৫ নভেম্বর ২০১৭, রবিবার, ১০:৩৬

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক রাজনীতি

নোংরা দলাদলি ও রেষারেষি বিপর্যস্ত শিক্ষা-গবেষণা

পদোন্নতি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগসহ ছয়টি ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলই প্রধান লক্ষ্য * দলভিত্তিক রাজনীতি করলে নানা পদ বাগিয়ে নেয়া যায়। তাই শিক্ষকদের একটি অংশ নিজেদের দলীয় কর্মীর কাতারে নামিয়ে এনেছেন -অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দলাদলি ও রেষারেষি চরম আকার ধারণ করেছে। এমনকি কখনও দলীয় ফোরামে নিজেরা মারামারিতেও জড়িয়ে পড়ছেন। মূলত ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষক সরাসরি বিভিন্ন ‘রঙ’ (নীল, সাদা, গোলাপি) ধারণ করে ভিড়ছেন দলীয় রাজনীতিতে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম। পদোন্নতির জন্য গবেষণা এবং উচ্চতর ডিগ্রি জরুরি হলেও রাজনীতি করলে এক্ষেত্রে কমবেশি প্রমার্জন মেলে। যে কারণে তরুণ শিক্ষকদের অনেকে গবেষণার চেয়ে ‘নীল-সাদা’য় নাম লেখাতে বেশি আগ্রহী। আর নিজেদের নেতৃত্ব ধরে রাখতে এ সুযোগটি কাজে লাগান কিছু সিনিয়র শিক্ষক বা দলপতি। তারা জুনিয়রদের একরকম ‘ক্যাডার’ হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে সৃষ্টি হচ্ছে শিক্ষকদের নোংরা দলাদলি ও রেষারেষি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের ওপরও। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও শিক্ষা কাঠামো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, সিনিয়র শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে পাওয়া গেছে উল্লিখিত সব তথ্য। তারা জানান, প্রধান ছয়টি ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যেই অধিকাংশ শিক্ষক রাজনীতিতে জড়াচ্ছেন। এগুলো হচ্ছে- প্রবেশপদে নিয়োগ, পদোন্নতি, বাসা বরাদ্দ, নিজের অথবা অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে নিয়োগ এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নেয়া।
তবে এটি শিক্ষক সমাজের সাধারণ চিত্র নয় বলেও মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক। তাদের মতে, বেশিরভাগ শিক্ষক এ ধরনের তৎপরতা পছন্দ করেন না। কিন্তু তারা মুখ খোলেন না। এতে অপমাণ-অপদস্ত হওয়া কিংবা বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন- এমন আশঙ্কা তাদের। যে কারণে মুরব্বি শিক্ষকদের বেশিরভাগ নীরবেই সয়ে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি এমনই যে, বেশিরভাগ সিনিয়র শিক্ষক নাম প্রকাশ করে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতেও রাজি নন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অশীতিপর ইমেরিটাস অধ্যাপক বলেন, ‘শিক্ষক রাজনীতির যে চরিত্র আমরা দেখছি তা নিয়ে নিজের নামে কথা বলতেও খারাপ লাগছে। দলীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে শিক্ষকদের মধ্যে অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ড খুবই লজ্জাজনক। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেমন, তেমনি দেশের জন্যও লজ্জার। আমাদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষ কী শিখবে?’
কথাসাহিত্যিক ও ইংরেজির অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘দলভিত্তিক রাজনীতি করা বর্তমানে একটি লাভের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলভিত্তিক রাজনীতি করলে নানা পদ বাগিয়ে নেয়া যায়। তাই এ রাজনীতি করতে গিয়ে শিক্ষকদের একটি অংশ নিজেদের দলীয় কর্মীর কাতারে নামিয়ে এনেছেন। এক সময়ে রাজনৈতিক নেতারা শিক্ষকদের কাছে পরামর্শ নেয়ার জন্য যেতেন। এখন দেখা যায় উল্টো। এতে আমাদের নৈতিক অবস্থানটা নড়বড়ে হয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে শিক্ষকরা রাজনীতি করতেন গণমানুষের জন্য। কিন্তু আমাদের গণতন্ত্রের পুনঃপ্রত্যাবর্তনের পর ১৯৯০ সাল থেকে দেখেছি এটা পুরোপুরি একটা রাজনীতিকরণ হয়ে গেছে। একটা বড় দলে যেমন বিভক্তি থাকে, এখন শিক্ষকদের মধ্যেও নীল দল, সাদা দল- আবার এ ধরনের নানা দলের ভেতরেও বিভক্তি তৈরি হয়ে গেছে। এটার পেছনে ক্ষমতা, বস্তুগত চিন্তাই কাজ করছে। এর পেছনে দেশবাসীর সেবা করা বা জাতিকে পথ দেখানোর কোনো দূরদর্শী চিন্তা প্রতিফলিত হয় না।’
উচ্চশিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৯৯১ সালে গণতান্ত্রিক যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অগণতান্ত্রিকতা শুরু হয়। শিক্ষকদের একটি অংশের ব্যক্তিগত চাওয়া এবং দলীয় লেজুড়বৃত্তি ঘিরে সেটা দিন দিন চরম নেতিবাচক দিকে যাচ্ছে। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী চলছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদ থেকে শুরু করে সিন্ডিকেট-সিনেট-ফিন্যান্স কমিটিতে সদস্য এবং ডিন পদে নিয়োগ নির্বাচনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এছাড়া হলের প্রভোস্ট ও হাউস টিউটর নিয়োগ, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক সমিতি, লাভজনক বিভিন্ন পদে মনোনয়নের বিষয় আছে। এসব পদের নির্বাচন ঘিরেই মূলত শিক্ষকদের রাজনীতির আবর্তন। তবে শিক্ষকদের মধ্যে একটি গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, যারা সহকর্মী শিক্ষকদের ওপর অনৈতিক খবরদারি করেন। কিছু শিক্ষক ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন। এ দুই শ্রেণীর শিক্ষকের কেউ কেউ অপকর্মের অঘোষিত বৈধতা নিতে রাজনৈতিক ফোরামে ভিড়ে গেছেন। তারা আরও বলেন, সাধারণত সমমনা ও আদর্শের শিক্ষকরা মিলে অতীতে ফোরাম গঠন করেছেন। সেটাই পরে দলীয় ফোরামে পরিণত হয়। অতীতে ফোরামের নেতারা আদর্শের অনুগামী হয়ে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা দিয়ে নেতৃত্বে আসতেন এবং ফোরামে প্রভাব বিস্তার করতেন। কিন্তু একদশক ধরে দলীয় রাজনীতির মতো ‘মাই-ম্যান’ তৈরির প্রবণতা শুরু হয়। এটা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, ভিসির অনুসারী না হলে অন্য দল দূরের কথা, নিজ দলের শিক্ষকরা পর্যন্ত পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন। পাননি প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে নিয়োগ বা সুবিধা।

