৮ নভেম্বর ২০১৭, বুধবার, ১০:৩২

নোট ভারবাল আর ভিসা তদবিরে ব্যস্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

নোট ভারবাল লিখে লিখে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বেশি সংখ্যায় নোট ভারবাল লিখতে হচ্ছে মন্ত্রণালয়টির জুনিয়র কর্মকর্তাদের। ফলে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এখন নাভিশ্বাস অবস্থা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমেরিকাস, ইউরোপসহ কয়েকটি উইং থেকে বেশি নোট ভারবাল লেখা হচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশি কূটনৈতিকদের সঙ্গে মিটিংয়ের সময় ঠিক করতে হচ্ছে তাদের। এছাড়া কক্সবাজারে বিদেশিদের ভ্রমণের সময় বিভিন্ন উইংয়ের
কর্মকর্তাদের সফরসঙ্গী হতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আমেরিকা, ইউরোপ, ভারত, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের ভিসা তদবিরেও বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে জুনিয়র কর্মকর্তাদের। এ নিয়ে ‘বিরক্তিকর’ পরিস্থিতির মুখে রয়েছেন ডেস্কের কর্মকর্তারা। গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় প্রায়ই তারা সেই বিরক্তি প্রকাশ করেন। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, যৌক্তিক এবং মানবিক কারণে সরকারি-বেসরকারি যে কেউ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নিতে পারেন। আমরা তা হাসি মুখে করে দেই। কিন্তু এমনও তদবির আসে যা আমাদের বিবেচনায় জরুরি না, অনেক ক্ষেত্রে অযৌক্তিক। কিন্তু তারপরও করতে হয় এবং ভিসা না হওয়া পর্যন্ত তা ফলোআপে রাখতে হয়। এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য যেমন বিব্রতকর, ঠিক তেমনি সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের জন্যও। ভিসা তদবিরে ব্যস্ত থাকার কারণে মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজেও ব্যাঘাত ঘটে বলে দাবি তদবিরকারী কর্মকর্তাদের। গুরুত্বপূর্ণ একটি উইংয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ডেস্ক অফিসার হিসেবে কাজ করা এক কর্মকর্তা অনেকটা খেদোক্তি করে বলেন, ‘আপনারা শুধু আমাদের দোষ খুঁজে বেড়ান। কিন্তু আমরা যেভাবে চাপের মধ্যে কাজ করি সেটা তো লিখেন না। দিন-রাত কষ্ট করতে করতে ফরেন সার্ভিসে এসেছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভুলই করেছি। এখানে এমনও কাজ করতে হয় যা কোনোদিন ভাবিনি। কি বলবো! বড় মানুষদের শালা-শ্যালিকারা বিদেশে ঘুরতে যাবে সেই তদবিরও আমাদের করতে হয়। শুধু তাই নয়, ভিসা হলে তো ভালো। না হলে টেলিফোন, বিরক্তিকর বয়ান আরো কত কী শুনতে হয়।’ অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, আগে বেসরকারি পর্যায়ে ভিসা তদবিরে লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন বা এলওআই দিয়ে দিলেই মুক্ত হওয়া যেতো। কিন্তু গত কয়েক বছরে বিশেষ করে আগের সরকারের আমলে মুড়ি-মুড়কির মতো এলওআই ইস্যুর কারণে সেটি এখন আর গ্রহণই করে না বৃটেনসহ ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস। আর তাই সরাসরি ভিসা তদবিরের চাপ বেড়েছে।

 

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=91021&cat=3