২০ নভেম্বর ২০১৭, সোমবার, ৬:২৭

নির্বাচনের সময় ও বাংলাদেশকে চাপে রাখার জন্য ‘অনুপ্রেবেশ’ ভারতের একটি রাজনৈতিক অস্ত্র

আশিকুল হামিদ : আওয়ামী লীগ সরকারের ‘চাহিবা মাত্র’ সব কিছু দিয়ে দেয়ার ‘উদার’ নীতির বদৌলতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক যখন ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ে’ পৌঁছেছে এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীন নেতারা দু’দেশের এই সম্পর্ককে যখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য ‘অনুসরণযোগ্য মডেল’ বলে ঘোষণা করেছেন, ঠিক তেমন এক ‘সুবাতাসে’ ভরা পরিবেশের মধ্যে ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হঠাৎ বাংলাদেশকে ভারতের জন্য সবচেয়ে বিপদজনক রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। শুধু তা-ই নয়, মিস্টার হংসরাজ আহির আরো বলেছেন, বাংলাদেশ নাকি ভারতের ‘নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ এবং চীন ও পাকিস্তানের চাইতেও ভারতের জন্য ‘বড় চ্যালেঞ্জ’!

এনডিটিভিসহ খোদ ভারতীয় গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, গত ১৬ নভেম্বর আসাম রাজ্যের নিরাপত্তা বিষয়ক এক বৈঠকে নিজের বক্তব্যের পক্ষে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশকে ভারতের ‘তথাকথিত বন্ধু’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, চীন ভারতের ‘খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু নয়’। পাকিস্তানও ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ কাশ্মীরকে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে। এই ক্ষতি প্রতিহত করতে হলে স্মার্ট প্রযুক্তির সহায়তায় বাংলাদেশিদের ভারতে অনুপ্রবেশ বন্ধ এবং অনুপ্রবেশকারীদের দমন করতে হবে।

আসামের ওই নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠকে আরো অনেক কথাই বলেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, যেগুলোর প্রতিটিই ছিল অত্যন্ত আক্রমণাত্মক। সংশয় ও প্রতিবাদের কারণ সৃষ্টি হয়েছে তার বাংলাদেশ সংক্রান্ত বক্তব্য ও মন্তব্যে। বলা হচ্ছে, চীন এবং আজন্ম শত্রু রাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি বলতেই পারেন। কিন্তু বাংলাদেশ তো চীন বা পাকিস্তানের মতো বৈরী বা অবন্ধুসুলভ রাষ্ট্র নয়। বড় কথা, শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি ভারতের ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে সকলেরই ধারণা রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় বসার পর ভারতই একমাত্র রাষ্ট্র, যার সমর্থন আওয়ামী লীগ সরকার পেয়েছে এবং এখনো সে সমর্থনের সুফল ভোগ করছে। ভারতও তার সব দাবিদাওয়া আদায়ে সফল হয়েছে তাও সবারই জানা। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে একতরফাভাবে লাভজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত। বাংলাদেশের বাজার ছেয়ে গেছে ভারতের নি¤œমানের সব পণ্যে। ভারতীয় পণ্যের দাপটে একের পর এক বন্ধ হয়ে গেছে পণ্য উৎপাদনকারী বহু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ও মিল-কারখানা। ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট ও করিডোরের লাভের সুযোগ পেয়েছে। চট্টগ্রাম ও মংলাসহ সমুদ্র বন্দরগুলোতেও এখন ভারতীয় মালবাহী জাহাজের ব্যাপক আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। বলা হয়ে থাকে, যতো জরুরি পণ্যই হোক না কেন, ভারতীয় পণ্য খালাস করার আগে বাংলাদেশের কোনো পণ্য খালাস করার সুযোগ নেই বললেই চলে। সড়ক পথেও চলছে একই অবস্থা। ১৮, ২০ এমনকি ৩০ চাকার মালবাহী ভারতীয় ট্রাকের কারণে একদিকে বাংলাদেশের সকল যানবাহনকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে বা সাইড দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে সড়কের পর সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সেগুলো মেরামতের জন্যও বাংলাদেশকে ভারতীয় ঋণের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ভারত শুধু ঋণই দিচ্ছে না, ঋণের প্রতিটি টাকা কোন খাতে কিভাবে ব্যয় করা হচ্ছে সে ব্যাপারেও খবরদারি করছে ভারতীয়রা।

