২ নভেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৮:৫২

স্বাচিপ-বিএমএ দ্বন্দ্বে অস্থির চিকিৎসালয়

শনিবার সপ্তাহের প্রথম দিন রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করিডরে রোগীর যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। প্রতিটি কক্ষের সামনেই রোগীদের অপেক্ষা।
কেউ কেউ ধৈর্যহারা হয়ে চেঁচামেচিও করছিল। এর মধ্যেই একটি কক্ষে ছয়-সাতজন চিকিৎসক বসে আছেন মন খারাপ করে। তাঁদের মন খারাপের কারণ জানতে চাইলে হাসপাতালের মধ্যম পর্যায়ের একজন চিকিৎসক কর্মকর্তার কণ্ঠে ঝরে আক্ষেপ। বলেন, ‘ভাই রে, কাজ করব কিভাবে, সংগঠনের ঠেলায়ই তো অস্থির! একদিক দিয়ে স্বাচিপের দাপট, আরেক দিক দিয়ে বিএমএর ধাক্কা; এক গ্রুপ পদোন্নতির তালিকা দেয়, আরেক গ্রুপ সেটা আটকে দেয়। এর মধ্যে কি মনোযোগ দিয়ে রোগীর সেবা করা যায়? আমরা চিকিৎসক; স্বস্তিকর পরিবেশ না পেলে তো বড়ই বিপদ!’
একই হাসপাতালের আরেক চিকিৎসক বলেন, “স্বাচিপের কমিটি নিয়ে আপত্তি করায় আমাদের এক গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসককে এই হাসপাতাল থেকে বিতাড়িত করার উদ্যোগ নেয় এক গ্রুপ। যদিও পরে তিনি আরেক গ্রুপের প্রভাবে আপাতত ‘সংযুক্ত’ হিসেবে এখনো টিকে আছেন। ”

দলাদলির পরিস্থিতি যে এই হাসপাতালে এখন অনেকটাই জটিল হয়ে উঠেছে, তার আরো চিত্র ফুটে ওঠে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম বড়ুয়ার কণ্ঠেও। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘এ হাসপাতালে এত বছর চিকিৎসকদের মধ্যে কোনো দলাদলি ছিল না। আমরা সবাই এক ছিলাম।
অনেকেই বিএমএ কিংবা স্বাচিপের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে আছি। কিন্তু এখানে আগে স্বাচিপের কোনো কমিটি ছিল না। সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে একটি কমিটি ঘোষণার পর চিকিৎসকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তখন এই হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভেতর থেকে স্বাচিপেরই আরেকটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এই দুই গ্রুপের তৎপরতায় এই প্রথম এ হাসপাতালে স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হয়, যা খুবই দুঃখজনক। ’
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটের একজন সহযোগী অধ্যাপক তাঁর কর্মস্থলের পরিবেশ জানাতে গিয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সব সরকারের সময়ই এখানে দলাদলি ছিল, এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এখন নতুন হচ্ছে পরিস্থিতি এতটাই বেপরোয়া যে কিছু দিন আগে সরকার সমর্থক চিকিৎসকদের নিজেদের মধ্যে এখানে রীতিমতো অভ্যুত্থান হয়ে গেছে। বর্তমান বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন গ্রুপের দাপট খর্ব করেছে স্বাচিপের বর্তমান সভাপতি ইকবাল আর্সলান গ্রুপ। এমনকি স্বাচিপের ইকবালবিরোধী গ্রুপের কয়েকজনকে প্রভাব খাটিয়ে এই হাসপাতাল থেকে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে জালাল গ্রুপ চুপ করে নেই, তারা আবার এখানে নিজেদের রাজত্ব ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমন দলাদলির প্রভাব তো পুরো হাসপাতালে পড়বেই। আমরা চিকিৎসকরা যদি সারা দিন এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকি, তবে কি আর রোগীর সেবা ঠিকমতো দেওয়া যায়?’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কেবল ওই দুই হাসপাতালেই নয়, জাতীয় হৃদেরাগ ইনস্টিটিউট, জাতীয় অর্থোপেডিকস হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, জাতীয় কিডনি ও ইউরোলজি হাসপাতালসহ অন্যান্য ছোট-বড় সরকারি হাসপাতালেও একই পরিবেশ বিরাজ করছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরের কোথাও কোথাও এমন গ্রুপিংয়ের শিকার হচ্ছে সাধারণ চিকিৎসক ও রোগীরা। অনেক হাসপাতালে ক্ষমতাসীনদের এমন দলাদলির মুখে হাসপাতালের প্রশাসনও অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে সরকার সমর্থক চিকিৎসকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-গ্রুপিং। গত বছর বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নতুন কমিটি হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে ওই দ্বন্দ্ব তীব্র হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) হাতে কয়েক বছর ধরে বিএমএর নেতৃত্ব থাকলেও বিএমএর বর্তমান কমিটির প্রভাবশালী বড় অংশের সঙ্গে স্বাচিপের বড় অংশের বিরোধ এখন প্রায় প্রকাশ্য; যার প্রভাব পড়েছে দেশের সব কটি সরকারি হাসপাতালে। এমনকি কোনো কোনো বেসরকারি হাসপাতালেও পরোক্ষভাবে এর প্রভাব রয়েছে। সর্বশেষ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে চিকিৎসকদের পদোন্নতি ও বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাচিপের কমিটি গঠন নিয়ে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটতে শুরু করে, যা এখন প্রতিটি হাসপাতালেই ক্ষমতা দখল-বেদখলের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। কোথাও কোথাও চলছে বদলি-পাল্টাবদলির ঘটনা। বিশেষ করে এবারের পদোন্নতিতে বিএমএর সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদিনের সমর্থকরা বেশি সুবিধা পাওয়া, অন্যদিকে স্বাচিপের সভাপতি ইকবাল আর্সলানের সমর্থকরা বেশি বঞ্চিত হওয়ার প্রভাব পড়েছে চিকিৎসকদের মধ্যে।
প্রবীণ চিকিৎসক নেতারা জানান, বিএমএ হচ্ছে চিকিৎসকদের একটি জাতীয় পেশাগত সংগঠন। সাধারণত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিএমএর কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচিত হয়ে থাকে। এই ধারাবাহিকতায় বেশির ভাগ সময়েই যখন যে দলের সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সেই দলের সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠনই বিএমএর নেতৃত্বে থাকে। বর্তমান সরকারের সময়ে বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব নির্বাচন বর্জন করায় স্বাচিপের নেতৃত্বে চলে বিএমএ। এবারও সাংগঠনিকভাবে স্বাচিপের নেতৃত্ব থাকলেও কার্যত বিএমএ ও স্বাচিপের মধ্যে চলছে বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক। মূলত হাসপাতালে হাসপাতালে স্বাচিপের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিএমএ। অথচ সবাই স্বাচিপেরই সদস্য! সারা দেশে এখন স্বাচিপের সদস্যসংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার। আগামী ২৪ ডিসেম্বর সংগঠনটির ২৪ বছর পূর্তি হবে।
জানতে চাইলে বিএমএর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোনো কোনো হাসপাতালের কিছু ঘটনা আমার কানে এসেছে। যারা এগুলো করছে তারা মোটেই ভালো করছে না। স্বাচিপ আমার হাতে গড়া সংগঠন। কিন্তু এখন এর নেতৃত্বে যাঁরা আছেন তাঁরা যা করছেন তাতে বিএমএ এবং সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার জোগাড়। কিন্তু আমি বিএমএর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে দেব না। ’

