১৯ অক্টোবর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১:১০

আত্মঘাতী ব্লু হোয়েল ফ্রাঙ্কেনস্টাইনে রূপ নিচ্ছে

মেরি শেলির একটি উপন্যাসের নাম ফ্রাঙ্কেনস্টাইন। উপন্যাসের মূল চরিত্র ভিক্টর ফ্রাঙ্কেনস্টাইন একজন তরুণ বিজ্ঞানী। তিনি একজন মানুষ বানিয়ে তাতে প্রাণসঞ্চার করেন। তার বানানো মানুষটি দেখতে ও কাজের দিক দিয়ে ছিল উদ্ভট, অদ্ভুত। মানবটি ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে এক ভয়ঙ্কর দৈত্য। একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বানানো এ মানব। দৈত্যটি ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের কাছে তার জন্য একজন সঙ্গিনী সৃষ্টিসহ নানা ধরনের আবদার করতে থাকে, যা পূরণ করা সঠিক মনে করেননি ফ্রাঙ্কেনস্টাইন। ফলে তাকে সৃষ্টির জন্য দৈত্যটি তার প্রভু ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের ওপর প্রতিশোধ নিতে উদ্যত হয়। নিয়ন্ত্রণহীন এ দৈত্যমানব একে একে হত্যা করতে থাকে ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের ভাই, পিতা, স্ত্রীসহ পরিবারের সব সদস্যকে। এমনকি তার পরিচিত বন্ধুদেরও সে হত্যা করতে থাকে। একপর্যায়ে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন সিদ্ধান্ত নিলো সে তার সৃষ্ট এ মানব, যা দৈত্যে রূপ নিয়েছে তা ধ্বংস করে ফেলবেন। সে উদ্দেশ্যে একদিন তাকে নিয়ে রওনা হন বরফাচ্ছাদিত আর্কটিক অঞ্চলের দিকে; কিন্তু নিজের সৃষ্ট দৈত্য মানব ধ্বংস করার আগেই বরফের স্রোতে পড়ে অসুস্থ হয়ে মারা যান ফ্রাঙ্কেনস্টাইন। এরপর প্রভুর মৃত্যুর খবরে শোকাহত হয়ে আত্মহত্যা করে দৈত্যটি।
ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের সৃষ্ট এ মানুষ যা দৈত্যে রূপ নেয় সেটাই ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বা ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দৈত্য নামে ব্যাপক পরিচিতি পায় মানবসমাজে। ১৮১৮ সালে প্রকাশিত উপন্যাসের এ চরিত্রটি আজো তুলনা করা হয় আত্মঘাতী কোনো কিছুর সাথে তুলনা করার জন্য।
অপব্যবহারের কারণে তথ্যপ্রযুক্তি ফ্রাঙ্কেনস্টাইন দৈত্যে রূপ নিতে যাচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ব্লু হোয়েল নামের আত্মঘাতী গেমের কারণে এ প্রশ্ন জোরাল হচ্ছে। মানুষ সৃষ্ট প্রযুক্তি বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির জালে মানুষ নিজেই যেন ক্রমে বন্দী হয়ে যাচ্ছে। নিজের সৃষ্ট প্রযুক্তির কাছে মানুষ নিজেই যেন আজ অসহায়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষ অসহায় শিকার হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি যেন গিলে খেতে উদ্যত হয়েছে মানুষকে। ইতোমধ্যে এ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছে নানা ধরনের বিকৃতি, অনাচার, বিশৃঙ্খলা আর নৈরাজ্য। অকল্পনীয় সব বীভৎসতার প্রকাশ ঘটছে একের পর এক। অভাবনীয় এসব বিকৃতির পেছনে যেমন রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাব তেমনি তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরে বেরিয়ে পড়ছে মানবতার ভয়ঙ্কর পচন আর তার কুৎসিত রূপ।
