৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, শনিবার, ৯:০১

বৃষ্টিতে নাকাল রাজধানীবাসী

শরতের বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীবাসী। দুইদিনের থেমে থেমে বর্ষণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বৃহস্পতিবার রাতের জলজটের সঙ্গে যানজটে চরম ভোগান্তির একটি দিন পার করেছে রাজধানীবাসী। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ভোগান্তির মাত্রা কিছুটা কম ছিল। তবে বৃষ্টির কারণে দুর্গা পূজা উদযাপনে বিঘ্ন ঘটেছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির কারণে কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর পানির সামনে পড়তে হয় রাজধানীর বাসিন্দাদের। কয়েক দফা বৃষ্টিতে প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। লঘুচাপের প্রভাবে ঢাকাসহ সারাদেশে গত বৃহস্পতিবার থেকেই বর্ষণ চলছিল। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসবে। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টিতে বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যাওয়ায় যানবাহনের গতি কমে সৃষ্টি হয় জট। ওই রাতে যারা ঢাকার বাইরে রওনা হয়েছেন তারা হাইওয়েতে যানজটের কবলে পড়েছেন। শুক্রবারও রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট তৈরি হয়। বিকেলে এয়ারপোর্ট রোডে দীর্ঘ যানজটের খবর পাওয়া গেছে। এয়ারপোর্ট থেকে মহাখালী আসতে দুইঘণ্টা সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন শাওন নামে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। ফাতেমা-তুজ্-জোহরা নামে এক নারী জানান, প্রাইভেট কারে তার মহাখালী সিগন্যাল পার হতে প্রায় ২০ মিনিট লেগেছে। তবে সবচেয়ে ভোগান্তি ছিল ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে। সামান্য বৃষ্টিতেই ওই এলাকা ডুবে যায়। এতে করে প্রাইভেট গাড়ি বিকল হয়ে রাস্তায় ভয়াবহ জট লাগছে। বৃষ্টির সময় যানবাহনগুলো ওই রুট বাদ দিয়ে ভিন্ন রুট ব্যবহার করছে। ফলে সাতমসজিদ, কলাবাগান, মানিক মিয়া এভিনিউ, আসাদ এভিনিউয়ে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন কাজের জন্য বেহাল রাস্তায় সেই জট আরও জটিল হয়ে পড়ছে। এর মধ্যে গণপরিবহন কম থাকায় রাস্তায় নামা মানুষকে গাড়ি পেতে নাকাল হতে হয়। অটোরিকশায় দিতে হয় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। তবে ছুটির দিন হওয়ায় ভোগান্তি এড়াতে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হননি রাজধানীবাসী। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। নদী বন্দরগুলোকে এক নম্বর ও সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাত ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ জানিয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে শনিবার থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে শুরু করবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, মৌসুমী বায়ূর অক্ষ ভারতের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে। সারা দেশের দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।

 

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=85369