১৫ অক্টোবর ২০১৭, রবিবার, ১২:০৭

সবজির বাজারে আগুন

দেশ বিদেশ

হু হু করে বাড়ছে সবজির দাম। শুধু তাই নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের মূল্যও চলে যাচ্ছে সাধারণের নাগালের বাইরে। চাল, পিয়াজ, আদা, শিমসহ সব ধরনের শাকসবজির দাম অস্বাভাবিক মাত্রায় বেশি। এখন কাঁচাবাজারে কেজি দরে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় চালসহ কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমেছে। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ও ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যে এসব চিত্র পাওয়া গেছে। বিক্রেতারা জানান, ভারতে পিয়াজের দাম বেড়েছে। ফলে দেশের বাজারেও বেড়েছে। এছাড়া এবার সারা দেশে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে অনেক সবজি জমি নষ্ট হয়েছে। নতুন করে সবজি লাগানো হয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে বাজারে চাহিদামতো সবজির সরবরাহ হচ্ছে না।

বাজারে এক কেজি আমদানিকৃত পিয়াজ ৫০টাকা এবং দেশি পিয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে কেজিতে ১২ থেকে ১৫ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে। টিসিবি’র পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি করা দুই ধরনের পিয়াজের দামই বেড়েছে। টিসিবি’র তথ্যমতে, এক সপ্তাহ আগে আমদানি করা পিয়াজের কেজিপ্রতি দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে এই মানের পিয়াজের দর ৪৫ থেকে ৫২ টাকা। এ সময়ে দেশি পিয়াজের দাম ছিল ৪৫-৪৮ টাকা। বর্তমানে ৪৮-৫৫ টাকা। এদিকে গত কিছুদিন ধরেই রাজধানীর বাজারে সবজির দাম চড়া। বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে প্রতি কেজি বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শিম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কাকরোল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, আমদানিকৃত ভারতীয় টমেটো ১১০ থেকে ১২০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, পটল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, ঝিঙ্গা ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শাকসবজির দাম বেশি, কিন্তু চাষিরা খুশি নন, এমন খবরও পাওয়া যাচ্ছে। কারণ ভোক্তাদের কাছে যে দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে, চাষিরা পাচ্ছেন তার চেয়ে অনেক কম। মধ্যস্বত্বভোগীদের সিন্ডিকেট আর সবজি পরিবহনের বিভিন্ন স্তরে চাঁদাবাজির ফলে দাম মাত্রাতিরিক্ত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।

কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতা হাসান আলী বলেন, কয়েক মাস আগে যে বন্যা সারা দেশে হয়েছে তার প্রভাব এখন দেখা দিয়েছে। অনেক সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। নতুন করে সবজি লাগানো হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে সবজির বাজারে কোনো প্রভাব নেই। তবে শীত আসতে আসতে সবজির দাম কমতে শুরু করবে বলে জানান তিনি।
এদিকে দাম বেড়েছে আদার। টিসিবি’র হিসাবে, প্রতি কেজি আদায় ২০ টাকা বেড়ে আমদানিকৃত আদা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে রসুনের দাম কমেছে। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমে চীনা রসুন ৯০ টাকা ও দেশি রসুন ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি ১ থেকে ২ টাকা কমেছে। টিসিবি’র মূল্য তালিকায় দেখা গেছে, ভালো মানের মিনিকেট কেজিপ্রতি ৬৫-৬৮ টাকা, নরমাল মিনিকেট ৬০-৬৫ টাকা, ভালো মানের বিআর২৮ কেজিপ্রতি ৫৬-৫৮ টাকা, নরমাল বিআর২৮ ৫০-৫৬ টাকা, মোটা স্বর্ণা চাল ৪৫-৪৮ টাকা।
মাছের বাজারও চড়া। বিভিন্ন ধরনের মাছের মধ্যে প্রতি কেজি রুই, কাতলা ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা ও লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর গরুর মাংস ৫০০ টাকা ও খাসির মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=87563