২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, শুক্রবার, ৭:২৫

জাতীয় ঐক্যের ডাক

ড. আবদুল লতিফ মাসুম

ম্যাক্স ওয়েবার জাতীয় ঐক্যকে বাস্তবতার নিরিখে নির্ণয় করতে বলেছেন। এটি হচ্ছে গরিষ্ঠ মানুষের কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে একমত হওয়া। জাতীয় ঐক্য দিনক্ষণ ঠিক করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার কোনো বিষয় নয়, বরং নাগরিক সাধারণের অনানুষ্ঠানিক অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে জাতীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সফল হতে পারে। কোনো কোনো রাষ্ট্র ও সমাজে নেতৃত্বের ও কর্তৃত্বের নীতি ও কার্যক্রমকে ‘জাতীয় ঐকমত্য’ বলে প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যেমন, মার্ক্সবাদীরা ‘সর্বহারার এক নায়কত্ব’কে জাতীয় ঐকমত্য বলে চালিয়ে দিতে চায়। সেখানে ঐকমত্য আদর্শিক তথা দলীয়। গায়ের জোরে তারা ভিন্নমতকে অবদমিত করে কর্র্তৃত্ব নিশ্চিত করতে চায়। একটি রাষ্ট্রের মৌলিক মূল্যবোধ এবং জাতীয় লক্ষ্য সম্পর্কে তারা একটি দৃশ্যমান ঐক্য দেখাতে অভ্যস্ত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা জনপ্রিয় সেøাগানকে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার হাতিয়ার বানায়। ‘স্বাধীনতার চেতনা’, ‘শ্রমিকরাজ’ এবং ‘শোষিতের বিপ্লব’Ñ এমনি সস্তা বাক্যবিধি। প্রকৃত জাতীয় ঐক্য অর্জিত হয় তখনি, যখন গরিষ্ঠ রাজনৈতিক শক্তি ও দলগুলো জাতীয় আদর্শ, সংবিধান, শাসনপদ্ধতি এবং উন্নয়ন কৌশল সম্পর্কে অভিন্ন মত পোষণ করে। উন্নত গণতন্ত্রে এসব বিষয়ে ঐকমত্য স্বাভাবিক। তবে অস্বাভাবিক এবং অভাবনীয় সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য দৃশ্যমান হয় তখন, যখন একটি জাতি যুদ্ধ ও রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মতো পরিস্থিতি মোকাবেলা করে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালে ব্রিটেনে এবং যুদ্ধপরবর্তী সময়ে জার্মানি, অস্ট্রিয়া প্রভৃতি পশ্চিম ইউরোপীয় দেশে জাতীয় ঐক্যের সূচনা হয়েছিল। তখন যুৎসই শব্দাবলি এভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল, ‘Administratively practicable, economically affordable and politically acceptable’ । জাতীয় ঐক্যকে বাস্তবানুগ এবং সর্বসম্মত করার লক্ষ্যে এসব সমঝোতাপূর্ণ মনোভাব ব্যক্ত করা হয়েছিল। কোনো কোনো দেশে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ‘গ্র্যান্ড কোয়ালিশন’ বা মহাজোট ধরনের প্রবণতা লক্ষণীয় ছিল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধোত্তর ধাক্কা সামলে বড় বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো নব্বইর দশকে জাতীয় ঐক্য প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়। এ ধরনের নীতিভঙ্গির মাধ্যমে তারা সমাজের বৃহত্তর ঐক্য নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়। এ নিরিখেই ‘জাতীয় ঐক্যের ডাক’ বিচার্য।
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, দেশের দুইজন সিনিয়র সিটিজেন সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা: এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং স্বাধীনতার অন্যতম সংগঠক ড. কামাল হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিতে এক মঞ্চে একত্র হয়েছেন। ‘জাতীয় সঙ্কট সমাধানে জাতীয় ঐক্য’ এই সেøাগান নিয়ে তারা সর্বস্তরের মানুষের কাছে তাদের আবেদন জানিয়েছেন। এ লক্ষ্যে তারা বেশ কিছু কার্যক্রম ঘোষণা করেছেন। তারা গোটা জাতির জন্য কিছু আশু কর্তব্যের কথা জানিয়েছেন। জাতীয় ঐক্যধারায় শরিক হতে তারা আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক শক্তি এবং বুদ্ধিজীবীসহ সর্বস্তরের জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। এর আগেও দু’জন নেতা জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ, জনগণ সে ক্ষমতা প্রয়োগ করবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে’। এই দু’জন বর্ষীয়ান নেতা আরো বলেন যে, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির অংশগ্রহণে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনী আইন ও নির্বাচনব্যবস্থার দাবিতে এবং দারিদ্র্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি ছাত্রসমাজ, শিক্ষিত ও সুধীজন, আইনজ্ঞ, চিকিৎসক, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার, ব্যবসায়ী শ্রমিক কৃষক, সাবেক সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ে বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে।’ প্রবীণ এই দুই নেতার আহ্বান সচেতন নাগরিক সমাজে ব্যাপক আবেদন সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশে দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালের যেন আর শেষ হয় না। প্রায় ৫০ বছর ধরে সঙ্কট থেকে সঙ্কটে আবর্তিত হয়েছে বাংলাদেশ। নিরবচ্ছিন্নভাবে শান্তি ও সমৃদ্ধির সময় খুব কমই অতিক্রান্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক ট্র্যাজেডির মোকাবেলা করছে। আর তা হচ্ছে রোহিঙ্গা সঙ্কট। প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা দু-এক মাসে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী হয়েছে। মিয়ানমার সরকার তাদের ওপর নির্মম নিপীড়ন-হত্যা, অগ্নিসংযোগ পরিচালনার ফলে তারা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ সরকার দীর্ঘ দিন ধরে তাদেরকে অমানবিকভাবে আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে আসছিল। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা ফেরত পাঠাচ্ছিল তাদের। নাফ নদীতে অথবা বঙ্গোপসাগরে মৃত্যুবরণ করছিল তারা। অবশেষে যখন তারা ঘূর্ণিঝড়ের মতো ধেয়ে আসল বাংলাদেশে, তখন সরকারের টনক নড়ল। অবশেষে ক্ষতমাসীন সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব থেকে সবাই মিলে রোহিঙ্গাদের মানবিক বিপর্যয়কে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হলো। তাদের ধন্যবাদ, তারা বিষয়টি নিয়ে ঘরে-বাইরে কথা বলছে। এত বড় একটি বিপর্যয়কে সরকারের একার পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। প্রয়োজন শত কোটি মানুষের সহযোগিতা। রোহিঙ্গা সমস্যার দুটো দিক। একটি অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা। অপরটি বহিঃদেশীয়। অনমনীয় মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাধ্য করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কূটনীতি, রাজনীতি এবং অর্থনীতি মিলিয়ে যে বিশাল সমস্যা বাংলাদেশকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে তা দুরূহ। তবে ইতিবাচক দিক হলো, ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের সৃষ্টি হয়েছে। আর টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সবাই ভ্রাতৃপ্রতিম ও রোহিঙ্গা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রবীণ রাজনীতিকদ্বয় সঙ্গতভাবেই এ সমস্যা সমাধানে সরকারি ও বিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে একত্র করার প্রয়াস পেয়েছেন।

