১৯ নভেম্বর ২০১৭, রবিবার, ১০:৪০

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির সম্পূর্ণ ব্যর্থতা ৫৮ দেশ ওআইসি প্রস্তাব সমর্থন করেনি

কয়েক সপ্তাহ আগে এই কলামে আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি যে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে। পররাষ্ট্র নীতি বিশেষ করে বার্মা নীতি চরম ব্যর্থতার পরিণতি ভোগ করেছে। এটি নগ্নভাবে ধরা পড়েছে গত ১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটির সভায়। কমিটির একটি প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে বাংলাদেশের বন্ধু বলে পরিচিত বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের পক্ষে ভোট না দেওয়ায় ঢাকার মিয়ানমার নীতি চতুর্দিকে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। গত শনিবার ১৮ নবেম্বর ‘দৈনিক প্রথম আলোয়’ প্রকাশিত প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান সংবাদে বাংলাদেশের ব্যর্থতার এই চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। আলোচ্য খবরে বলা হয়েছে, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ও বন্ধু কয়েকটি দেশের সমর্থন না পাওয়ায় ঢাকার মিয়ানমার নীতি বা কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঐতিহাসিকভাবে পরীক্ষিত দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভারত ও রাশিয়া এবং সাম্প্রতিক সময়ের বন্ধুদেশ চীন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট না দেয়ায় বাংলাদেশ হতাশ হয়েছে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে রোহিঙ্গা সংকটের মতো একটা বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ শুরু থেকেই এই দেশগুলোর কাছে সহযোগিতা চেয়ে আসছে। অন্যদিকে এই ভোটাভুটিতে সার্কভুক্ত দেশ নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানের বিরত থাকা বাংলাদেশকে অবাক করেছে। কারণ, এ দেশগুলোর যে কোনো সংকটের শুরুতেই বাংলাদেশ সব সময় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
থার্ড কমিটি জাতিসংঘের সামাজিক, মানবিক ও সংস্কৃতি বিষয়ক ফোরাম। সাধারণ পরিষদের অন্য সব সিদ্ধান্তের মতো ওই প্রস্তাবটি বাস্তবায়নেও কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। তবে বিশ্ব সভার অধিকাংশের মতামত হিসেবে এই প্রস্তাবের যে নৈতিক গুরুত্ব রয়েছে, তাকে এক কথায় অস্বীকার করাও মিয়ানমারের পক্ষে সহজ হবে না।