প্রাসঙ্গিক উদাহরণ দেয়ার জন্য দেশটির অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলীর ঢাকা সফরকালে গত ৪ অক্টোবর স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির কথা উল্লেখ করা যায়। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের রাষ্ট্রীয় এক্সিম ব্যাংক বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার তথা বাংলাদেশি প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে। ঋণ পরিশোধ করতে হবে আগামী ২০ বছরের মধ্যে। ঋণের বিপরীতে ‘মাত্র’ এক শতাংশ হারে সুদ এবং দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট ফি বা প্রতিশ্রুতি মাশুল দিতে হলেও ঋণের অর্থ বাংলাদেশ নিজের ইচ্ছা বা প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যয় বা ব্যবহার করতে পারবে না। সবই করতে হবে ভারতের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য। চুক্তির মধ্যে ১৭টি প্রকল্পের উল্লেখ করা হয়েছেÑ যেগুলোর প্রতিটি রেল ও সড়ক পথ, জাহাজ চলাচল, সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন এবং বিদ্যুতের উৎপাদন সম্পর্কিত। বলা হচ্ছে, প্রতিটি প্রকল্পই ভারতের স্বার্থে প্রণীত হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা। এতে বলা হয়েছে, সব প্রকল্পের জন্যই ভারতের ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। তাছাড়া বাংলাদেশ চাইলেও নিজের বা অন্য কোনো দেশের নির্মাণ সামগ্রী কিনতে বা ব্যবহার করতে পারবে না। প্রায় ৭৫ ভাগ সামগ্রী আমদানি করতে হবে ভারত থেকে এবং ভারতের বেঁধে দেয়া দামে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কোনো দরকষাকষি করতে বা আপত্তি জানাতে পারবে না। চুক্তিতে ৭৫ শতাংশ নির্মাণ সামগ্রীর কথা বলা হলেও অভিজ্ঞতার আলোকে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাস্তবে একশ ভাগ সামগ্রীই ভারত থেকে এবং ভারতের বেঁধে দেয়া দামে আমদানি করতে হবে। আন্তর্জাতিক দরের তুলনায় অনেক বেশি দাম আদায় করলেও বাংলাদেশের কিছুই বলার বা করার থাকবে না।

এসবের সঙ্গে সবশেষে যুক্ত হয়েছে ‘বন্ধন’ নামের ট্রেন, যা কলকাতা থেকে খুলনা পর্যন্ত যাতায়াত করবে। স্মরণ করা দরকার, ২০০৮ সালে ‘মৈত্রী’ নামের আরো একটি ট্রেন চালু করা হয়েছিল। সেটা ছাড়াও দিন কয়েক আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ‘বন্ধন’ নামের ট্রেনের উদ্বোধন করা হয়েছ। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনের সে অনুষ্ঠানে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও অংশ নিয়েছিলেন। এই অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছেন, ‘উন্নতির জন্য বাংলাদেশকে শুধু পাশে নয়, সঙ্গে নিয়েও চলবো। সমস্যা মোকাবেলায় একসঙ্গে লড়বো।’ মিস্টার মোদি আরো বলেছেন, ‘দু’দেশের জন্য আমি একই স্বপ্ন দেখি। আজ আমরা একসঙ্গে চলি, কাল একসঙ্গে দৌড়াবো।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুধু নন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও তার সাম্প্রতিক ঢাকা সফরকালে বলে গেছেন, ‘ভারতের নীতি হলো, প্রথমে প্রতিবেশি। আর প্রতিবেশিদের মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম।’ সুষমা স্বরাজেরও আগে বাংলাদেশের সঙ্গে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ঢাকা সফরে এসে ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছিলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ বর্তমানে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং এই সম্পর্ক বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য অনুসরণযোগ্য মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
দু’দেশের সম্পর্ক নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকেও যথেষ্টই শোনানো হয়েছে। সরকার শুধু শুনিয়ে থেমে থাকেনি, ‘করেও’ দেখিয়েছে। এখনো দেখিয়ে চলেছে। দেশপ্রেমিকদের পক্ষ থেকে ভারতকে ‘সবকিছু’ দিয়ে দেয়ার মাধ্যমে সার্বভৌমত্বকে পর্যন্ত বিপন্ন করার অভিযোগ উঠলেও সরকার পিছিয়ে আসেনি বরং অভিযোগ রয়েছে, ‘চাহিবা মাত্র’ সবই দেয়া হচ্ছে ভারতকে। এমন অবস্থায় সঙ্গত কারণেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই অনুমান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে, অন্তত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারত কখনো কোনো প্রশ্নেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যাবে না। অন্যদিকে অতি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশিদের ওই আশাবাদের গুড়ে বালি পড়তে শুরু করেছে। এ ব্যাপারে প্রথমে দৃশ্যপটে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হাজার হাজার নিরস্ত্র ও নিরীহ রোহিঙ্গা মুসলিমের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যখন ‘পরিকল্পিত গণহত্যার’ অভিযান শুরু করে এবং লাখ লাখ রোহিঙ্গা যখন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়, তেমন এক কঠিন সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রনাথ মোদি মিয়ানমার সফরে গিয়ে দেশটির প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছিলেন। সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে তিনদিনের সফরে রাজধানী ইয়াঙ্গুনে গিয়ে মিয়ানমারের প্রধান নেত্রী অং সান সু চি ও সামরিক জান্তার নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর নেপিদোর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি এমনভাবে বক্তব্য রেখেছিলেন, যা শুনে মনে হয়েছে তিনিও মনে করেন, যেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতন চালায়নি বরং কথিত মুসলিম উগ্রপন্থীরা সেখানে সশস্ত্র সহিংসতা চালাচ্ছে! মিয়ানমারের ঐক্য ও আঞ্চলিক অখন্ডতা বজায় রাখার নামেও মিস্টার মোদি রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধেই তার অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন। মিয়ানমারের প্রতি জানিয়েছিলেন ‘জোরালো সমর্থন’। ইয়াঙ্গুনের সঙ্গে ‘একযোগে’ কাজ করার ঘোষণাও দিয়ে এসেছিলেন মিস্টার মোদি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সে ঘোষণা যে কথার কথা ছিল না তার সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া গেছে গত ১৭ নভেম্বর। সেদিন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও পাকিস্তানসহ ১৩৫টি দেশ বাংলাদেশের পক্ষে ভোট দিলেও ভারত ভোটদানে বিরত থেকেছে। বলা হচ্ছে, বিরত থাকার মাধ্যমে ভারত প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে। এর ফলে ভারতের ব্যাপারে সারা বিশ্বেই ধিক্কার উঠেছে। খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, ঠিক সেদিনই অর্থাৎ ১৭ নভেম্বরই আসামে এসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কঠোর এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহির। দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বিষয়টিকে ‘কাকতালীয়’ বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতি নন। কারণ, ঠিক এ সময়ই বিজেপি সরকার আসাম রাজ্যের ৫০ লক্ষ মুসলমানকে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ দেয়ার এবং তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকার সফল হলে আসামের ৫০ লক্ষ মুসলমান আর ভারতীয় নাগরিক হিসেবে বসবাস করার সুযোগ পাবেন না। কথা শুধু এটুকুই নয়, এই ৫০ লক্ষ মুসলমানকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে আসাম তথা ভারত থেকে তাড়িয়ে দেয়ারও আয়োজন চলছে বলে খোদ ভারতের গণমাধ্যমেরই খবরে জানানো হয়েছে। জানা গেছে, তাদের সকলকে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হবে। অথচ তারা কোনো বিচারেই বাংলাদেশি নন। তাদের সকলের জন্মই হয়েছে আসামের মাটিতে। সে কারণে আইনত তারা জন্মসূত্রেই আসাম তথা ভারতের নাগরিক। তাদের মধ্যে ৫০-এর বেশি বয়সী হাজার হাজার মুসলিমও রয়েছেন। কিন্তু বিজেপি সরকার তাদের সকলকেই আসামে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করতে চাচ্ছে।

