পরিত্যক্ত মুক্তারপুর ফেরিঘাটে এভাবেই ফেরি, জেটি, ইঞ্জিন, পন্টুন পড়ে আছে
৫ অক্টোবর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ১০:০৭

সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবহার না থাকায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার ফেরি

মুক্তারপুর ফেরিঘাট এখন ইতিহাস। ধলেশ্বরী নদীর বুক চিরে গড়ে উঠেছে বিশাল সেতু। ৯ বছর ফেরি চলাচল না থাকায় সে সময়ের ব্যবহৃত ফেরি, জেটি, ইঞ্জিন, পন্টুনগুলো পড়ে আছে অযতœ-অবহেলায়। নদীর স্রোতধারা আগের চেয়ে এখন অনেক সঙ্কীর্ণ। ছোট ছোট ফেরির বেশির ভাগই আজ নদীতীরের কাদামাটিতে বিনষ্ট হচ্ছে। এই মূল্যবান সরকারি সম্পদ রণাবেণ করে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার যেন কেউ নেই!

জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগ জানায়, নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ শহর যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার্থে ফেরি পারাপারের পরিবর্তে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশন (সিআরবিসি) চীনের তত্ত্বাবধানে দুই শ’ আট কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ষষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী ‘মুক্তারপুর’ সেতু।

সেতুটি তৈরি করতে বাংলাদেশের মোট ব্যয় হয় ৭৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সেতুটি ১৫১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্থ নিয়ে মুক্তারপুর ধলেশ^রী নদীর ওপর নির্মিত হয়। ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে এই সেতুর উদ্বোধন করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুউদ্দীন আহম্মেদ।

সেতুটি উদ্বোধন করার পর থেকে মুক্তারপুর টু চর মুক্তারপুর ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সে সময়ের ব্যবহৃত ফেরি, জেটি, ইঞ্জিন, পন্টুনগুলো অবহেলায়-অযতেœ পড়ে আছে এ ঘাটে। দীর্ঘ ৯ বছরেও এই মূল্যবান সরকারি সম্পদ রণাবেণ করে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারেনি সড়ক ও জনপদ বিভাগ কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিন দেখা যায়, ফেরিগুলো চরমুক্তারপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ফেরিঘাট এলাকায় সেতুর নিচে বিভিন্ন স্থানে অবহেলা ও অযতেœ পড়ে আছে সে সময়ের ব্যবহৃত জেটি, ইঞ্জিন, পন্টুনসহ ১০টি ফেরি। এর মধ্যে পাঁচটি ফেরি আর বাকি পাঁচটি জেটি, পন্টুন এবং ইঞ্জিন রয়েছে। এ ছাড়াও পানির নিচে ডুবে আছে আরো তিনটি ফেরি। ফেরির নিচের অংশে মরিচা পড়েছে। কতগুলো আবার কাদার নিচে নিমজ্জিত হয়ে আছে। পন্টুন তিনটির কোনো কোনো অংশ কেউ খুলে নিয়ে গেছে। যা পড়ে আছে তা অবহেলায় পড়ে আছে পানির নিচে।

ফেরি চলাকালীন কর্মরত মো: তুহিন সরকার বলেন, মুক্তারপুর সেতু হওয়ার পর থেকে তৎকালীন সময়ে পাঁচটি ফেরি ছিল। ৯ বছর ফেরি চলাচল না থাকায় সে সময়ের ব্যবহৃত ফেরি, পন্টুন, জেটি এবং ইঞ্জিন অবহেলায় ও অযতেœ পড়ে আছে। যা দেখার মতো কেউ নেই। এ ছাড়াও এখানে যে ফেরিগুলো পড়ে আছে এর সবগুলো কিন্তু মুক্তারপুরের ফেরি নয়। এগুলো বিভিন্ন জেলা থেকে এনে মুক্তারপুর সেতুর নিচে বিভিন্ন স্থানে রেখেছে ফেরি কর্তৃপক্ষ।

মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুনুর রশীদ বলেন, আমি যাওয়ার সময় দেখি ফেরিগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এতে আমাদের কিছু করার নেই। সড়ক ও জনপদের দু’টি বিভাগ আছে। একটি হচ্ছে সিভিল আর অন্যটি মেকানিক্যাল। এই মেকানিক্যালের অন্তর্ভুক্ত হলো যত ধরনের ফেরি পন্টুন, জেটি ও রোলার। এটা আমাদের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছি না।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/257224