১০টি দেশ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে এবং আরও ২৬টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। ২২টি দেশ অনুপস্থিত ছিল। অন্য কথায়, ৫৮টি সদস্যদেশ ওআইসি উত্থাপিত প্রস্তাব সমর্থন করেনি। কোনো কোনো পর্যবেক্ষক বিশ্ব সংস্থার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের এই নেতিবাচক অবস্থানে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। কেউ কেউ এমন কথাও বলেছেন, এটি বাংলাদেশের কূটনৈতিক ব্যর্থতা।
জাতিসংঘে কর্মরত বাংলাদেশের কূনীতিকরা এই বলে আত্মতৃপ্তি লাভের চেষ্টা করেন যে, প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট না দিলেও রোহিঙ্গা প্রশ্নে প্রস্তাবের মূল বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছে প্রায় প্রতিটি দেশ। রাশিয়া, চীনসহ যে ১০টি দেশ প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দেয়, তারাও সহিংসতা বন্ধ এবং রোহিঙ্গা সংকটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতার প্রমাণ দিয়েছে, প্রায় সব দেশ তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে। সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হলো এই যে, এবার জাতিসংঘের ঐ প্রস্তাবের যারা বিরোধিতা করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে ইরান, ভেনেজুয়েলা, জিম্বাবুয়ে, সিরিয়া প্রভৃতি দেশ। পর্যবেক্ষক মহল বলেন যে, চীন ও রাশিয়ার ‘না’ সূচক ভোটেও বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। এই দুই দেশই মিয়ানমারের সঙ্গে সামরিক, বাণিজ্যিক ও কৌশলগত সম্পর্ক নির্মাণকে তাদের অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করে, এটি কোনো গোপন ব্যাপার নয়। অব্যাহত সহিংসতার বিপক্ষে মতপ্রকাশ করলেও এই দুই দেশ এর আগে সংকট সমাধানে মিয়ানমার সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তার প্রশংসা করেছে। বৃহস্পতিবার বিপক্ষে ভোট প্রদানের পর চীন মিয়ানমারের অবস্থা ‘স্থিতিশীল’ হয়ে এসেছে বলে জানায়। অন্যদিকে প্রস্তাবটি সংকট সমাধানে সাহায্যের বদলে বিঘœ সৃষ্টি করবে বলে রাশিয়া জানায়।
একইভাবে বাংলাদেশের দুই নিকট প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত ও নেপালের ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্তেও বিস্ময়ের কিছু নেই। চীন যাতে একাই মিয়ানমারে নিজের অবস্থান সংহত করার সুযোগ না পায়, ভারত সে ব্যপারে সচেতন। চীন, রাশিয়া এবং ভারত মিয়ানমারের সাথে সুর মিলিয়ে বলেই ফেলেছে যে, রোহিঙ্গা সংকটের পেছনে মুসলিম জঙ্গিদের ভূমিকা রয়েছে, আইএস ও পাকিস্তান তাতে মদদ জোগাচ্ছে। মিয়ানমারকে অভিযুক্ত করে কঠোর ভাষায় প্রস্তাব গ্রহণের তাই বিরোধিতা করেছে রাশিয়া ও চীন এবং ভোটদানে বিরত থেকেছে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভূটান।

॥দুই॥
এই প্রস্তাবের ওপর যে ভোটাভুটি হয় সেই ভোটাভুটির বিস্তারিত বর্ণনা পাঠ করে এ সম্পর্কে যারা বিশেষজ্ঞ তারা বলেন যে, এ ব্যাপারে মন্তব্য করার কিছুই নাই। কারণ এটি বাংলাদেশের বার্মা নীতির ব্যর্থতার একটি প্রামাণ্য দলিল। কিন্তু তারা স্তম্ভিত হয়ে যান তখন যখন তারা দেখেন যে এত বড় ব্যর্থতার পরেও এটিকে বাংলাদেশের, বিশেষ করে প্রধান মন্ত্রীর কূটনীতির সাফল্য বলে প্রচার করার নিস্ফল প্রয়াস চালানো হচ্ছে।
জাতিসংঘের বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন যে, রোহিঙ্গা প্রশ্নে বিশ্ব সম্প্রদায় যে বাংলাদেশের পক্ষে আছে, এই ভোট থেকে সে কথা স্পষ্ট। তার এই কথার মাথা মুন্ডু কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না। যারা বলেন যে সমস্যাটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সামলাতে হবে, তারা অর্ধ সত্য বলেন। পূর্ণ সত্য হলো এই যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি নজর ফিরিয়ে নেয়, তাহলে কোনো অর্থপূর্ণ অগ্রগতি অসম্ভব হয়ে পড়বে। সে জন্য প্রথম থেকেই বাংলাদেশের লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল, এই প্রশ্নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে সরকারকে খুশি করার জন্য যেসব কূটনীতিক দিনকে রাত করতে চান এবং রাতকে দিন করতে চান, তাদের এই ধরনের বালখিল্য উক্তি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য না করাই ভাল।