৯০ দশকের মাঝামাঝি যখন কম্পিউটার নগরীর বিভিন্ন বাসার বেডরুমে প্রবেশ শুরু করে তখন ইন্টারনেট এত সহজলভ্য ছিল না। বিভিন্ন গলির মাঝে ভিডিও দোকান থেকে সিডি ভাড়া নিয়ে, কিনে তরুণ যুবকেরা কম্পিউটারে দেখত। তখন থেকেই অভিযোগ আসা শুরু হয় বাবা-মায়ের পক্ষ থেকেÑ ছেলে রুম বন্ধ করে রাত জেগে কম্পিউটারে কী সব খারাপ জিনিস দেখছে। ঘুম থেকে ওঠে দুপুরে। তথ্যপ্রযুক্তি ঘিরে সন্তান নিয়ে মা-বাবার সেই যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা আর সন্তান উচ্ছন্নে যাওয়ার পালা শুরু হয়েছে তা আজ সত্যি সত্যিই ফ্রাঙ্কেটনস্টাইনের দৈত্য আকারে যেন আমাদের সবাইকে গিলে খেতে উদ্যত হয়েছে।
আজ ব্লু হোয়েল গেম নিয়ে অনেক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে; কিন্তু ব্লু হোয়েলের চেয়েও মারাত্মক আত্মঘাতী আর বিনাশী কাজ অনেক আগেই সম্পন্ন হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরে। আজ যারা ব্লু হোয়েল গেমের মাধ্যমে আত্মঘাতী হচ্ছে তাদের অনেকেই মূলত আগেই নিজেদের শেষ করে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে। তাদের সে নষ্ট জীবনের এখন চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটছে ব্লূ হোয়েল নামের এ আত্মঘাতী গেমের মাধ্যমে। সে দিক থেকে বলা যায় সমাজের পচনের মাত্রা মাপার একটি মাপকাঠি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এ গেম। এ গেম বলে দিচ্ছে আমরা কতটা নষ্ট আর আমাদের পচন কত গভীরতায় পৌঁছেছে।
কম্পিউটার মোবাইল আর ইন্টারনেটের অপব্যবহার নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে অনবরত সমাজের যেসব ভয়ঙ্কর বিকৃতি, অনাচার আর নষ্ট জীবনের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে তারই যেন চূড়ান্ত রূপ প্রকাশ করতে হাজির হয়েছে ব্লু হোয়েল গেম। আত্মঘাতী শুধু ব্লু হোয়েল গেম নয়; অনেক ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ অনেক আগেই আত্মঘাতীতে পরিণত হয়েছে। পঞ্চম, অষ্টম শ্রেণীতে বৃত্তি পাওয়া ১৮ বছরের যুবক যখন ফেসবুকের মাধ্যমে ৩৮ বছরের তালাকপ্রাপ্তা নারীর সাথে সম্পর্কে জড়ায় এবং তার অশ্লীল ভিডিও আপলোড করে তাকে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগে জেলে যায় তখন কি সে আত্মঘাতী হয়নি? ধরা পড়ার পর গাইবান্ধার ইমরান সরকার নামের এ তরুণ পুলিশের পা ধরে বলেছে, তার জীবনটা যেন নষ্ট করে না দেয়া হয়। সে আরেকটিবার সুযোগ চায়। বস্তুত ইমরান সরকারের মতো হাজারো তরুণ-তরুণী অবাধ তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার আর মা-বাবার অসচেতনতার কারণে অনেক আগেই আত্মঘাতী হয়েছে, লাশে পরিণত হয়েছে। এখন তার দুর্গন্ধ বের হতে শুরু হয়েছে মাত্র। অষ্টম শ্রেণীতে বৃত্তি পাওয়া ছাত্রী মোবাইল প্রেমের সূত্রে হাত ধরে পালায় কাঠমিস্ত্রির সাথে, মোবাইল প্রেমের সূত্রে মাদকাসক্তের সাথে পালিয়ে বিয়ে করে শেষ পর্যন্ত পতিতাবৃত্তির জীবন বেছে নিতে হয়েছে মেধাবী স্কুলছাত্রীকে, মোবাইল প্রেমের শিকার হয়ে মেডিক্যাল ছাত্রী খুন হয়েছে মাদকাসক্ত প্রেমিকের হাতে, একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী পরকীয়ায় জড়িয়ে খুন করল প্রেমিকার গার্মেন্ট ব্যবসায়ী স্বামীকে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের লাশ উদ্ধার পতিতাপল্লী থেকে, খুনের পর জানা গেল লিভ টুগেদার করত বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া তরুণ-তরুণী, হোটেল থেকে উদ্ধার হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া যুবক-যুবতীর লাশ, ইন্টারনেটে অশ্লীল ছবি প্রকাশের কারণে আত্মহত্যা, অশ্লীল ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ; সমাজ বিকৃতির এ ধরনের অসংখ্য হেডলাইন দেখেছে জাতি কয়েক বছর ধরে অনবরত। আর আড়ালে রয়ে গেছে যে কত বিকৃতির ছবি তার কোনো হদিস নেই।
