১৮ অক্টোবর ২০১৭, বুধবার, ১০:৫৬

বাখরাবাদে ৩শ’ কিমি. অবৈধ পাইপলাইন

মাসে লোপাট ১০ কোটি টাকার গ্যাস * জড়িত অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদার চক্র * অপসারণের কাজ শুরু
কুমিল্লার বাখরাবাদ এলাকায় ৩শ’ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস পাইপলাইন রয়েছে। আর এসব লাইন থেকে প্রতি মাসে চুরি হচ্ছে ১০ কোটি টাকার গ্যাস। একশ্রেণীর অসাধু গ্রাহক বাখরাবাদের নিজস্ব পাইপ নেটওয়ার্ক থেকে বিপুল পরিমাণ গ্যাস চুরি করে ব্যবহার করছে। এর সঙ্গে কোম্পানির কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং ঠিকাদার জড়িত বলে জানা গেছে। সম্প্রতি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশে অবৈধ লাইন অপসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০ কিমি. অবৈধ গ্যাসলাইন অপসারণ করা হয়েছে। সোমবার চৌদ্দগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০ কিমি. অবৈধ গ্যাস লাইন অপসারণ ও ২ হাজার গ্রাহকের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

জানা যায়, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (বিজিডিসিএল) নিজস্ব পাইপ লাইন থেকে কুমিল্লা-ফেনী-নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রামে এবং হাট-বাজারে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে। প্রভাবশালী কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে কোম্পানির নিজস্ব পাইপ নেটওয়ার্ক থেকে প্রায় ৩শ’ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাজার হাজার গ্রাহককে অবৈধ এ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। বিনিময়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এভাবেই বছরের পর বছর বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট মিলে রাষ্ট্রীয় এ কোম্পানিটির রাজস্ব এবং সম্পদ অবৈধভাবে লটেপুটে খাচ্ছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

সূত্র জানায়, গত বছরের জুলাই মাসে প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম খান বাখরাবাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল। শুরু হয় একে একে অভিযান। তিনি কয়েকজন জিএম, ডিজিএমসহ বেশ কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে শাস্তিমূলক বদলি এবং সাসপেন্ড করেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই প্রতিমাসে বাখরাবাদের ৭-৮ কোটি টাকা রাজস্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশে অবৈধ লাইন অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে।

বিজিডিসিএল সূত্র জানায়, সোমবার কুমিল্লা জেলার কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় চৌদ্দগ্রামের চিওড়ার কান্দিরপাড় সাতবাড়িয়া, নোয়াগাঁও গ্রামের ১০ কিমি. এলাকার ২ হাজার অবৈধ গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপন চন্দ্র দেবনাথ, পুলিশ, র্যা ব, আনসারসহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে বাখরাবাদের ডিজিএম (ভিজিলেন্স) প্রকৌশলী মো. রবিউল হক বলেন, বাখরাবাদের আওতাধীন তিন শতাধিক কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস লাইন রয়েছে; যার গ্রাহক সংখ্যা ২০ হাজার। অবৈধ এই পাইপ লাইন দিয়ে প্রতিমাসে ১০ কোটি টাকার গ্যাস চুরি হচ্ছে। তিনশ’ কিলোমিটারের মধ্যে এ পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার লাইন অপসারণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট অবৈধ লাইন অপসারণ ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

https://www.jugantor.com/last-page/2017/10/18/164291