২৩ অক্টোবর ২০১৭, সোমবার, ৯:০২

নির্মাণের চার মাসে মহাসড়কে ধস

নির্মাণের চার মাসের মাথায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মার মোড় বাঁক এলাকার পাঁচটি স্থানে প্রায় ৫০মিটার অংশ ধসে গেছে। ছবিটি গতকাল তোলা l প্রথম আলো
দুই দিনের বৃষ্টিতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের প্রায় ৫০ মিটার সড়ক ধসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ২০ মিটার পড়েছে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড সড়ক এলাকায়। অথচ মাত্র চার মাস আগেই দেড় কোটি টাকা খরচ করে সড়কটি নির্মাণ করা হয়।

আর বাকি ৩০ মিটার পদ্মার মোড়ে বাঁক সরলকরণ সড়ক এলাকায় ধসে গেছে। দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের এ সড়কগুলো ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের আওতাধীন।

গতকাল রোববার সড়কের গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের চারটি স্থানে ৩ থেকে ৬ মিটার এলাকাজুড়ে পাকা সড়কসহ ড্রেন ধসে পড়েছে। ১০-১৫ ফুট দেবে সড়ক খালে গিয়ে পড়েছে। কিছু দূর পর পদ্মার মোড়ের বাঁকের সড়কে প্রায় ৩০ মিটার এলাকা সড়ক ভেঙে খালে গিয়ে পড়েছে। রাস্তার প্রায় অর্ধেক অংশ ধসে পড়ায় ভারী যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সড়কজুড়ে আছে আরও অসংখ্য গর্ত।

গতকাল দুপুরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের লোকজন সেখানে মাটি ফেলে মেরামতকাজ শুরু করেছে। কর্তব্যরত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ভারী বৃষ্টিতে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড থেকে পদ্মার মোড় তেনাপচা ডাইভারশন বাঁক পর্যন্ত মহাসড়কের পাঁচ-ছয় স্থানে ধস নেমেছে। সড়কের পানি দ্রুত নিষ্কাশন হতে না পারায় পানির চাপে তা ঢালুর দিকে ধসে গেছে। এসব ভাঙা স্থান মেরামত করতে তিন-চার দিন সময় লাগবে।

সওজের রাজবাড়ী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মহাসড়কের পদ্মার মোড় বাঁক সরলকরণ এলাকার কাজ শেষ হয়। চলতি বছরের ৩০ জুন ‘ইমপ্রুভমেন্ট অব ব্ল্যাক স্পট’ প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডে ২৮৫ মিটার পাকা সড়ক নির্মাণ ও এর পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার কাজ শেষ হয়।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রফিক কনস্ট্রাকশনের স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে রাজবাড়ীর মোস্তাফিজুর রহমান কাজের তদারকি করেন। কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পরেই কয়েক স্থানে ফাটল দেখা দেয়। গত ২৪ জুলাইও প্রায় ৫০ মিটার এলাকা ধসে পড়ে। পরে দ্রুত মেরামত করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর তিন মাস যেতে না যেতেই সড়কের কয়েকটি স্থান ধসে গেল।

স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত ব্যাপারী বলেন, ঢাকা-খুলনার মতো গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে লোকজন কীভাবে চলাচল করবে? নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার চার মাসের মাথায় এ নিয়ে দুবার সড়ক ধসে গেল।

সড়কে বালু ফেলার সময় উপস্থিত সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী মাহাবুব রহমান বলেন, ‘যেভাবে বৃষ্টি নামছে, এতে আমরা কী করতে পারি?’ কয়েক মাস আগে ভারী বৃষ্টিতে পুরো মহাসড়কে অসংখ্য ছোট ছোট গর্ত হয়েছিল। সেগুলো মেরামত শেষ করতেই নতুন করে বৃষ্টিতে আরও অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড ও বাঁক সরলকরণ এলাকার কয়েক স্থানে প্রায় ৫০ মিটার পাকা সড়ক ও ড্রেন ধসে গেছে। এসব মেরামত করতে কয়েক দিন লেগে যাবে। এরপর সড়কের গর্তগুলোর মেরামতকাজ শুরু হবে।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম গতকাল দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, বাসস্ট্যান্ডে সড়ক বিভাজক এলাকায় ধসে পড়া স্থান দ্রুত মেরামত করতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাঁক সরলকরণ এলাকায় তাঁরা জরুরিভাবে বিভাগীয় মেরামতকাজ শুরু করেছেন। আপাতত মেরামতের স্থান দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1349771