১ অক্টোবর ২০১৭, রবিবার, ১২:৩৫

চট্টগ্রামে ঘণ্টায় দু’বার লোডশেডিং

গেলে ২০-২৫ মিনিটেও আসে না, আসলে ৫-১০ মিনিট থাকে। এভাবে ঘণ্টায় দু’বার বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে চট্টগ্রামে। গত এক সপ্তাহ ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে চট্টগ্রাম মহানগরের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকায়। গতকাল সকাল থেকেও চলছে এভাবে বিদ্যুতের লোডশেডিং। ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস ও আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। নগরীর শপিং কমপ্লেক্সের কাপড় ব্যবসায়ী নুরুল আলম জানান, সকাল ৯টায় দোকান খুললে দেখা যায় বিদ্যুৎ নেই। আসলেও ৫-১০ মিনিট থাকে। গেলে ২০-২৫ মিনিটেও আসে না। ফলে ব্যবসা বাণিজ্য হচ্ছে না। গত একসপ্তাহ ধরে এ অবস্থা বিরাজ করায় মার্কেটের বেশিরভাগ দোকানদার দোকান বন্ধ রেখে পথে পথে ঘুরছে। একই কথা বলেছেন, চট্টগ্রামের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, অভিজাত নিউমার্কেট, চকবাজারের মতি টাওয়ার, গুলজার টাওয়ার, কাপড়ের পাইকারি বাজার টেরিবাজার, রেয়াজুদ্দিন বাজার, বহদ্দারহাটসহ বেশ কয়েকটি মার্কেট ও বাজারের ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের কারণে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে উঠেছে। শুধু তাই নয়, মূল্যবান বাতি, এয়ারকন্ডিশনও নষ্ট হচ্ছে। এতে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। শুধু ব্যবসায়ীরা নয়, আবাসিক এলাকার বাসিন্দারাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে। মুরাদপুরের চন্দ্রিমা আবাসিকের বাসিন্দা সিটি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা দিলরুবা খানম জানান, গত কয়েকদিন ধরে ভ্যাপসা গরম পড়ছে। এরমধ্যে গত একসপ্তাহ ধরে ঘণ্টায় দু’বার বিদ্যুতের লোডশেডিং করা হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে বাসা ও স্কুলে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। স্কুল ও বাসার পাখা, বাতি, ফ্রিজ ও টিভি নষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, রাত-দিন সমান তালে লোডশেডিং করা হচ্ছে চট্টগ্রামে। গরম যত বাড়ে লোডশেডিংও ততই বাড়ে। এমনকি দমকা-হাওয়া ও বজ্রপাতে বৃষ্টির মতো দুর্যোগের সময়ও বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে প্রায় সময় অন্ধকারে হাতড়াতে হয়। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের আগ্রাবাদ প্রধান কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী শ্যামল চন্দ্র সরকার মানবজমিনকে বলেন, চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ বিতরণ নির্ভর করে ঢাকা থেকে সরবরাহ করা বিদ্যুতের উপর। বিদ্যুৎ সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম হলে লোডশেডিং তো হবেই। এতে আমাদের করার কিছুই নেই। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়াও চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও ট্রান্সফরমার যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে বিদ্যুৎ বিতরণ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। অন্যথায় সঞ্চালন লাইন ও ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হতে পারে। এ দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুতের লোডশেডিং করা হয় কিছু কিছু এলাকায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রামে বিদ্যুতের দুটি সঞ্চালন লাইন রয়েছে। এরমধ্যে নগরীর আবাসিক এলাকাসহ বহু মার্কেট ও বাজারের সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ লোডশেডিং হয় বেশি। অপর একটি লাইনে বিদ্যুৎ লোডশেডিং কম হয়। তবে যে লাইনে লোডশেডিং হয় তা নগরের দুই তৃতীয়াংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় বলে জানান চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের একটি সূত্র। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিউবো চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার দাশ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ও ট্রান্সফরমার সংস্কার প্রকল্পের কাজ চলছে। তবে বৃষ্টিপাতের কারণে একটু ধীরগতিতে চলছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামের লোডশেডিং একেবারেই কমে যাবে।

 

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=85517