ঘরে ঘরে কম্পিউটার প্রবেশের আগে ডিশ টিভি নিয়েও অনেক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছিল; কিন্তু যে অবিশ্বাস্য দ্রুততায় তথ্যপ্রযুক্তি এগিয়ে চলছে তাতে কম্পিউটারের মতো অমিত ক্ষমতাধর যন্ত্রও আজ সেকেলে হয়ে যাচ্ছে মোবাইলের কাছে। ফলে টিভির খারাপ দিক এখন আর যেন কোনো আলোচনারই বিষয় নয়। যদিও দর্শক টানার জন্য পাল্লা দিয়ে দেশী-বিদেশী টিভিতেও এখন চলছে নানা ধরনের অনুষ্ঠান, যা ব্যক্তি পরিবার ও সমাজে রেখে যাচ্ছে নানা ধরনের নেতিবাচক প্রভাব। শুধু কি টিভি? বাদ যাচ্ছে না এখন বেতারও। ফেসবুকে একজন লিখেছেন মধ্যরাতে বিভিন্ন এফএম রেডিওতে যেসব অশ্লীল কথাবার্তা আর গল্প প্রচার করে তরুণদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে তা কোনো অংশে কম ধ্বংসাত্মক নয় ব্লু হোয়েল গেমের তুলনায়।
কিন্তু তারপরও টিভি রেডিও আর অশ্লীল সিনেমার কুপ্রভাব নিয়ে এখন যেন কোনো আলোচনাই নেই। কারণ কম্পিউটার আর মোবাইলনির্ভর বিভিন্ন ধরনের বিকৃতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, এসবের তুলনায় রেডিও টিভি আর সিনেমার অনৈতিকতা কোনো বিষয়ই নয়।

টিভি, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল, ইন্টারনেট একটির পর একটি মাধ্যম আবির্ভূত হচ্ছে তরুণ-তরুণীদের কাছে ধ্বংসাত্মক প্রভাব নিয়ে।
তথ্যপ্রযুক্তির কারণে প্রথমেই তরুণ-তরুণীরা যার শিকার হচ্ছে তা হলো চারিত্রিক স্খলন। সমাজে ঘটতে থাকা একের পর বীভৎসতায় অস্থির আজকের সমাজ। উঠতি তরুণ-তরুণীদের তথ্যপ্রযুক্তি থেকে একেবারে দূরে রাখাও সম্ভব হচ্ছে না আবার এসবের খারাপ দিক থেকেও তাদের ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। সবাই কমবেশি খারাপ প্রভাবের শিকার হচ্ছে। অবিশ্বাস্য দ্রুততায় ছড়িয়ে পড়ছে মোবাইল প্রযুক্তির প্রায় সব সর্বশেষ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি। কোলের শিশু থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী এমনকি বয়স্করাও মুক্ত থাকতে পারছেন না এর নানা ধরনের খারাপ দিক থেকে।

তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে এবং এর বিভিন্ন খারাপ দিক ও প্রভাব নিয়ে কয়েক বছর ধরেই সারা দেশে অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বর্তমানে গেম খেলতে গিয়ে আত্মঘাতী হচ্ছে অনেকে; কিন্তু এর আগে সরাসরি এভাবে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা না ঘটলেও নষ্ট হয়েছে, বিপথে হারিয়ে গেছে অগণিত জীবন আর সম্ভাবনা।

তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমানে মানুষের জীবনের সাথে এমনভাবে জড়িয়ে গেছে, চাইলেও কেউ আর এ থেকে সহজে দূরে থাকতে পারছে না। আর এখানেই নিহিত রয়েছে এর বিপজ্জনক দিক। নেতিবাচক দিক থেকে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষার জন্য বাবা-মায়ের যে ধরনের সচেতনতার প্রয়োজন ছিল তা সম্ভব হয়নি বলে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। না বুঝেই ছোট সন্তানের প্রতি ভালোবাসার টানে অনেকে তুলে দিয়েছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মোবাইলসহ নানা ধরনের তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যম। তার