গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সুশীল ফোরাম আয়োজিত রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর ও বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন 
২৮ অক্টোবর ২০১৭, শনিবার, ৮:৫৬

২৮ অক্টোবরের ঘটনার মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতায় আনার নীলনকশা করা হয়েছিল

 বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ শে অক্টোবর ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করে ‘এক-এগার’ সৃষ্টির নীলনকশা করা হয়েছিল বর্তমান অবৈধ সরকারকে ক্ষমতায় আনার জন্য। তাই এই ২৮ শে অক্টোবর বাংলাদেশের জন্য একটি কালো দিন।

গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে “রক্তাক্ত ২৮ শে অক্টেবর ও বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান” শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে সুশীল ফোরাম নামের একটি সংগঠন।

সংগঠনের সভাপতি মো. জাহিদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্বদেশ জাগরণ পরিষদের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান সেলিম, বিএনপির নির্বাহী পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম মোল্লা, জাগপা নেতা আসাদুর রহমান খান, বিএনপি নেতা মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এবং পল্টন ময়দানে আওয়ামী লীগের লোকজন লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করেছিল। এর পথ ধরে ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিন শাসিত সরকার ক্ষমতায় আসে।

ঘটনার প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এই ২৮ অক্টোবর গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার নীলনকশা করা হয়েছিল। পরে এক এগারর সরকার গঠন এবং বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসে। এরপর ১০ বছর কেটে গেছে দেশ অগণতান্ত্রিক সরকারের হাতে। এর থেকে মুক্তি প্রয়োজন।

তিনি উল্লেখ করেন গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য অনেক সভা সেমিনার হয়েছে। আসলে সভা সেমিনার করে গণতন্ত্রের মুক্তি মিলবে না। গণতন্ত্রকে মুক্ত করার একমাত্র পথ ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামা।

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন বিএনপির চেয়ারপারসন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দিবেন। সেই অনুযায়ী নির্বাচন হতে হবে। না হলে মানুষ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে জন জোয়ারে আওয়ামী লীগ সরকার বিলীন হয়ে যাবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আইন মানুষের জন্য। আপনারার দয়া করে প্রহসের নির্বাচন করবেন না। যদি মনে করেন যে সঠিক নির্বাচন করতে আপনারা পারবেন না তাহলে পদত্যাগ করুন। কারণ মানুষ তার ভোটের অধিকার চায়। মানুষের ধৈর্য্যের সীমা শেষ হয়ে গেছে।

সিনিয়র এই আইনজীবী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, গণতন্ত্রহীন সমাজ দেশের মানুষের জন্য কোন কল্যাণ বয়ে আনে না। যতই বলা হউক উন্নয়নের জোয়ার বইছে। এই উন্নয়নে গ্রাম গঞ্জের মানুষকে স্পর্শ করে না। আগামি নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয় সেজন্য আজ থেকেই কাজ শুরু করতে হবে। আমি বলতে চাই দেশে আর ৫ জানুয়ারি আসবে না। আসার সুযোগ নাই। মানুষ তার ভোটের অধিকার চায়।

মানুষের ভোটের অধিকার এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রয়োজনে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। কারণ আইনের জন্ম মানুষের কল্যাণের জন্য।

সভাপতির বক্তব্যে মো. জাহিদ বলেন, ২৮ অক্টোবর লগিবৈঠা দিয়ে যে তা-ব তৈরি করা হয়েছিল তা মানুষ ভুলে যায়নি। দেশের মানুষ আজ আতংকের মধ্যে। আমরা এই অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।

নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, এই স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। ঘেরাও করতে হবে। ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে হবে।

কামরুজ্জামান সেলিম বলেন ২৮ অক্টোবর থেকে দেশ জ্বলছে। ১০ বছর ধরে সেই আগুনে মানুষ জ্বলছে। সেই আগুন থেকে মুক্তি চাই।

http://www.dailysangram.com/post/305305