১৯ অক্টোবর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১:২৫

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদন

নিরাপদ শহরের তালিকায় তলানিতে ঢাকা

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুত নগরায়নের পাশাপাশি নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বিশ্বের ৬০টি নিরাপদ শহরের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেখানে সবচেয়ে নিরাপদ শহর হিসেবে শীর্ষ পাঁচে রয়েছে যথাক্রমে টোকিও, সিঙ্গাপুর, ওসাকা, টরন্টো ও মেলবোর্ন। তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৫৮তম। আর সবচেয়ে কম নিরাপদ শহর হচ্ছে পাকিস্তানের করাচি। ‘সেফ সিটিজ ইনডেক্স ২০১৭ : সিকিউরিটি ইন র্যা পিডলি আরবাইনাইজিং ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এবারই প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। শহরের অধিবাসীদের চার ধরনের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ডিজিটাল নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, অবকাঠামোর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা।

ইকোনমিস্টের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, যেকোনো শহরে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তাও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। এ সমীক্ষায় সন্ত্রাসবাদের সংকট নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সমৃদ্ধ নগরগুলোকে নিশানা করছে সন্ত্রাসবাদীরা। প্রতিবেদনটিতে অবকাঠামোগত দুর্বলতা, সড়ক দুর্ঘটনা ও অপরাধের মাত্রাসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ৪৭ দশমিক ৩৭ স্কোর নিয়ে সামগ্রিকভাবে তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৫৮তম। এর পরের দুটি অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন ও পাকিস্তানের করাচি। প্রতিবেশী দেশ ভারতের দুটি শহর দিল্লি ও মুম্বাই রয়েছে যথাক্রমে তালিকার ৪৩ ও ৪৫তম অবস্থানে।

তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ শহর হিসেবে এবারও শীর্ষস্থানটি জাপানের রাজধানী টোকিওর দখলেই রয়েছে। শহরটির মোট স্কোর ৮৯ দশমিক ৮০। তালিকার শীর্ষ তিনটি শহরের অবস্থান এশিয়ায়। টোকিও ছাড়া অন্য দুটি শহর হল- সিঙ্গাপুর সিটি ও ওসাকা। তবে তালিকার শীর্ষ দশে স্থান পায়নি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শহরই। প্রথম বিশে স্থান পেয়েছে সান ফ্রান্সিসকো।
ডিজিটাল নিরাপত্তায় ঢাকার স্কোর ৩৮ দশমিক ৩৩। আর অবস্থান ৫৮। এক্ষেত্রে শীর্ষ শহর টোকিওর স্কোর ৮৮ দশমিক ৪০। এ তালিকায় ঢাকার পরের দুটি শহর হল- ম্যানিলা ও জাকার্তা। ডিজিটাল নিরাপত্তায় দিল্লি ও মুম্বাই আগের বছরের তুলনায় যথাক্রমে ১৬ ও ২৪ ধাপ পিছিয়েছে।

নগরবাসীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ৪৫ দশমিক ৫৯ স্কোর নিয়ে তালিকায় ৫৯তম স্থান পেয়েছে ঢাকা। এর চেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে শুধু করাচি। শহরটির স্কোর ৩৯ দশমিক ৯২। স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে শীর্ষ শহর জাপানের ওসাকা। ৮৭ দশমিক ১৫ স্কোর নিয়ে এ তালিকার শীর্ষ স্থানটি দখলে নিয়েছে শহরটি। আর এক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে টোকিও।
অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি মোকাবেলাসহ অবকাঠামোর অন্যান্য নিরাপত্তা বিবেচনায় তালিকার শীর্ষ শহর সিঙ্গাপুর সিটি। এ শহরের স্কোর ৯৭ দশমিক শূন্য ৫। নিরাপত্তার এ চার ধরনের মানদণ্ডের মধ্যে ঢাকার অবস্থান সবচেয়ে দুর্বল অবকাঠামোর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে। ৬০টি শহরের মধ্যে এ মানদণ্ডে ঢাকা ৬০তম অবস্থানে রয়েছে। আর এক্ষেত্রে ঢাকার স্কোর ৩৮ দশমিক ৪২।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টিও এ সূচক তৈরিতে বিবেচনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে শীর্ষ পাঁচটি শহরই এশিয়ার, যার মধ্যে দুটি জাপানের। এগুলো হল- সিঙ্গাপুর সিটি, ওসাকা, টোকিও, তাইপে ও হংকং। সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ও মাত্রা বিবেচনায় পাঁচটি শহরের মধ্যে স্থান পেয়েছে ঢাকা।
এবারের তালিকায় ঢাকা ছাড়াও নতুন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এথেন্স, বোগোটা, কায়রো, কারাকাস, ক্যাসাব্লাংকা, ডালাস, জেদ্দা, করাচি, কুয়ালালামপুর, ম্যানিলা, কিটো, ওয়েলিংটন ও ইয়াঙ্গুন। আর বাদ পড়েছে গুয়াংঝু, মন্ট্রিয়ল, শেনঝেন ও তিয়ানজিন।

https://www.jugantor.com/last-page/2017/10/19/164565