৮ অক্টোবর ২০১৭, রবিবার, ১০:৪৪

শাকের কেজি ২০০ কাঁচা মরিচ ২৪০

প্রতি আঁটি লাল শাকের ওজন ১৫০ গ্রামের বেশি হয় না। দাম ৩০ টাকা। একই অবস্থা ডাঁটা শাক, পালং শাক এবং মুলা শাকের ক্ষেত্রে। অর্থাৎ কেজি হিসেবে প্রতি কেজি শাকের দাম পড়ছে ২০০ টাকা। লাউ শাক বিক্রি হচ্ছে প্রতি আঁটি ৪০ টাকা। এক আঁটিতে থাকছে মাত্র তিনটি করে ডাটা। ওজন ২০০ গ্রামের বেশি নয়। আর কলমি শাকের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে কলমি শাক। ২০০ গ্রামের দাম ১৫ টাকা। অর্থাৎ সবচেয়ে কম দামি শাকের কেজিও পড়ছে ৭৫ টাকা। তিনজনের পরিবারে কেবল শাক কিনতেই চলে যাচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।

কেবল শাক নয়, সবজির অবস্থা আরো ভয়াবহ। দুর্ভিক্ষের সময়ে যে কচু খেয়ে মানুষ বেঁচে থাকে সে কচুমুখির কেজিও বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। একটু দামি সবজি হিসেবে পরিচিত শিমের কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৬০। বরবটি, বেগুন, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, করলা বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে। পটোল, ঢেঁড়শ, কাকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। কম দামি সবজি বলতে আছে কেবল আলু আর পেঁপে। প্রতি কেজি আলু ২০ এবং পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।

তবে সবচেয়ে শীর্ষ আলোচনায় রয়েছে কাঁচামরিচ। ১০০ গ্রামের দাম ৩০ টাকা। ২৫০ গ্রাম কিনলে ৬০ টাকা। কেজি হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে ২০০ টাকায়। গত এক সপ্তাহ ধরে কাঁচা লঙ্কার এ ঝাঁঝে পুড়ছে সাধারণের পকেট। এক হালি লেবুর দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা কলাও। বাজারের এ উত্তাপে সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। বিশেষ করে গরিব, শ্রমজীবী এবং স্বল্প আয়ের মানুষের দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে। আর মধ্যবিত্ত ও নি¤œ মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো রীতিমতো রক্তক্ষরণ চলছে। তারা কাউকে বলতেও পারছেন না, সহ্য করতেও পারছেন না।

মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, নিষিদ্ধ থাকায় বাজারে ইলিশ নেই বললেই চলে। তবে চাষের, নদীর এবং সামুদ্রিক মাছের ছড়াছড়ি। ইলিশ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ থাকার অযুহাতে দাম বেড়েছে বেশির ভাগ মাছের। এক কেজি গুঁড়া চিংড়ির দাম ৫৬০ টাকা। মাঝারি আকারের চিংড়ির কেজি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। গুইলশা মাছের কেজি হাঁকা হচ্ছে ৭০০ টাকা। রূপচাঁদা, বাইম, বেলে, পাবদা, কোরাল প্রভৃতি তো কেবলই বড়দের খাবার। চাষের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। কমের মধ্যে পাঙ্গাশের কেজি ১৪০ থেকে ১৬০, মৃগেল ১৫০ থেকে ১৮০, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ এবং চাষের কৈ পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিদরে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারে দেশী পেঁয়াজ গতকাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, মওসুমের শেষের দিকে এসে মজুদদারদের মজুদ ফুরিয়ে আসায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। তবে রসুনের দাম গতকাল কিছুটা কমেছে বলে জানান বিক্রেতারা। খুচরা বাজারে গতকাল দেশী রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা এবং ভারতীয় রসুন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকাদরে।

চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়ার কারণে পাইকারিতে সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকা কমলেও খুচরায় এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। খুচরা বিক্রেতারা এখনো মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ এবং সরু চাল ৬২ থেকে ৬৮ টাকা কেজিদরে বিক্রি করছেন। এ ছাড়া মসুর ডালের কেজি ১০৫ থেকে ১৪০, পাঁচ লিটার তেলের বোতল ৫২০ থেকে ৫৪০, চিনি ৫৬ থেকে ৬০, আটা ৩৫ থেকে ৩৬, ফার্মের মুরগি ১৪০ থেকে ১৬০, গরুর গোশত ৫০০ থেকে ৫২০, খাসির গোশত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করতে দেখা যায়।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/257718