যাত্রাবাড়ী-ধলপুরের বেশির ভাগ সড়কের চিত্রই এমন।
৩ অক্টোবর ২০১৭, মঙ্গলবার, ১০:১৬

ফুটপাতে দখলবাজি আর ময়লা আবর্জনার ভাগাড়

যত্রতত্র ময়লার স্তূপ আর তার থেকে সংগৃহীত ভাঙ্গারির দোকান হলো যাত্রাবাড়ী-ধলপুর এলাকার বড় দুঃখ। এ ছাড়া অল্প বৃষ্টিতেও রাস্তায় জলাবদ্ধতা ও যখন-তখন যানজটে এলাকাবাসীর ভোগান্তির অন্ত নেই।
সরেজমিন পরিদর্শন করে জনদুর্ভোগের এসব চিত্র জানা গেছে।

ধলপুর এলাকার প্রতিটি সড়কের অবস্থাই করুণ। অবৈধ দখল আর অব্যবস্থাপনার কারণে রাস্তায় চলাচল একরকম অসম্ভব হয়ে উঠেছে। সড়কের দুই পাশে রিকশা, ভ্যান, লেগুনা ও অটোরিকশার দীর্ঘ সারি। কোথাও রাখা ভাঙ্গারি দোকানের মালামাল। রয়েছে কাপড়, সবজি, মাছ, শরবত, জুতা, মোবাইল সরঞ্জাম, মোবাইল রিচার্জ, মৌসুমি ফলের অস্থায়ী টং দোকানও। আসবাব, ইলেকট্রনিক্সসহ বিভিন্ন বড় মার্কেট আর শোরুমের জিনিসপত্র রেখে ফুটপাত দখল করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আসাদুর রহমান জানান, এলাকায় নাগরিক সমস্যা প্রকট। বিশেষ করে যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ আর ময়লার কনটেইনার রাখায় রাস্তায় চলা বেশ মুশকিল।
প্রকট দুর্গন্ধ ও যানজটে তৈরি হয় অসহনীয় অবস্থা।

ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের উত্তর পাশ দিয়ে পূর্ব দিকে যে রাস্তাটি মানিকনগরের দিকে চলে গেছে, অল্প বৃষ্টি হলেই এর বেশির ভাগ অংশে পানি জমে যায়। অন্য সময় থাকে কাদা। এলাকার বাসিন্দা ইমদাদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এলাকায় কোনো জনপ্রতিনিধি আছে কি নেই, তা বোঝা যায় না। কারণ, দীর্ঘদিনের সমস্য হলো এ রাস্তার জলাবদ্ধতা। ১০ থেকে ১৫ মিনিট বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আর সব সময় কাদার কারণে চলাচল খুব কষ্টকর। অনেক সময় হাঁটাপথও রিকশায় যেতে হয়। জলাবদ্ধতার কারণে যানজট লেগেই থাকে। ’
যাত্রবাড়ী-ধলপুর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। ধলপুর বাজারের উত্তর পাশেই ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়। এর পাশেই ময়লা-আবর্জনা রাখার জন্য নির্ধারিত স্থান। ধলপুর বাজারের খাবার দোকানি আপেল মিয়া বলেন, ‘একদিকে এই এলাকার রাস্তা সরু। অন্যদিকে আবর্জনা রাখার স্থান। আবর্জনা বহনকারী ট্রাকগুলোর কারণে বাজারের সামনে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। ময়লার দুর্গন্ধে চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। ’ গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধলপুর বাজারের উত্তর পাশে ১৫টির বেশি অবর্জনা বহনকারী ট্রাক রাখা রয়েছে।

আবর্জনার স্তূপ থেকে সংগ্রহ করা ভাঙ্গারির দোকানের সংখ্যা এ এলাকায় বেশি। ধলপুর বাজারের সামনে অন্তত ১৫টি ভাঙ্গারির দোকান রয়েছে, যেগুলো অবৈধভাবে রাস্তা ও ফুটপাত দখল করেছে। ফলে রাস্তা হয়ে গেছে সংকুচিত। আবার ধলপুর বাজার থেকে একটু পূর্ব দিকে প্রায় শখানেক ভাঙ্গারির দোকান রয়েছে। ৫০০-এর বেশি পথশিশু এসব দোকানে ভাঙ্গারি সরবরাহ করে। এ কারণে ধলপুরকে ‘টোকাই’ এর এলাকা বলে অনেকেই নামকরণ করেছে বলে জানালেন এলাকার বাসিন্দা ও বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আহসান হাবীব।

এলাকার আরেক বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, দায়িত্বশীলদের অবহেলা, জনসচেতনতার অভাব আর কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনায় পুরো ধলপুর এলাকা পরিণত হয়েছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে। উত্কট গন্ধে ভারী হয়ে থাকছে আশপাশ। ধলপুরের মূল রাস্তা ও গলিপথে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ।
সায়েদাবাদের আগে গোপীবাগ থেকে ধলপুর হয়ে যাত্রাবাড়ী বাইপাস সড়কের কারণেও ওই এলাকায় যানজট সব সময় লেগে থাকে বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের।

 

http://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2017/10/03/549359