২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, সোমবার, ৬:৩২

শুধু কূটনৈতিক তৎপরতা যথেষ্ট নয়


আমাদের বন্ধুর অভাব নেই, অভাব নেতৃত্বের। মিয়ানমার সংকট সৃষ্টি করেছে শুধু রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য তা নয়। লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিয়ে তারা প্রকারান্তরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছে। সমস্যা সৃষ্টি করেছে সমগ্র মানবতার বিরুদ্ধে। গণহত্যা মানবতাবিরোধী জঘন্য অপরাধ। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের বর্বরোচিত গণহত্যা ও ধর্ষণের জন্য বিশ্ববিবেক আজ ক্ষুব্ধ। এরপরও যদি ভারত, চীন বা রাশিয়া মিয়ানমারকে সমর্থন করে, এটি তাদের সমস্যা। বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা নিয়ে আমাদের সামরিক প্রস্তুতি ভিন্ন রোহিঙ্গা সংকটের কোনো দ্বিপাক্ষিক সমাধানের আশা বাস্তবসম্মত নয়।

মিয়ানমার বাংলাদেশের ওপর আগ্রাসন চালিয়েছে, আমাদের সঙ্গে শত্রুতা সৃষ্টি করেছে, এতে আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত। বিশ্বমতের শক্তি আমাদের কাজে লাগাতে হবে। মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে আমাদের জন্য বিপদ ডেকে এনেছে।

অভিযোগ শোনা যাচ্ছে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অস্তিত্বহীন। আমাদের বুঝতে হবে কূটনীতিকরা নীতিনির্ধারণ করে না। তারা নীতিনির্ধারণে সাহায্য করতে পারে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়ে। যদি কেউ ভাবে যে ভারত বা ভিন্ন কোনো দেশ আমাদের বৈদেশিক নীতিনির্ধারণ করবে, তাহলে সেটা হল তার অসহায়ত্বের ব্যাপার। আমরা অসহায় নই। বিশ্বজনমত আমাদের পক্ষে আছে। বর্তমান বিশ্বে কোনো ক্ষুদ্র রাষ্ট্রও অসহায় নয়, দুর্বলও নয়, যদি সঠিক নেতৃত্ব থাকে।

আমাদের সরকারকে দ্রুত অগ্রসর হতে হবে। তা না হলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কেন্দ্র করে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করা হবে। অন্যরা নিজেদের কারণে তৎপর হওয়ার আগে আমাদের তৎপর হতে হবে। আশ্রয় দেয়ার বিষয়টিকে দীর্ঘ সময়ের বিষয় হিসেবে দেখা মোটেও ঠিক হবে না। এদেশে অবস্থানরত শরণার্থীদের দেখাশোনা করতে গিয়ে যাতে নতুনভাবে মানবিক সমস্যার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আন্তর্জাতিক সেবামূলক সংস্থাগুলোকে জড়িত করা সমীচীন হবে। বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে সুযোগ দেয়া যাবে না। রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের রাখাইন রাজ্যকে স্বাধীনতা প্রদানের প্রশ্ন নিশ্চয়ই উঠবে এবার।

রোহিঙ্গা সমস্যা রাজনৈতিকভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই এ সমস্যাকে শুধু মানবিক সমস্যা হিসেবে দেখা হবে বড় রকমের ভুল। বিদেশি সমর্থন আদায়ে আমাদের বিশ্বনেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে। শুধু চিঠি লেখাটাই কূটনৈতিক তৎপরতা নয়।

নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মমভাবে হত্যা, ধর্ষণ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের জোরালো প্রতিবাদ করে চলেছেন। তিনটি রাষ্ট্র ব্যতীত বলতে গেলে বিশ্বজনমত রোহিঙ্গা সংকটের আশু অবসান দাবি করছে। শুধু প্রতিবাদ নয়, কোনো কোনো দেশ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু আমরা কী করছি? আমরা তাদের সঙ্গে চালের ব্যবসা করলাম। আমাদের ‘পরীক্ষিত’ বন্ধু ভারতকে দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারকে অস্ত্র সরবরাহ করতে। ভারতের মোদি সরকারও তার নীতির ব্যাপারে বিভক্ত। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তো শরণার্থীদের অসহায়ভাবে ফেরত পাঠানোর বিরোধী।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ সত্য সবার জানার কথা যে, কোনো দেশই অপর কোনো দেশের স্থায়ী বন্ধু হয় না। যার যার স্বার্থকেই বড় করে দেখতে হয়। এজন্যই পররাষ্ট্র নীতিতে বলা হয় কোনো দেশই কারও স্থায়ী বন্ধু নয়। ভারত রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার অর্থ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রেখে দেয়া। তাতেই ভারতের স্বার্থ রক্ষা পাবে। চীন এবং রাশিয়া কখনও আমাদের সক্রিয় বন্ধু ছিল না। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে রাশিয়া ভারতকে সাহায্য করেছে।