সংশ্লিষ্টরা এক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টান্ত সামনে এনে থাকেন। তারা বলেন, এ চর্চার কারণে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গত একদশকে শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রভোস্ট-হাউস টিউটর নিয়োগ, ভারপ্রাপ্ত ডিন নিয়োগ এবং রোটেশনে চেয়ারম্যান নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এক্ষেত্রে আইন-বিধি ও রীতি-নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে। নির্বাচনের রাজনীতি থাকায় শিক্ষক নিয়োগে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীকে নিয়োগের শতাধিক অভিযোগ আছে। পদোন্নতির যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও বঞ্চিত করার ঘটনাও অসংখ্য। আবার কোনোরূপ গবেষণা বা প্রকাশনা না থাকা এবং শিক্ষকতার নির্ধারিত সময় পূর্ণ না করা সত্ত্বেও অধ্যাপকসহ অন্য পদে পদোন্নতি দেয়ার ঘটনাও আছে।
জানা গেছে, চাওয়া-পাওয়া আর বঞ্চনার ঘটনা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে চরম হতাশা ও অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক শিক্ষকদের মধ্যে এ নিয়ে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বড় আকার ধারণ করেছে। গত জুলাইয়ে সিনেটে ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের শিক্ষকরা স্পষ্ট বিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন। ক্ষমতাসীন নীল দলের শিক্ষকরা আলাদা দুটি প্যানেল দেন। এ নিয়ে বিবাদ মেটাতে সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে হস্তক্ষেপ পর্যন্ত করতে হয়েছে। এমনকি এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে একটি মামলা পর্যন্ত হয়েছিল। কিন্তু এরপরও মেটেনি দ্বন্দ্ব। এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রায় তিন মাস আগে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির মেয়াদ শেষ হয়। ওই পদে আসেন নতুন ভিসি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এরপর ৯ বছর ধরে বিভিন্ন পদে থাকা শিক্ষকদের সঙ্গে একই দলের বঞ্চিত শিক্ষকদের দ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ্য রূপ লাভ করে। যার সর্বশেষ বহির্প্রকাশ ঘটে ২ নভেম্বর নীল দলের সাধারণ সভায়। ওই সভায় একজন শিক্ষক আরেকজনকে মারতে যান। তারই রেশ ধরে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার রেশ ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন আলোচনায় সমালোচনার ঝড় বইছে। সাবেক সিনিয়র শিক্ষকরা এ ঘটনায় খুবই ত্যক্তবিরক্ত।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নীল দলের নেতা অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, শিক্ষকরা এ সমাজেরই অংশ। সমাজ থেকে ওঠে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভালো ফলধারীদের আমরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকি। তাই বৃহত্তর সমাজে যে অবক্ষয় আছে, শিক্ষক হওয়ার পরও হয়তো দু’চারজন তার থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। শিক্ষকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের অভাব এ সমস্যার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন এই শিক্ষক নেতা।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক আখতার হোসেন খান বলেন, সম্পতি আমাদের কয়েকজন সহকর্মীর মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে তা অনাকাক্সিক্ষত ও অনভিপ্রেত। জাতির কাছে এতে আমরা ছোট হয়ে গেছি। তবে এটাও বলতে চাই, গোটা শিক্ষক সমাজের সাধারণ চরিত্র এটা নয়। তিনি বলেন, শিক্ষক রাজনীতির ধারণা এসেছে আদর্শ চর্চার প্লাটফর্ম তৈরির ধারণা থেকে। কিন্তু বর্তমানে এটা অনেকটাই দলীয় লেজুড়বৃত্তিতে পরিণত হয়েছে। এতে খাপ খাওয়াতে না পেরে অনেকে অবশ্য নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে তরুণ শিক্ষকরা দারুণভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা নানা চাপ নিয়ে পেশায় আছেন। সবকিছু এখানে উল্লেখ করতে চাই না। তবে এসব সার্বিকভাবে কল্যাণকর নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু শিক্ষকের মধ্যে দলাদলি এবং রেষারেষি বিরাজ করছে। এমন কারণেই মেয়াদপূর্তির আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীরকে বিদায় নিতে হয়েছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দলাদলি আর রেষারেষির কারণে ভিসিদের বিদায় নেয়া এবং দিনের পর দিন ধর্মঘটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম বিঘিœত হওয়ার ঘটনা ২০০১ সালের পর বিএনপি আমলেও ঘটেছে। শিক্ষকদের একটি অংশের অসন্তোষের মুখে সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনকে বিদায় নিতে হয়েছিল।

