২২ অক্টোবর ২০১৭, রবিবার, ১১:২০

টানা বৃষ্টিতে চড়া কাঁচাবাজার

দুই দিনের অস্বাভাবিক বৃষ্টিতে রাজধানীর বৃহৎ পাইকারি কাঁচাবাজার কাওরান বাজারসহ বেশিরভাগ বাজারে হাঁটু পানি জমেছে। এ ছাড়া অলিগলিতে পানি জমে যাওয়া ও টানা বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন ক্রেতারা বাজার করতে পারছেন না, অন্যদিকে বিক্রেতারাও পড়েছেন বিপাকে। কোথাও কোথাও তরিতরকারি পচেও যাচ্ছে। ফলে বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমলেও টানা বৃষ্টির কারণে নতুন করে বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

গত সপ্তাহে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৭৫-৮০ টাকায়। সেই বেগুনের প্রতিকেজি ১০০ টাকা হাঁকছেন বিক্রেতারা। বৃষ্টিকে পুঁজি করে একদিনেই দাম বাড়িয়েছেন তারা। পাইকারি বাজারে সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কম থাকলেও খুচরা বাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দামই চড়া।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাওরান বাজার, বনানী কাঁচাবাজার ও শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, হাতিরপুল, কাঠালবাগানসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার হাঁটু পানিতে স্থবির হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে মহল্লার ছোট ছোট কাঁচাবাজারগুলো। সরজমিনে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় হাঁটু পানি জমে গেছে। কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতা নেই। ক্রেতা আসলেও দাম বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা। রাজধানীর অন্য কাঁচাবাজারেরও একই অবস্থা। এসব বাজারে কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় বাজারে সবজি কম। তাই দামও চড়া।
কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস আলী বলেন, বৃষ্টির কারণে অনেক কাঁচাবাজার পচে গেছে। ক্ষেতের সবজিও নষ্ট হয়ে যাবে। তখন কিন্তু দাম বৃদ্ধি ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। তিনি জানান, কাঁচামরিচ, পটোল, ঝিঙা, করলা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, বেগুনসহ প্রায় সবকটি সবজির দাম কমেছিল। কিন্তু দু’দিনের বৃষ্টিতে সরবরাহ কমায় আবার দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতকালীন সবজির সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। তবে পুরোপুরি সব সবজি এখনো বাজারে আসেনি। শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লে দাম অনেকটাই কমে যাবে।
আরেক বিক্রেতা জানান, আদার দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনেকদিন ধরেই দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। ভারতীয় পিয়াজের কেজি ৪৫ টাকা। নতুন পিয়াজ বাজারে আসার আগে দাম কমার সম্ভাবনা দেখছেন না বিক্রেতারা। রসুনের দাম কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে, দেশি-বিদেশি দুটোর কেজিই মিলছে ১০০ টাকার মধ্যে।

পূর্বরাজা বাজারের বাসিন্দা ফজলু বলেন, বৃষ্টির কারণে শুক্রবার বাজার করতে পারিনি। কিন্তু আজ (গতকাল) তার চেয়েও বেশি বৃষ্টি। ঘরে কোনো তরিতরকারি নেই। তাই বাধ্য হয়ে বাজারে এসেছেন তিনি। তবে বৃষ্টির কারণে দাম বেশি বলে জানান তিনি।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি বরবটি ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০, ঢেঁড়স ৫৫, করলা ৬৫, পটোল ৫০, শশা ৫০ ও প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকায়। একইভাবে প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ ৫০-৬০ টাকা, আমদানিকৃত পিয়াজ ৪৮-৫২, দেশি রসুন ৭০-৯০, আমদানিকৃত রসুন ৯০-১১০ ও প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ১০০-১৫০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁপে ২৫, টমেটো ১৪০, ধুন্দুল ৪০ ও মুলা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। লাউ প্রতি পিস ৩০-৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০, লালশাক প্রতি আঁটি ৩০ টাকা, ডাঁটাশাক ৩০, কলমি শাক ২০, পুঁইশাক ৬০, পাটশাক ১৫ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিেক প্রতি কেজি রুই মাছ ২২০-৩০০ টাকা, কাতল মাছ ২৫০, শিং মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সপ্তাহজুড়ে মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে মাংসের দাম। রাজধানীতে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৪৮০-৫০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া প্রতি কেজি খাসি ৭০০-৭৫০, ব্রয়লার মুরগি ১২০-১৩০, দেশি মুরগি ৩৭০-৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=88599