তবে ঐসব বিশেষজ্ঞের কথা হলো, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি শুধুমাত্র মিয়ানমারেই ব্যর্থ হয়নি, এটি সার্ক দেশসমূহে তথা দক্ষিণ এশিয়াতেও সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এতদিন ধরে বলা হয়েছে এবং দেশবাসীকে বোঝানো হয়েছে যে, দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল, ভূটান, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি দেশ বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। কিন্তু এবারের ভোটাভুটিতে দেখা গেল যে এই তিনটি দেশ অর্থাৎ নেপাল, ভূটান এবং শ্রীলঙ্কাও প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থেকেছে। বিরত থাকার অর্থ হলো, বাংলাদেশের পক্ষে না থাকা এবং পরোক্ষভাবে মিয়ানমারের পক্ষে থাকা। তাহলে তারা কেমন করে বাংলাদেশের বন্ধু হলো? এ ব্যাপারে আসল সত্যটি সব সময় দেশেবাসীর কাছে চেপে যাওয়া হয়েছে। যদি আমরা ঘটনার গভীরে যাই তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, নেপাল, ভূটান এবং শ্রীলঙ্কা কেন এই প্রস্তাব তথা বাংলাদেশের পক্ষাবলম্বন করল না? কঠোর বাস্তব হলো এই যে, ঐ তিনটি দেশ ভারতের বন্ধু বা ভারতের অনুসারী। ওরা বাংলাদেশের বন্ধু বা বাংলাদেশের অনুসারী নয়। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে, বিশেষ করে পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে ভারত যেদিকে থাকে ওরাও সেদিকেই থাকে। আলোচ্য ক্ষেত্রে ভারত যেহেতু ভোটদানে বিরত থেকেছে তাই ওরাও ভোটদানে বিরত থেকেছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়া বা সার্কভুক্ত চারটি দেশেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
দক্ষিণ এশিয়ার আরেকটি বড় দেশ হলো পাকিস্তান। বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক অবস্থান এবং পাকিস্তানের সাথে বর্তমান সরকারের যে সম্পর্ক তার জন্য বুদ্ধিজীবীরা এবং মিডিয়া আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশে পাকিস্তান সম্পর্কের আলোচনা, পর্যালোচনা বা বিশ্লেষণ সাধারণত এড়িয়ে যান। না যেয়েও কোনো উপায় থাকে না। কারণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কারো কোনো মন্তব্য বা বিশ্লেষণ যদি বস্তুনিষ্ঠতার খাতিরে সরকারি অবস্থানের সাথে মিলে না যায় তাহলে সাথে সাথেই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপবাদ রটানো হয়। আলোচ্য ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থানের ব্যাপারে পাকিস্তান সম্পূর্ণ নীরবতা অবলম্বন করছে। বাংলাদেশের অবস্থানের বিরোধিতা তারা করেনি, কিন্তু পক্ষেও কোনো কথা বলেনি। ফলে দেখা যাচ্ছে যে রোহিঙ্গা প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থানের পক্ষে পাঁচটি দক্ষিণ এশীয় দেশ তথা সার্কভুক্ত পাঁচটি দেশ নীরবতা অবলম্বন করছে। পাঁচটি দেশ হলো ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভূটান এবং পাকিস্তান। অন্য অর্থে প্রায় সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া এই প্রশ্নে বাংলাদেশের সাথে নাই।

॥তিন॥
মানবিক সাহায্য দেয়াকে কেউ যদি বাংলাদেশের পক্ষাবলম্বন মনে করেন তাহলে তিনি হয় না বুঝে কথা বলছেন, না হয় ব্যাপারটি মোটেই তার বোধগম্য হয়নি। চীন এই ইস্যুতে বাংলাদেশের খাড়া বিরোধিতা করছে। তার পরেও কিন্তু চীনের মানবিক সাহায্য এসেছে। ইরান এবার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু উগ্র বৌদ্ধ এবং মগ সেনাদের জুলুম নির্যাতন গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে ইরান বার্মার বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণেরও পক্ষপাতি। ভারত ভোটদানে বিরত থাকছে। কিন্তু কিছু কিছু ত্রাণ সাহায্য ভারত থেকেও আসছে। সুতরাং একটি ইস্যুতে ত্রাণ সাহায্য এবং রাজনৈতিক অবস্থানকে একই সমতলে বিবেচনা করা যায় না।

