১৪ নভেম্বর ২০১৭, মঙ্গলবার, ৯:২৪

এমসিসিআইয়ের ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন

গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট উৎপাদন কমাচ্ছে

অবকাঠামো ঘাটতি এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ সমস্যা এখন অর্থনীতির সব উৎপাদনশীল খাতের কর্মকাণ্ডের গতি হ্রাস করছে। এ সমস্যাগুলো দূর করতে সরকারের পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এমসিসিআই)।
সোমবার সংগঠনটির ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর দেশের সার্বিক অর্থনীতির ওপর পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংগঠনটি। এবার চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদন (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ইতিবাচক। তবে কিছু ঝুঁকিও আছে। যেমন- প্রবাসী আয়ে প্রান্তিক প্রবৃদ্ধি, রফতানি আয়ে ধীরগতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি। কৃষি, উৎপাদনশীল ও সেবা খাত ভালো অবদান রাখছে। এর প্রবৃদ্ধিকে টেকসই করতে হলে সরকারকে ধারাবাহিক নীতি-সহায়তা দিতে হবে। এ ছাড়া অবকাঠামো ঘাটতি এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ সমস্যা এখন অর্থনীতির সব উৎপাদনশীল খাতের কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ সমস্যা দূর করতে সরকারের পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়া উচিত। পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন এবং তা বজায় রাখা উচিত।
এ মূল্যায়ন প্রতিবেদনে কৃষি, শিল্প উৎপাদন, নির্মাণ, বিদ্যুৎ, সেবা খাত, অর্থ ও পুঁজিবাজার, আমদানি-রফতানি, প্রবাসী আয়, বৈদেশিক সহায়তা, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ, বাণিজ্য-ঘাটতি, মুদ্রা বিনিময় হার, মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতির প্রধান প্রধান সূচকের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এমসিসিআই মনে করে, ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ হতে গেলে বিনিয়োগ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি রফতানি প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামো যেমন সড়ক, রেলওয়ে ও বন্দরের সক্ষমতা এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে হবে। সর্বোপরি অবকাঠামোগত ত্রুটি দূর করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বিদেশি বিনিয়োগ ৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়েছে। তবে এটি প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় কম। দেশের সস্তা শ্রম বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করছে, কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগ করতে দ্বিধাগ্রস্ত। এর কারণ অনুন্নত অবকাঠামো যেমন গ্যাস-বিদ্যুতের স্বল্পতা, নীতি এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোর মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাব, জমির অপ্রতুলতা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। ২০২১ সাল নাগাদ মাঝারি আয়ের দেশে উন্নীত হতে গেলে বেশি করে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সরকারকে এ বাধাগুলো মোকাবেলা করতে হবে।

প্রতিবেদনে অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) অর্থনীতির পূর্বাভাস দেয়া হয়। যাতে বলা হয়েছে, এ সময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত শান্ত থাকবে। রফতানি, আমদানি, প্রবাসী আয় ও বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়বে। তবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি বাড়বে, তার পরের মাসগুলোতে কমতে পারে।

https://www.jugantor.com/last-page/2017/11/14/171508