শিক্ষক রাজনীতির বর্তমান হালচাল নিয়ে কয়েকজন সিনিয়র অধ্যাপকের সঙ্গে যুগান্তরের কথা হয়। কিন্তু তাদের অনেকেই নাম প্রকাশ করতে আগ্রহী নন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী একজন সাবেক উপাচার্য যুগান্তরকে বলেন, একটা ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এমন অবস্থায় আমাদের অনুজরা উপদেশ কতটা শুনবেন তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। তাই নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চাচ্ছি না। ওই সাবেক ভিসি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় ফোরামে যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিন্দনীয়, ঔদ্ধত্যপূর্ণ, অনাকাক্সিক্ষত, নজিরবিহীন, দুঃখজনক এবং অসহনশীলতার চরম বহিঃপ্রকাশ। আমি আশা করব, এটিই হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে শেষ ঘটনা।
নাম প্রকাশ না করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক উপাচার্য (বিএনপিপন্থী) বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৫-১০ শতাংশ রাজনীতি করেন শুধু প্রভাবশালী ও অর্থশালী হওয়ার জন্য; শিক্ষকতা তাদের পেশা নয়। পড়ানো বা গবেষণার ব্যাপারটা তাদের কাছে মাত্রাতিরিক্তভাবে গৌণ। ৩০-৪০ শতাংশ শিক্ষক ছোটখাটো আর্থিক সুবিধা ও শিক্ষক নেতার প্রভাব দেখানোর জন্য রাজনীতি করেন। ফোরামের নেতার তোষণ করেই শিক্ষক-জীবন শেষ করছেন। এ ধরনের শিক্ষকরা ক্লাসে যান মাঝে মধ্যে। তবে ৩৫-৪৫ শতাংশ শিক্ষক কাউকে আক্রান্ত করতে বা অতিরিক্ত সুবিধা নিতে নয়, নিজের অধিকারটুকু বাঁচাতে ও আক্রান্ত না হতে রাজনীতি করেন। এ ধরনের শিক্ষকেরা ক্লাসে অনেকটাই নিয়মিত। তার মতে, ২-৫ শতাংশ শিক্ষক প্রতিকূলতা মেনে নিয়েও অশ্লীল রাজনীতি করেন না। তারা লেখাপড়া ও গবেষণায় মনোযোগ দিতে চেষ্টা করেন। নিজ যোগ্যতায় প্রতিকূল পরিবেশে লড়াই করে এরা টিকে থাকেন।

https://www.jugantor.com/first-page/2017/11/05/169011