মিয়ানমার রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও। বলা হচ্ছে, রোহিঙ্গারা বাঙালি এবং মুসলমান। বাংলাদেশের দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই সেখানকার সমর নেতারা লাখ লাখ নারী-পুরুষ ও শিশুদের পৈশাচিক নির্যাতন করে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করতে সাহস পেয়েছে। ভারত ও চীনের এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ সমর্থন থাকার জন্য মিয়ানমার সাহস অর্জন করেছে।

বর্তমান সংকট উত্তরণে মিষ্টি-মধুর কূটনীতি কাজে আসবে না। বাংলাদেশের দুর্বলতা জেনেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়ার সামরিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে আক্রমণ করা হচ্ছে তার মোকাবেলা করা বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব হবে না ভারতীয় সমর্থন না পাওয়া পর্যন্ত। এ হিসাব মাথায় রেখেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জাতিগত নিধনে নেমেছে। আমাদের নিজস্ব নেতৃত্ব সম্পর্কে এটাই মিয়ানমারের ধারণা।

যখন কেউ এ সংকট বা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমরা যখন আমাদের ষোল কোটি (১৬০ মিলিয়ন) মানুষকে খাওয়াতে পারছি, তখন আমরা ৪ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাওয়াতে পারব, এ কথার মধ্যে সমস্যাটির সম্যক উপলব্ধির কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা হতদরিদ্র বলে আমাদের কাছে তারা খেতে আসেনি। কারণ, তারা তাদের নিজের দেশে অনাহারী কিংবা দরিদ্র ছিল না। দেশে সব কিছু ফেলে রেখে তারা জীবনটা বাঁচাতে এখানে এসেছে এবং তারা এ আশাও করছে, বাংলাদেশ বিশ্বজনমতের সাহায্য নিয়ে তাদের দেশে ফেরত যাওয়ার ব্যাপারে নেতৃত্ব দেবে।

আমরা তাদের পক্ষে থাকব এ আশা দিয়ে এটা বলাই যথেষ্ট নয়, আগত রোহিঙ্গা মুসলমানদের সে দেশের সরকারকে ফেরত নিতে হবে। তাদের ওপর যে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে, হত্যাযজ্ঞ ও ধর্ষণ চালানো হয়েছে, আন্তর্জাতিকভাবে তার বিচার পাওয়ার কথা আমরা ভুলে যাব না। আমরা বলিষ্ঠভাবে রোহিঙ্গাদের গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের সামরিক কর্তাব্যক্তিদের বিচারের জন্য বিশ্বনেতাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেব। বিশ্বজনমত তো রোহিঙ্গাদের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। নীতিনির্ধারণে আমাদের দুর্বলতা রয়েছে। আমাদের ফরেন সেক্রেটারি বিবিসি রেডিওতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারকে ‘বন্ধুপ্রতিম’ সরকার এবং দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তো বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত হেনেছে। কোনো দেশ ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের লাখ লাখ লোককে অন্য দেশের সীমানা পেরিয়ে সে দেশে যেতে বাধ্য করতে পারে না।

আমরা তাদের খেতে দেব, এমন কথা শুনতেও বড় নির্মম শোনায়। আমাদের সরকার আবেদন করার আগেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের মানবিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। খাদ্য, ওষুধপত্র ইত্যাদি মানবিক সাহায্য শরণার্থীরা চাইলেই পাবে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় সূত্র থেকে প্রাপ্ত সাহায্য বিতরণে বিশৃঙ্খলা কাটিয়ে উঠতে পারলে এ শরণার্থীদের খাওয়া-দাওয়ার জন্য আমাদের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

সংকট শুধু রোহিঙ্গাদের নয়, সংকট আমাদেরও। মিয়ানমারের বর্বর সামরিক বাহিনী জঘন্যতম মানবতাবিরোধী কাজ করার যে দুঃসাহস দেখিয়েছে তা সমগ্র সভ্য বিশ্বের জন্য এক মহাচ্যালেঞ্জ। এ পর্যন্ত আমরা সংকট মোকাবেলায় যা করেছি তার থেকে অনেক বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং তারাই মাতৃভূমি থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উৎখাত করার বিরুদ্ধে বিশ্বজনমতকে সংগঠিত করেছে। এমনকি মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক গণআদালত গঠন করে সু চি ও মিয়ানমারের সমরনায়কদের গণহত্যার বিচার করেছে। আমেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডাসহ সমগ্র বিশ্বই মিয়ানমারের নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

