১৩ নভেম্বর ২০১৭, সোমবার, ১০:২২

ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ঋণ দিচ্ছে ফারমার্স ব্যাংক

চার বছর আগে যাত্রা করা বেসরকারি খাতের দি ফারমার্স ব্যাংক তীব্র তারল্য সংকটে পড়েছে। এরপরও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঋণ বিতরণ করে চলছে। গোপন করেছে ঋণ বিতরণের তথ্যও। এসব কারণ দেখিয়ে ব্যাংকটির ব্যাখ্যা তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ-সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়।

ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শামীমের কাছে পাঠানো চিঠিতে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে ব্যাংকটির এমডি এ কে এম শামীমের সঙ্গে বৃহস্পতিবার ও গতকাল রোববার কয়েক দফা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। নতুন এ ব্যাংকটির চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তাঁকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে কার্যক্রম শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই অস্তিত্বহীন ও সাইনবোর্ডসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয় ব্যাংকটি। আর বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি ব্যাংকটিতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। তবু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ব্যাংকগুলোকে আমানতের ১৯ শতাংশ (সিআরআর ও এসএলআর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা রাখতে হয়। ফারমার্স ব্যাংক তাও রাখতে পারছে না। ব্যাংকটির তারল্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ জমা (সিআরআর) রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়।
ব্যাংকটির দায় পরিশোধের সক্ষমতা নেই উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণ আমানতকারী এবং বিভিন্ন ব্যাংক থেকে উচ্চ সুদে আমানত গ্রহণ ও ধার করে বর্তমানে টিকে আছে ফারমার্স ব্যাংক। ফলে ব্যাংকটি পুরো ব্যাংক খাতে ‘পদ্ধতিগত ঝুঁকি’ (সিস্টেমেটিক রিস্ক) তৈরি করেছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে লোকসান করেছে ১৩ কোটি টাকা। ৫৪টি শাখার মধ্যে ২৮টি লোকসানে।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে নতুন শাখা খোলা ও ঋণ প্রদানে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন ঋণ অনুমোদন ও ঋণসীমা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা অব্যাহত রেখেছে ব্যাংকটি।

http://www.prothom-alo.com/economy/article/1364256