আসাম সরকারের সর্বশেষ এই বাংলাদেশ বিরোধী কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতেই দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহিরের বক্তব্য ও মন্তব্যকে হালকাভাবে নেয়ার পক্ষপাতি নন। তারা বরং মনে করেন, মিয়ানমারের পাশাপাশি ভারতও কথিত অনুপ্রবেশকারীদের ঠেলে পাঠানোর মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিপন্ন করতে চাচ্ছে। সুদূরপ্রসারী এ উদ্দেশ্যের কারণেই একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইয়াঙ্গুন সফরের সময় মিয়ানমারের সঙ্গে ‘একযোগে’ কাজ করার অঙ্গিকার করে এসেছেন, অন্যদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশকে এমনকি চীন ও পাকিস্তানের চাইতেও বিপদজনক রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বলেছেন, বাংলাদেশ নাকি ভারতের ‘নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ এবং চীন ও পাকিস্তানের চাইতেও ভারতের জন্য ‘বড় চ্যালেঞ্জ’! এমন অবস্থায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখতে হলে এবং রোহিঙ্গা মুসলিমকেন্দ্রিক সংকটের মতো আরো ভয়াবহ কোনো সংকটের মধ্যে পড়তে না চাইলে সরকারের উচিত প্রকৃত পরিস্থিতি জনগণকে জানানো এবং সময় থাকতে বিষয়গুলোর সুরাহা করা। অনুপ্রবেশ ইস্যুটি ভারতের একটি পুরানো রাজনৈতিক অস্ত্র ভারতের নির্বাচনের সময় এবং বাংলাদেশকে চাপে রাখার জন্য এই অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। অথচ ভারত যেভাবে বলে সেরকম অনুপ্রবেশ বিষয়টির কোনো অস্তিত নেই বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারত থেকে যেমন লোক বৈধ অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসে তেমনি বাংলাদেশ থেকেও যেতে পারে এটা স্থায়ী বসবাসের কোনো বিষয় নয়।

http://www.dailysangram.com/post/308332