১১ নভেম্বর ২০১৭, শনিবার, ৯:১৯

কম্বোডিয়ার সঙ্গে চাল চুক্তি বাতিল

ভারত থেকে আরও চাল আনার উদ্যোগ

কম্বোডিয়া থেকে চাল আমদানি চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে বাংলাদেশ। আড়াই লাখ টন চাল আনতে আগস্টে দেশটির সঙ্গে চুক্তি করা হয়। নির্ধারিত সময়ে প্রথম দফায় চাল জাহাজীকরণে তারা ব্যর্থ হয়। এরপর আবেদনের পরিপ্র্রেক্ষিতে ১৪ দিন বাড়ানো হয়। কিন্তু এরপরও চাল দিতে ব্যর্থ হলে চুক্তি বাতিল করে বাংলাদেশ। এদিকে, এর বিকল্প হিসেবে ভারত থেকে আরও এক লাখ টন চাল আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ ব্যাপারে দেশটির সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

চালের বাজার স্থিতিশীল ও সরকারি মজুদ বাড়াতে চলতি অর্থবছরে জিটুজি (সরকার টু সরকার) ও আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মোট সাড়ে ১১ লাখ টন চাল কেনার চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যে চার লাখ টন চাল পাওয়া গেছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে পাঁচ লাখ টন চাল। আর চুক্তি বাতিল হয়েছে আড়াই লাখ টন চালের।

খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. বদরুল হাসান বুধবার যুগান্তরকে বলেন, কম্বোডিয়া আড়াই লাখ টন আতপ চাল দিতে জিটুজি চুক্তি করেছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে জাহাজীকরণে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। কম্বোডিয়া চাল না দেয়ায় কোনো সমস্যা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কম্বোডিয়ার চাল না হলেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। কারণ একাধিক দেশ এখন চাল দিতে আগ্রহী। এ ছাড়া আমাদের খাদ্য মজুদও যথেষ্ট রয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই আমন ধান কাটা শুরু হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে (২০১৭-১৮) সরকারিভাবে ১৫ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। ইতোমধ্যে জিটুজি পদ্ধতিতে সাত লাখ টন এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে সাড়ে চার লাখ টনসহ মোট সাড়ে ১১ লাখ টন চাল কেনার চুক্তি হয়। জিটুটি চুক্তির মাধ্যমে ভিয়েতনাম আড়াই লাখ টন, কম্বোডিয়া আড়াই লাখ টন, ভারত ও মিয়ানমার এক লাখ টন করে চাল দেয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল পাওয়া গেছে। ভারত ও মিয়ানমারের চালও আসার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রথম দফায় চাল জাহাজীকরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে কম্বোডিয়া। এ ছাড়া আড়াই লাখ টন চালের বদলে দেশটি এক লাখ টন চাল দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এ কারণে চুক্তিটি বাতিল করা হয়। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, জিটুজি পদ্ধতিতে ভারত থেকে আরও এক লাখ টন চাল আমদানির বিষয়ে দু’দফা বৈঠক হয়েছে। তবে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ইতোমধ্যে সাড়ে চার লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও আড়াই লাখ টনের দরপত্র আহ্বান করা হবে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আনা এক লাখ ৬৫ হাজার টন চাল দেশে এসেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বৃহস্পতিবারের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে সরকারি খাদ্য মজুদ রয়েছে পাঁচ লাখ ৯৬ হাজার ১১ টন। এর মধ্যে চার লাখ ১০ হাজার ৫২ টন চাল। গত বছর এই সময়ে খাদ্য মজুদ ছিল আট লাখ ৭২ হাজার ৯৪ টন। এর মধ্যে চাল ছিল পাঁচ লাখ ৭০ হাজার ১৫ টন।

https://www.jugantor.com/last-page/2017/11/11/170687