স্বাচিপের বর্তমান সভাপতি ও বিএমএর সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্বাচিপ হচ্ছে আমাদের মূল সংগঠন। এ সংগঠনের হয়েই বিএমএর নেতৃত্ব হয়। কিন্তু এখন বিএমএর নেতৃত্বে যাঁরা আছেন তাঁদের কেউ কেউ হয়তো স্বাচিপের অস্তিত্বকেই সহ্য করতে পারেন না কিংবা স্বীকার করতে চান না। বরং কেউ কেউ স্বাচিপকে ধ্বংস করতে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের বুঝতে হবে, স্বাচিপ শক্তিশালী না থাকলে যেকোনো সময় তাঁরাও অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বেন, যেমনটা এর আগেও অনেকেই হয়েছিলেন। ’
বিএমএ ও স্বাচিপের একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একসময় মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন আওয়ামী লীগ সমর্থক চিকিৎসকদের একচ্ছত্র নেতৃত্বে থাকলেও পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগে তাঁর অবস্থা নাজুক হলে চিকিৎসকদের মধ্যে তাঁর প্রভাব কমে আসে। অন্যদিকে স্বাচিপও অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক সভাপতি ও অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান দায়িত্ব নেওয়ার পর আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে স্বাচিপ। তবে এ সময় থেকেই মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের অনুসারীরা রুহুল-ইকবালের নেতৃত্বের বিরোধী ভূমিকায় অবস্থান নেয়। সর্বশেষ গত বছর স্বাচিপের সম্মেলন ঘিরে মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন আরো সক্রিয় হয়ে ওঠেন। সম্মেলনের দিনেও অনুষ্ঠানস্থলে ঘটে অপ্রীতিকর ঘটনা। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের হস্তক্ষেপে ইকবাল আর্সলানকে স্বাচিপের সভাপতি এবং তাঁর দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ও মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের অনুসারী বলে পরিচিত ডা. এম এ আজিজকে মহাসচিব করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে চলতি বছরের শুরুতে বিএমএর নির্বাচনে একইভাবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনায় স্বাচিপের পক্ষ থেকে বিএমএ সভাপতি পদে মনোনয়ন দেওয়া হয় মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে এবং মহাসচিব পদে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলালকে। তাঁরাই নির্বাচিত হন। দুলালকে অনেকেই জানে ইকবাল আর্সলানের অনুসারী বলে। এর পর থেকেই জালাল-দুলালের দখলে চলে যায় বিএমএ এবং ইকবাল-আজিজের দখলে যায় স্বাচিপ বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। এমনকি বিএমএ নির্বাচনের পর অনেক দিনই ওই দুই সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বলতে গেলে মুখ দেখাদেখি করেননি এবং একই সভায় উপস্থিতিও কম দেখা গেছে। বিএমএর কোনো অনুষ্ঠানে যাননি ইকবাল-আজিজ ও তাঁর অনুসারীরা, আবার স্বাচিপের কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেননি জালাল-দুলাল বা তাঁদের অনুসারীরা। একপর্যায়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের উদ্যোগে এমন অবস্থা কিছুটা শিথিল হয়ে এলেও সম্প্রতি স্বাচিপের বিভিন্ন শাখা কমিটির সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু হলে অবস্থার আবার অবনতি ঘটে।

ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমি দেশের বাইরে ছিলাম। দেশে ফিরে শুনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে নিজেদের মধ্যে কেউ কেউ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছেন। এতে বিএমএর অবমূল্যায়ন হচ্ছে। ’
ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘স্বাচিপকে শক্তিশালী করার জন্য যেসব শাখা সক্রিয় নেই কিংবা কোনো কমিটি ছিল না, এমন কিছু শাখায় সম্মেলন ও কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছি। কোথাও কোথাও সম্মেলন আয়োজনের লক্ষ্যে অ্যাডহক কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কেউ কেউ বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেছিলেন। তবে এখন সমস্যা নেই। যাঁরা বিএমএকে স্বাচিপের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চান তাঁরা নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারছেন। ’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএমএর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ে আমরা আসলেই বিব্রত। হাসপাতালে ঠিকমতো কাজ করা যায় না। সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেও একে অন্যের বিরুদ্ধে লেগে আছেন। চলছে পাল্টাপাল্টি নানা তৎপরতা। এতে চিকিৎসাও ব্যাহত হয়। এমনকি এক গ্রুপের চিকিৎসক অন্য গ্রুপের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনেক মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাঁকে হেনস্তা করার চেষ্টাও করছেন। ’
ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে রবিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর রোগীর স্বজনদের হামলার ঘটনার জের ধরে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে আউটডোর বন্ধ রাখেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। এতে চিকিৎসাবঞ্চিত হয় অসংখ্য রোগী। এ ঘটনার নেপথ্যে চিকিৎসকদের দুটি সংগঠনের নেতাদের বিরোধের প্রভাবকে দায়ী করছেন ওই হাসপাতালেরই সাধারণ চিকিৎসকদের কেউ কেউ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন সিনিয়র চিকিৎসক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঘটনার দিন যে ছেলেরা এসে রোগীর স্বজন পরিচয় দিয়ে ডাক্তারদের ওপর হামলা করে, তারা তখন নিজেদের বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের লোক বলে পরিচয় দেয়। অন্যদিকে যে ডাক্তারের হাত ভেঙেছে, তিনি স্বাচিপের সদস্য। ফলে ঘটনার পর সাধারণ চিকিৎসকদের চেয়েও হাসপাতালের স্বাচিপ সমর্থক চিকিৎসকরা বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ওই দিনই বিএমএ সভাপতি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও স্বাচিপ সমর্থকরা তা মানেননি। এর জের ধরেই তাঁরা হঠাৎ করে আবার মঙ্গলবার আউটডোর বন্ধ করে দেন। যদিও পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আগমনে আউটডোর খুলে দেওয়া হয়। ’

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএমএ সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সেদিন পরিস্থিতি শান্ত করে দিয়ে এসেছিলাম। মঙ্গলবার আবারও গিয়েছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন জনে প্যাঁচ লাগানোর চেষ্টা করে। ’
অন্যদিকে স্বাচিপের সভাপতি ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘চিকিৎসা বন্ধ রাখার বিষয়টি কখনোই আমি সমর্থন করি না, এটা হওয়া উচিত নয়। কিন্তু যখন একজন ডাক্তারের হাত ভেঙে দেওয়া হয় তখন তরুণ ডাক্তারদের শান্ত করতে একটু হয়তো সময় লাগে। চাপ দিয়ে হয় না, বুঝিয়ে কিছু পদক্ষেপ দেখিয়ে তাদের শান্ত করতে হয়। ’
স্বাচিপ সভাপতিও দাবি করেন, আহত চিকিৎসকরা স্বাচিপের সদস্য।

http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2017/11/02/560500