনসংখ্যাতাত্ত্বিক ও স্বাস্থ্য জরিপ অনুযায়ী, এখনও বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ শিশু খর্বকায় (বয়সের তুলনায় কম উচ্চতা), ১৪ শতাংশ শিশুর উচ্চতার তুলনায় ওজন কম, ৯০ লাখ ২০ হাজার শিশু রক্তশূন্যতায় ভুগছে। এছাড়া ৪০ লাখ ১০ হাজার শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মায়।

 

http://www.ittefaq.com.bd/national/2017/11/21/136623.html