আমাদের ওপর কী ধরনের চ্যালেঞ্জ চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সেটাও আমাদের সরকার বুঝে উঠতে পারেনি এবং সে কারণে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কোনো নীতি-কৌশলও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। সোজাসাপটা বললে বলতে হয়, ভারতের সমর্থন ছাড়া বাংলাদেশ সরকার কোথাও কোনো আশা দেখতে পায় না। যদিও শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ দিয়ে যাচ্ছে, তথাপি আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমেরিকার সাহায্যের ওপর ভরসা করতে পারেন না। ভালো কথা। তার সরকার কাদের বন্ধুত্বের ওপর নির্ভর করতে পারে, তাদের কথা দেশবাসী জানতে আগ্রহী। কী ধরনের সাহায্য তাদের কাছে চাওয়া হবে তা-ও তো বলতে হবে। নতুন বন্ধুদের পেতে হলে তাদের কাছে গিয়েই আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে হবে। চিঠি চালাচালি করে নয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের পক্ষে থাকার জোরালো আশ্বাস দিয়েছেন। তার পক্ষে সিকিউরিটি কাউন্সিলকে বলিষ্ঠ ও ত্বরিত অ্যাকশন নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ৩২ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা কী চাই তাতো বলা হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে কারও সঙ্গে দ্বিমত থাকার কথা নয় যে, রোহিঙ্গা মুসলমানদের ফেরত না নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের বাঙালি এবং জঙ্গি বলে অভিযুক্ত করেছে। এটা তাদের সেনাবাহিনী প্রধান পরিষ্কার করে দিয়েছে। বিশ্ব যথার্থই অং সান সু চি’র ভীরুতার এবং নিজের দেশে জাতিগত নিধনের ব্যাপারে অনুভূতিহীনতার সমালোচনা করছে। তিনি তার সেনাবাহিনীর সমালোচনা করতে অনিচ্ছুক। মুসলিমদের ধ্বংস করার ব্যাপারটিকে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইট্স চিফ পাঠ্যবইসম্মত জাতিগত নিধনযজ্ঞের উদাহরণ আখ্যায়িত করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের একটি রিপোর্টে সু চির বক্তব্যকে সেনানায়কদের শেখানো বুলি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

১৯৮২ সালে নাগরিকত্ব থেকে রোহিঙ্গাদের নাম খারিজ করা হয়েছে। সুতরাং রোহিঙ্গা মুসলমানরা যে মিয়ানমারের নাগরিক ছিলেন তা অস্বীকার করবার জো নেই। সু চির গঠন করা কফি আনান কমিশনও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে তাদের দেশেই নিরাপত্তা দেয়ার সুপারিশ করেছে। সু চির এখনকার দেয়া ভাষণে এ সম্পর্কে একটি কথাও শোনা গেল না।

কোনো ব্যক্তির অথবা গোষ্ঠীর নাগরিকত্ব হরণ কোনো সরকারের খেয়াল-খুশির ব্যাপার নয়, এটা আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা মুসলমানদের তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করতে পারে না, পারে না বাংলাদেশের ওপর বিপুল মানবিক বোঝা এবং জনসংখ্যার চাপ সৃষ্টি করতে। এটাকে আমাদের বিরুদ্ধে অনাকাক্সিক্ষত শত্রুতা হিসেবে দেখতে হবে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাওয়াটা ভালো; কিন্তু শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইলেও তার জন্য চাপ সৃষ্টি করার মতো সামরিক শক্তি লাভের কূটনৈতিক ভূমিকা থাকতে হবে। কিন্তু তার তো কোনো ভাবসাব দেখছি না। নিজস্ব প্রচেষ্টায় ভূমিকা রাখার কোনো চেষ্টা দেখছি না। নির্ভরশীল বন্ধুত্ব গড়ে তুলে আন্তর্জাতিক সমর্থনের চেষ্টা দেখছি না। কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কার্যকর নেতৃত্ব না দিতে পারলে আন্তর্জাতিক সমর্থন ধীরে ধীরে সীমিত হয়ে যাবে।

আমাদের গতিশীল কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সামরিক সহায়তাকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, কারণ শান্তিপূর্ণ পথে সমাধান পেতে হলে সামরিক অ্যাকশনের বিরুদ্ধে সামরিক প্রস্তুতি থাকতে হবে। কোনো স্বাধীন দেশ এমন উসকানিমূলক সামরিক কার্যক্রম সহ্য করতে পারে না, যা অন্য দেশের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করে। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। কিন্তু সে যেন না ভাবে আমরা বন্ধুহীন ও দুর্বল। তাদের সামরিক আগ্রাসনের মোকাবেলায় আমাদের আন্তর্জাতিক সাহায্য নিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। মিয়ানমার যুদ্ধ চাইলে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

শুধু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নয়, মিয়ানমারের বর্বরতা বিশ্ববাসীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী জঘন্যতম অপরাধ। জাতিসংঘের অবস্থানকে অস্বীকার করায় মিয়ানমারের সমর নেতাদের চরম গণহত্যার কঠিন বিচার দাবি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব বর্তেছে বাংলাদেশের ওপর। বাংলাদেশের জনগণ মিয়ানমারকে ক্ষমা করবে না। বিশ্বজনমত আমাদের পক্ষে আছে।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন : আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ

https://www.jugantor.com/sub-editorial/2017/09/25/158301