২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, সোমবার, ৬:৩৬

রোহিঙ্গা নিপীড়নের নিন্দা জানিয়েছে মুসলিম বিশ্ব

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নিপীড়নের নিন্দা জানিয়ে উদ্বাস্তুদের সহায়তায় বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কাতারসহ মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ।
জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আহমেদ আল জুবেইর বলেন, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন ও তাদের বাস্তুচ্যুত করার মিয়ানমার সরকারের নীতির নিন্দা জানায় সৌদি আরব। এ ব্যাপারে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। চলমান ট্র্যাজেডির দ্রুত অবসানের জন্য জরুরি ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সৌদি সরকার রোহিঙ্গাদের নিয়মিতভাবে মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

আল জুবেইর বলেন, সৌদি বাদশাহ ব্যক্তিগতভাবে এ ইস্যুতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আলাপ করছেন। সৌদি সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনমানের উন্নয়নে সহায়তা করতে বাংলাদেশের সাথে কাজ করছে।
ইউএইর পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ জায়েদ আল নাহিয়ান রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা ও তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করার মিয়ানমার সরকারের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ভোগান্তি কমাতে আমিরাত সরকার সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে জানান তিনি।

কুয়েতের আমির জাবের আল মুবারক আল হামাদ অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের অধিকার প্রদান এবং তাদের নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের সঙ্কটপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীকে দায়ী করেছেন বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ বিন আহমেদ বিন মোহাম্মদ আল খলিফা। মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে রোহিঙ্গাদের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাহরাইন।
মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো শ্রী আনিফাহ আমান বলেন, মিয়ানমার ও রাখাইন রাজ্যে যে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চলছে তাতে অগণিত নিষ্পাপ জীবন ঝরে পড়ছে। সহিংসতা বন্ধ এবং জীবন ও সম্পদের ধ্বংস ঠেকাতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন চালানো হচ্ছে। এতে কেবল মানবতাই ক্ষুণœ হয়নি বরং বিশ্ব বিবেককেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা হয়েছে।
কাজাখস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি জাতিসঙ্ঘ, ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানান।
মিয়ানমারে সহিংসতা বন্ধে হস্তক্ষেপ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী খেমিয়াস ঝিনাওই।
সাধারণ অধিবেশনের সাইড লাইনে দেয়া বক্তব্যে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিন এরদোয়ান বলেন, এ যুগে এ ধরনের দৃশ্য দেখাটা লজ্জার। মিয়ানমারে বারবার উদ্ভূত এ সঙ্কট সমাধানে একটি দীর্ঘস্থায়ী উপায় নিশ্চিত করাটা প্রত্যেকের মানবিক দায়িত্ব। কূটনৈতিক ও মানবিকÑ দুই দিক থেকেই তুরস্ক এ পরিস্থিতির সাথে গভীরভাবে জড়িত।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/254617