১১ অক্টোবর ২০১৭, বুধবার, ১১:৩২

শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণদের কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ

১৩তম বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এলোপাতাড়ি লাঠিচার্জে দুই নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন : আঁখি আলম, মুন্নি আক্তার, রানা আহম্মেদ, তাপস সাহা, সোহাগ হোসেন, লাবিব হাসান প্রমুখ। ৩ জনকে আটক করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। এরা হলেন : সোহেল রানা, আবু বকর ও ইশতিয়াক। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ রাস্তার লাইট বন্ধ করে লাঠিচার্জ করে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক আরিফুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছিলাম। কিন্তু পুলিশ উসকানি ছাড়াই হামলা চালিয়েছে।’ তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে আঁখি আলম এবং মুন্নি আক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরে তারা লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পাশে এনটিআরসিএ ভবনের সামনে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পর তারা ভবনের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। এর ফলে মগবাজার, বাংলামোটর ও শাহবাগ এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভিভিআইপি এলাকার বাসিন্দারা বিপাকে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শী জয়নুল আবেদিন যুগান্তরকে জানান, আন্দোলনকারীরা সকাল ৯টার দিকে রাস্তার দুই পাশে (এক পাশে রমনা থানা অন্য পাশে ইস্কাটন গার্ডেন) দড়ি বেঁধে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে তারা বিভিন্ন দাবিসংবলিত প্লাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা ১১টার দিকে রমনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে রমনা থানার ওসি মঈনুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিয়ে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজহারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। কোনো সুরাহা না হওয়ায় আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা। এ বিষয়ে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজহার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।’

দুপুর ২টার দিকে রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে জড়ো হয়। পুলিশ একযোগে বাঁশি বাজাতে থাকে। আন্দোলনকারীরাও মিছিল শুরু করেন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ রাস্তার লাইট বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। একপর্যায়ে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। সেখানেও পুলিশ তাদের লাঠিচার্জ করে। পুলিশের লাঠিচার্জে আন্দোলনকারীরা ঢাবি ক্যাম্পাসের দিকে সরে যান। শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি রমনা থানা এলাকার। রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার যুগান্তরকে বলেন, ‘এটা কোনো আন্দোলনের জায়গা নয়। তারা সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। তাদের ৫ জনের একটি প্রতিনিধি দলকে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করানোর ব্যবস্থা করেছি। তারা সেখান থেকে না সরে সন্ধ্যায় প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গেট বন্ধ করে দেয়। এতে অনেকে ভবনের মধ্যে আটকা পড়েন। এ সময় ব্যাপকসংখ্যক পুলিশ দেখে তারা ভয়ে পালিয়ে যায়।’

আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক আরিফুর রহমান লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে যুগান্তরকে বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। শাহবাগ থানা পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। তাদেরকে মুক্ত করার চেষ্টা চলছে।’

https://www.jugantor.com/news/2017/10/11/162471/