৯ অক্টোবর ২০১৭, সোমবার, ২:১০

পাথরঘাটায় দুই সাংসদের ভুল-বোঝাবুঝি

উদ্বোধনের পরই বিচ্ছিন্ন ৮০ পরিবারের বিদ্যুৎ

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার মঠেরখাল ও ছোট টেংরা গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ উদ্বোধনের রাতেই আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুই সাংসদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির জেরে ১৩ দিন ধরে ভোগান্তিতে রয়েছে ওই দুই গ্রামের ৮০টি পরিবার। তবে আজ নতুন করে আবার উদ্বোধন করা হবে।

বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই বিদ্যুৎ-সংযোগ উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া চরদুয়ানী ও হোগলাপাশা গ্রামে আরও প্রায় ৩৫০ নতুন সংযোগ উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।
মঠেরখাল ও ছোট টেংরা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাবির হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে শওকত হাচানুর ওই বিদ্যুৎ-সংযোগ উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে মঠেরখাল গ্রামে এক সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ উদ্বোধনের পর ওই রাতেই সংরক্ষিত নারী সাংসদ নাছিমা ফেরদৌসীর নির্দেশে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তাঁরা স্তম্ভিত। কত অপেক্ষার পর তাঁদের বাড়িগুলোয় বিদ্যুতের আলো জ্বলেছিল। এতে তাঁরা দারুণ খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু রাতেই সে আলো কেড়ে নেওয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুই গ্রামের অন্তত ১০ জন বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নাছিমা ফেরদৌসীর নাতি পরিচয়ে স্থানীয় সোহাগ হাওলাদার বিদ্যুৎ-সংযোগ উদ্বোধনের জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। ওই টাকা না দেওয়ায় উদ্বোধনের পরও আবারও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এর আগে সোহাগ ৮০টি পরিবারের কাছ থেকে সংযোগ দেওয়ার নামে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

সোহাগ হাওলাদার বলেন, ‘সংযোগের নামে দেড় লাখ টাকা নেওয়া এবং উদ্বোধনের জন্য ৫০ হাজার টাকা দাবির ঘটনা আমিও শুনেছি। তবে এসব মিথ্যা প্রচার। সোমবার ওই সংযোগ আবারও উদ্বোধন করা হবে। সেই সভায় জনগণের টাকা আমি নিয়েছি, না জনগণের পেছনে টাকা খরচ করেছি, তার প্রমাণ দেব।’
পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী শংকর কুমার কর বলেন, শওকত হাচানুর ওই সংযোগ উদ্বোধন করেছেন, এ বিষয়ে তাঁরা অবগত ছিলেন না। তবে এটি নিছক ভুল-বোঝাবুঝি। আজ সোমবার ওই সংযোগসহ চরদুয়ানী ও হোগলাপাশার নতুন সংযোগও উদ্বোধন করবেন নাছিমা ফেরদৌসী।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাছিমা ফেরদৌসী বলেন, ‘সংযোগটি আমার দেওয়া। এটি সম্পন্ন হওয়ার আগেই উনি (শওকত হাচানুর) কোন মানসিকতায় উদ্বোধন করলেন, তা আমার বোধগম্য নয়।’
শওকত হাচানুর রহমান বলেন, ‘মঠেরখাল ও ছোট টেংরা গ্রামের মানুষের দাবির কারণে বিদ্যুৎ-সংযোগ উদ্বোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে ওই সংযোগে নারী সাংসদের চাহিদাপত্র (ডিও লেটার) ছিল, তা আমার জানা ছিল না।’

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1340101/