৮ অক্টোবর ২০১৭, রবিবার, ১০:৫৮

চালের দাম আর কমেনি কাঁচামরিচের বাজারে আগুন

রাজধানীর বাজারগুলোতে বাড়তে থাকা সব ধরনের চালের কেজি ৫ থেকে ৬ টাকা কমেছে। বর্তমানে চালের দাম স্থির। অন্যদিকে চালের দামের অস্বস্তি না কাটতেই লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচামরিচসহ সব ধরনের সবজির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের কেজিতে বেড়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। বিক্রেতারা বিভিন্ন অজুহাত দিলেও বাড়তি দামের কারণে দিশাহারা নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি কাঁচা মরিচের সরবরাহ একেবারেই
কম থাকা ও ভারত থেকে আমদানি কয়েকদিন বন্ধ থাকায় দাম এত বেড়ে গেছে। এ ছাড়া জেলার হাট-বাজারেও দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে কাঁচা মরিচের দাম। তারা জানান, দেশের চাহিদা মূলত দেশি কাঁচা মরিচই পূরণ করে। তবে চাহিদা বেশি হলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি হয়। এ ছাড়া বন্যায় মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এই বাড়তি দাম নিয়ে অযুহাতের শেষ নেই বিক্রেতাদের। সরবরাহ ঘাটতিকে দায়ী করছেন তারা। তবে সরবরাহ ঘাটতির পক্ষে যৌক্তিক কোনো ব্যাখ্যা নেই তাদের।
জানা গেছে, কোরবানি ঈদের পর থেকে কাঁচা মরিচের ঝাঁজ বাড়ছেই। চালের দাম নিয়ে অস্বস্তি কাটতে না কাটতেই এবার বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচের কেজি প্রতি মূল্য এখন ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। অর্থাৎ কেজিপ্রতি বেড়েছে ১৩০-১৪০ টাকা। এছাড়া সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।

হাতিরপুল কাঁচা বাজারে এসেছিলেন আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম পুরো সপ্তাহের জন্য ১ কেজি কাঁচা মরিচ নিয়ে যাবো। এখন দেখি গত সপ্তাহের আড়াই কেজি মরিচের যে দাম ছিল; এখন ১ কেজি কাঁচা মরিচের সেই দাম। তাই ৫০০ গ্রাম কিনেছি। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে চালের দাম আকাশচুম্বি; এখন আবার কাঁচা মরিচের দাম। এককথায় সবকিছুরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু আমাদের তো আয়ের মাত্রা নির্দিষ্ট; দাম বাড়লে আমাদের তো আর আয় বাড়ে না।
বিক্রেতা খালেক জানান, কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রিও কমেছে। এখন ২৫০ গ্রাম মরিচ ৬৫ টাকার (কেজি ২৬০ টাকা) নিচে বিক্রি করলে লোকসান দিতে হবে। পাইকারি বাজার থেকে ৫ কেজি মরিচ ১ হাজার ১০০ টাকায় কিনেছি। এরপর যাতায়াত ভাড়া তো আছেই।

কাঁচাবাজারে বেগুন ২০ টাকা বেড়ে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা; সাদা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা দরে। এছাড়া শিম ১০০ টাকা; হাইব্রিড টমেটো ১২০ টাকা; শসা ৭০ টাকা; চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা; কচুর লতি ৭০ টাকা; পটল ৬০ টাকা; ঢেঁড়স ৭০ টাকা; ঝিঙা ৭০ টাকা; চিচিঙ্গা ৭০ টাকা; করলা ৬৫ টাকা; কাঁকরোল ৫৫ টাকা; পেঁপে ৪০-৫০ টাকা; কচুরমুখী ৬০-৬৫ টাকা; আমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ফুলকপি ৩৫ টাকা; বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা; পালংশাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা; লালশাক ২০ টাকা; পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রুই মাছ ২৮০-৪০০ টাকা, সরপুঁটি ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০-৩০০ টাকা, চাষের কৈ ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙাস প্রতি কেজি ১২০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, ৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশ ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ইলিশ ধরা বন্ধের সুযোগে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছেন মাছের দামও। ভালো কোনো মাছ কিনতে গেলেই গুনতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭০০ থেকে হাজার টাকা।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=86269