ইদানীং বার্মার সামরিক জান্তা এবং অং সাং সু চি রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার ব্যাপারে যেসব কথা বলছেন তাতেও দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের একটি মহল এবং শাসক শ্রেণীর কেউ কেউ বিভ্রান্ত হচ্ছেন অথবা তাদের ভাল ভাল কথার ফাঁদে পা দিচ্ছেন। বার্মা বলছে যে তারা ১৫ দিন ১ মাস বা ২ মাসের মধ্যেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের ফেরত নেবে। কিন্তু কিভাবে তাদের ফেরত নেবে? ফেরত নেয়ার শর্ত কি থাকবে? ফেরত দেওয়ার সময় বাংলাদেশের কোনো শর্ত থাকবে কি না? এই ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের মত আন্তর্জাতিক সংস্থা অথবা এক বা একধিক তৃতীয় দেশ জড়িত থাকবে কি না- এ সম্পর্কে কোনো কিছুই বলা হচ্ছে না। অথচ সেই ৭০ দশক থেকে যে রোহিঙ্গা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তার মূলে রয়েছে কিন্তু এই সব প্রশ্নই। ধরা যাক যে, কোনো রকম শর্ত নাই, তৃতীয় পক্ষের কোনো মধ্যস্থতা নাই, এমন একটি অবস্থায় আগামী কাল বার্মা সরকার রোহিঙ্গাদেরকে নিয়ে গেল। তারপর যদি তাদেরকে আবার কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে নেওয়া হয়, যদি জুলুম নির্যাতন, ধর্ষণ এবং হত্যা করা হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কি থাকবে? তারা যে জুলুম করবে না তার গ্যারান্টি কে দেবে? সকলেই জানেন যে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল ইস্যুই হলো তাদের নাগরিকত্ব। তারা যে বার্মার ১৩৬ টি নৃ-তাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর অন্যতম গোষ্ঠী, সেই বিষয়টিই তো বার্মা স্বীকার করতে চায় না। তারা বলে যে, রোহিঙ্গারা হলো সব বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী। রোহিঙ্গাদেরকে তারা সন্ত্রাসী বলে। কিন্তু তারা বর্মী শাসকগোষ্ঠীর ভাষায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নয়। তারা হলো বাংলাদেশী সন্ত্রাসী।

এই মূল প্রশ্নের ফয়সালা হওয়ার আগে এই ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলমানকে কেমন করে ফেরত পাঠানো হবে? এই ১০ লক্ষ মানুষ বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর একটি বিরাট চাপ। তাদেরকে অনন্তকাল খাওয়ানো পরানো সম্ভব নয়। কিন্তু তারপরেও কথা থেকে যায়। সরকারদলীয় লোকরা রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার কারণে শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বলেন। এখন যদি কোন রকম রক্ষা কবচ ব্যতিরেকে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয় তাহলে সেই হিউম্যানিটি যাবে কোথায়? দুই তিনটি দেশ ছাড়া সারা বিশ্বই বলছে যে, তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় নাগরিকত্বসহ যথাযোগ্য মর্যাদায় রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত পাঠানো হোক। যতক্ষণ সেটি সুনিশ্চিত না হচ্ছে ততক্ষণ তাদেরকে ফেরত পাঠানো যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ অতীতেও রোহিঙ্গা মুসলমান ভাইদের চাপ বহন করেছে। বর্তমানেও করছে। অভিষ্যতেও আরো কিছুদিনের জন্য করবে। কিন্তু এর মধ্যে প্রধান মন্ত্রীকে সুনির্দিষ্টভাবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত, চীন এবং রাশিয়া সফর করতে হবে। তাদেরকে বাংলাদেশের অবস্থানের যথার্থতা বোঝাতে হবে। যতক্ষণ এসব প্রশ্নের ফয়সালা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাধ্য হলেও রোহিঙ্গা ভাইদের বোঝা আমাদের বহন করতেই হবে।
Email: asifarsalan15@gmail.com

http://www.dailysangram.com/post/308109