২৮ অক্টোবর ২০১৭, শনিবার, ৮:৫৮

পেঁয়াজের কেজি ৮০-৮৫ টাকা

দফায় দফায় বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। লাগামহীনভাবে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে দিশেহারা মানুষ। কখনো চালের দাম বাড়ছে, আবার কখনো বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। আর সবজির দামও বৃদ্ধি পাওয়া অবস্থায়ই রয়েছে। এখন নতুন করে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে। চালের দাম কমেনি, কমেনি সবজির দামও। সরকারের বাজার মনিটরিং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অবিলম্বে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে ভোক্তারা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা দরে। এর আগে গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে দিগুণ বেড়ে পেঁয়াজ দাম হয়েছিল ৬০ টাকা। তবে এর কিছুদিন পরে ১০ টাকা কমে ৫০ টাকায় নামলেও গত সপ্তাহে আবারও বিক্রি হয় ৬০ টাকা দরে। অর্থাৎ আগস্টের পর পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০-৫৫ টাকা।

এছাড়া আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বাজারে এই দামের সঙ্গে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যতালিকা পর্যালোচনা করে কিছুটা পার্থক্য দেখা গেছে। টিসিবির মূল্য তালিকায় দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৬৫-৭০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৮-৬২ টাকা দেখা গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগস্টের শুরুতে টানা বৃষ্টির কারণে আড়তে পেঁয়াজ, রসুন ও আলু সংরক্ষণ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারও পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের।

এদিকে গত সপ্তাহের পর কিছুটা কমছে কাঁচা মরিচের দাম। কাঁচা মরিচ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে। এছাড়া কেজি প্রতি দেশি রসুন টাকা বেড়ে ১১০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১১০ টাকা, আলু কেজি প্রতি বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা দরে।

তবে সপ্তাহের ব্যবধানে আদার দাম কিছুটা বাড়লেও আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদি পণ্যের দাম। বাজারে কেজি প্রতি চীনের আদা ১৪০ টাকা এবং ক্যারালা আদা ১৫০ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, দেশি মুগ ডাল ১৩০ টাকা, ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা, মাষকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মসলার মধ্যে কেজি প্রতি দারুচিনি ৩৬০ টাকা, জিরা ৪৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ২০০ টাকা, লবঙ্গ ১৫০০ টাকা, এলাচ ১৬০০ টাকা, হলুদ ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ভোজ্য তেলের দাম আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ব্র্যান্ড ভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০ টাকা, প্রতি লিটারে ১-২ টাকা বেড়ে ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকা, শিম ১৪০ টাকা, হাইব্রিড টমেটো ১৬০ টাকা, দেশি টমেটো ১০০ টাকা, শশা ৬০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা, কচুর লতি ৬০-৬৫ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, আমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতিটি ফুলকপি ৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা, লালশাক ২০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪৫ টাকা, পারিজা চাল ৪৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট (ভালো মানের) ৬০ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৮ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় বিআর-২৮ ৪৮ টাকা, দেশি বিআর-২৮ ৫২, নাজিরশাইল (কাটারি) ৬৩ টাকা, নাজিরশাইল (নরমাল) ৬৫ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮ টাকা, বাসমতি ৫৩ টাকা এবং পোলাও চাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা।

আর বাজারে ইলিশ আসতে শুরু করলেও এখন পর্যন্ত মাঝারি আকারের ইলিশ হালি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকা দরে।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ছোট দেশি মুরগির দাম আগের বাড়তি দামে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১৩৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি গরুর গোশত ৫০০ টাকা এবং খাসির গোশত ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

http://www.dailysangram.com/post/305308