এটা আদৌ কোনো প্রয়োজন আছে কি না, সে বিবেচনা করেননি তারা। ফলে সন্তানের বিপথগামিতা যখন ধরা পড়ছে বাবা-মা ও সমাজের চোখে তখন তারা জিম্মি সন্তানের কাছে। মোবাইল কেড়ে নেয়া হলে কেউ বন্ধ করে দিচ্ছে নাওয়া-খাওয়া, কেউ বন্ধ করে দিচ্ছে পড়াশোনা ও স্কুল-কলেজে যাওয়া। কেউ কেউ আত্মহত্যা করার হুমকি দিচ্ছে মা-বাবাকে। এভাবে অনেক মা-বাবা জিম্মি হয়ে পড়েছেন সন্তানের কাছে। চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে প্রিয় সন্তানটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু তারপরও তার হাত থেকে মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ কেড়ে নিতে সাহস করছেন না অনেক মা-বাবা। এ ধরনের ঘটনার নজির এখন ঘরে ঘরে। স্কুল-কলেজ পড়–য়া অগণিত সন্তান বর্তমানে দিনরাত পড়ে আছে মোবাইল, ল্যাপটপ নিয়ে। বাস্তব জীবনের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই এদের অনেকের। অনেকে পরিণত হচ্ছে একধরনের প্রতিবন্ধীতে।

সর্বশেষ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ব্লু হোয়েল নামের এক আত্মঘাতী গেম নিয়ে। ইতোমধ্যে দেড় শতাধিক তরুণ-তরুণীর আত্মাহুতির খবর বেরিয়েছে বিশ্বে ব্লু হোয়েল গেমের কারণে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে বলে মনে করেন অনেকে। কারণ গেমটির চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছার আগেও অনেকে মারা পড়ে, যা হয়তো বুø হোয়েল গেমের কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়নি। শুধু চূড়ান্ত স্তরে গিয়ে যারা আত্মহত্যা করে তারা চিঠি লিখে রেখে যায় যে, সে এ গেমের একজন বিজয়ী। আর তখনই শনাক্ত হয় সে ব্লু হোয়েল গেম খেলে আত্মহত্যা করেছে; কিন্তু ৫০তম ধাপে পৌঁছার আগেও তাদের এমন সব কাজ দেয়া হয়, যা করতে গিয়ে অনেকে মারা যায় যা সাধারণত দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু হিসেবে চিহ্নিত হয়।
তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার এবং তরুণসমাজের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব বিষয়ে অনেক আগে থেকেই সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী এবং সমাজ বিশ্লেষকেরা সতর্কবাণী উচ্চারণ করে আসছেন। একের পর এক সমাজ বিকৃতির ভয়াবহ চিত্র প্রকাশের পর প্রতিবার তারা বলেছেন সামনে আরো ভয়ঙ্কর কিছু অপেক্ষা করছে যদি আমরা এখনই সতর্ক না হই। রাতারাতি সন্তানদের অবাধ তথ্যযুক্তির মধ্যে ছেড়ে দেয়া কতটা সঠিক হচ্ছে, এর কতটা তাদের প্রয়োজন সে বিষয়ে অনেকেই বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তাদের মতে শুধু তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরেই যে তরুণযুবসমাজ বিপথে যাচ্ছে তা নয়। বরং সার্বিকভাবে সমাজ, রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা, সীমাহীন লুটপাট, ক্ষমতার অপব্যবহার, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম, দমন-পীড়ন, মাদকের সয়লাব এসবেরও প্রভাব রয়েছে আজকের বিকৃতির যে চেহারা উন্মোচিত হচ্ছে তার পেছনে।
বিশেষজ্ঞদের মতে বিকৃতির হাত থেকে রক্ষায় রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা রয়েছেন, তাদের যেমন করণীয় রয়েছে তেমনি করণীয় রয়েছে মা-বাবার তাদের সন্তানদের প্রতি।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/261144