৩ নভেম্বর ২০১৭, শুক্রবার, ৮:৫৮

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধে মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/265139

জোড়ায় জোড়ায় খুন। গাছের সাথে বেঁধে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা। নদী, ডোবা, ঝোপ-জঙ্গল, খোলা মাঠ থেকে একের পর এক লাশ উদ্ধারের ঘটনা। ধর্ষণের হাত থেকে রেহাই মিলছে না ৪ বছরের শিশুরও। সামান্য মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে কিশোরীকে পুড়িয়ে হত্যা। এভাবে একের পর এক নৃশংস ঘটনায় মানুষ এখন উদ্বিগ্ন। গত কয়েক দিনে হঠাৎ আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে সাধারণ মানুষ এখন চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন।

গত বুধবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর কাকরাইলে নিজ ঘরে মা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহতরা হলেন মা শামসুন্নাহার করিম (৪৬) ও তার ছোট ছেলে সাজ্জাদুর করিম শাওন (১৭)। উইলস লিটল ফাওয়ার স্কুলের বিপরীত দিকে তমা সেন্টারের পাশের গলির ৭৯/১ নম্বর বাড়ির পাঁচতলায় এ হত্যাকা ঘটে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় বলেছেন, এই ঘটনায় জড়িতরা গ্রেফতার হবে। অন্যান্য ঘটনার মতো এই ঘটনাটিরও রহস্য উদঘাটন হবে। এই ঘটনায় শামসুন্নাহারের স্বামী আব্দুল করিম ও গৃহপরিচারিকাকে আটক করেছে পুলিশ।
এ দিকে গতকাল সকালে রাজধানীর বাড্ডার ময়নারবাগের হোসেন মার্কেট এলাকার একটি বাসা থেকে বাবা জামিল শেখ (৩৮) ও তার মেয়ে নুসরতের (৯) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত জামিল শেখের শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আর মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী বলেছেন, কে বা কারা এবং কেন তাদের হত্যা করেছে তা পরিষ্কার নয়। তবে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জামিল শেখের স্ত্রী আরজিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নিহত জামিল শেখের এক আত্মীয় বলেছেন, আরজিনার পরকীয়ার কারণে জামিল ও শিশুকন্যাকে হত্যা করা হতে পারে।

এভাবেই একের পর এক ঘটছে হত্যার ঘটনা। নরসিংদীতে চাচীর অনৈতিক কর্মকা দেখে ফেলায় এক কিশোরীকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার খৈনকুট গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহত কিশোরীর নাম আজিজা খাতুন (১৩)। সে শিবপুরের খৈনকুট গ্রামের আবদুস সাত্তারের মেয়ে।
প্রকাশ্যে শত শত লোকের চোখের সামনে পিটিয়ে হত্যার মতো নৃশংস ঘটনাও ঘটছে। ময়মনসিংহের গৌরীপুরে খুঁটিতে বেঁধে সাগর মিয়া (১৬) নামে এক কিশোরকে সম্প্রতি এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মৎস্য খামারের পাম্প চুরির অভিযোগে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ সূত্র জানায়।

এ দিকে একের পর ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। বাদ যাচ্ছে না ৪ বছরের শিশুও। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬১৬ জন নারী-শিশু ধর্ষণের শিকার হন। জানুয়ারি ধর্ষণের শিকার হন ৪৪ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৫১ জন, মার্চে ৬৯ জন, এপ্রিলে ৫৪ জন, মে মাসে ৮৩ জন, জুনে ৭৯ জন, জুলাইয়ে ৭৩ জন, আগস্টে ৮৮ জন এবং সেপ্টেম্বরে ৭৫ জন নারী-শিশু ধর্ষণের শিকার হন।
এ দিকে ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতি চলছে সমানতালে। গত ৩০ অক্টোবর পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত ক্রাইম কনফারেন্সে উল্লেখ করা হয়, দেশে দস্যুতা, খুন, অপহরণ ও নারী নির্যাতন মামলার সংখ্যা বেড়েছে। এ নিয়ে শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা আলোচনা করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অতি সম্প্রতি মাদকের বিস্তৃতি ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে। রাজধানীসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোথাও কোথাও প্রকাশ্যেই মাদকদব্য বিক্রি হওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। মাদক কারবারের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হলেও তাদের বেশি দিন আটকে রাখা যায় না। কিছু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করেও ছেড়ে দিচ্ছেন। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পেছনে বড় কারণ হচ্ছে মাদকের বিস্তার। এ দিকে, আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। সমাজে মাদকের বিস্তার ও 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/265139