১৪ নভেম্বর ২০১৭, মঙ্গলবার, ৯:২৩

নাটোরে ব্যাংক থেকে খোয়া গেল ৮২ শিক্ষার্থীর ফরম পূরণের টাকা

নাটোরের সিংড়ায় সোমবার সোনালী ব্যাংকের শাখা থেকে প্রধান শিক্ষককে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ৮২ এসএসসি পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণের ৮৪ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে এক প্রতারক। ফলে তাদের ফরম পূরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারি ব্যাংক হলেও এখানে সিসিটিভি না থাকায় অভিযুক্তকে আটক করা সম্ভব হয়নি। উল্টো এ ঘটনার জন্য ওই প্রধান শিক্ষককেই দোষারোপ করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় বিয়াশ উচ্চবিদ্যালয়ের ৮২ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণের ৮৪ হাজার ১০০ টাকা রাজশাহী বোর্ডের অনুকূলে ডিডি করতে ব্যাংকে আসেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন। তিনি জানান, কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দেয়ার সময় পেছন থেকে অপরিচিত এক লোক ইশারা করে বলে মনে হয় আপনার কিছু টাকা মেঝেতে পড়ে গেছে। এ সময় ডিডির ৮৪ হাজার ১০০ টাকা কাউন্টারের সামনে রেখে নিচে তাকাতেই ওই লোকটি কাউন্টারের সামনে থেকে টাকাগুলো নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হাসান ইমাম নামে এক গ্রাহক বলেন, ঘটনাটি যখন ঘটে তখন আমি ব্যাংকে ছিলাম। ভুক্তভোগী জামাল উদ্দিন যখন টাকা জমা দিতে আসেন তখন ক্যাশ কাউন্টারে কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না; সিকিউরিটি গার্ডও ছিলেন ওয়াশরুমে। অপরিচিত লোকটি মেঝেতে ১০০, ৫০, ২০ ও ১০ টাকার বেশ কিছু নোট ছড়িয়ে দিয়ে কৌশলে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ দিকে ব্যাংকে লেনদেনের জন্য আসা গ্রাহকদের অভিযোগ, সরকারি ব্যাংক হলেও ব্যাংক ও গ্রাহকদের নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা নাই। ফলে ব্যাংকটিতে লেনদেন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি এক মহিলা গ্রাহকেরও একই কায়দার লক্ষাধিক টাকা খোয়া যায়। পরে অবশ্য ওই মহিলার টাকা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফেরত দিতে বাধ্য হয়। ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন জানান, ব্যাংক থেকে বিষয়টি কাউকে না জানাতে বলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন আরো জানান, সোমবার ছিল এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের শেষ দিন।

বিষয়টি সম্পর্কে সোনালী ব্যাংক সিংড়া শাখার ক্যাশ অফিসার আবুল হাশেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। পরে আবার পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
সোনালী ব্যাংক সিংড়া শাখার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক আবুল হাসেম ব্যাংকের ভেতর থেকে টাকা খোয়া যাওয়ার ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, ব্যাংকে লেনদেনের সময় গ্রাহকদের সতর্ক হওয়া উচিত। আর ব্যাংক ও গ্রাহকদের নিরাপত্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় বিকেল ৪টা পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/268223