রোহিঙ্গা জনস্রোতের তোড়ে সংবেদনশীল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিষয়টি এক রকম ঢাকা পড়েছে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে যেভাবে ক্ষমতাসীনেরা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তা যেকোনো মানদণ্ডে নগ্ন আক্রমণ। প্রধান বিচারপতি এই মুহূর্তে দেশে নেই। কিন্তু সমস্যাটি রয়েই গেছে। ইতোমধ্যে গোপনে গোপনে কোনো সমঝোতা হয়েছে কি না তা আমাদের জানা নেই। তবে আওয়ামী লীগের অতীত যারা জানেন তারা অবশ্যই ভয় পেতে পারেন। বিরোধী শিবিরের লোকেরা এ নিয়ে উচ্চবাচ্য করছেন। বিজ্ঞজনেরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এ নিয়ে বিপজ্জনক সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে। ড. কামাল হোসেন একজন এমিকিউরাস এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। অধ্যাপক বি. চৌধুরীর অবস্থানও সমরূপ। তারা যে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন তাতে এ বিষয়টি আইনানুগ উত্তরণে তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে। গোটা জাতির উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উল্লিখিত বড় ধরনের দুটো সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েই নির্বাচনে যাচ্ছে দেশ। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার কথা। যদিও অনেকে আশা করছেন সুবিধাজনক মনে করলে ক্ষমতাসীনেরা এর আগেও নির্বাচন দিতে পারেন। এই সম্ভাব্য নির্বাচন এই সময়ে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনকে যেভাবে তামাশায় পরিণত করেছে, সে রকম একটি কারসাজির আশঙ্কা করছে সাধারণ মানুষ। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব নিশ্চয়ই নিশ্চিত হয়েছেন যে, মানুষকে যদি ভোট দেয়ার অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হয় তাহলে তাদের আর কোনো আশা নেই। সুতরাং তাদের ষড়যন্ত্র ও শক্তি প্রয়োগ থেকে নির্বাচনব্যবস্থাকে পুনরুদ্ধার গোটা জাতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং প্রধান বিরোধী দল সুমেরু-কুমেরু অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচনের আগে বিয়টির সুরাহা জরুরি। নির্বাচন কমিশন দৃশ্যত শক্ত অবস্থানের কথা বলছে। সেটি আশার কথা। কিন্তু মানুষের সে আশায় গুড়েবালি পড়বে কি না তা সময়ের ব্যাপার। সর্বতোভাবে নির্বাচন কমিশনকে সঠিক রাস্তায় রাখা গণতান্ত্রিক শক্তির জন্য একটি বড় ধরনের কর্তব্য।
নাগরিক সাধারণ মাত্রই বোঝেন, উপর্যুক্ত সমস্যাগুলো গণতন্ত্রের সঙ্কট থেকে উদ্ভূত। আজ যদি একটি গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকত জনগণের বলে তারা বলীয়ান হতো। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা একটি শক্ত অবস্থান নিতে পারত। যে সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই, তারা কী করে মিয়ানমারের বর্বরতাকে রুখে দাঁড়াবে? মিয়ানমার সরকারের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে দেশবাসী ক্ষুব্ধ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সহিংসতা ঘটিয়েছে। আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর বাংলাদেশ ভূখণ্ডে গুলিবর্ষণ করেছে। বারবার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া সেনাবাহিনী যে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না, তা আমরা বুঝি। ‘যুদ্ধ হচ্ছে রাজনীতিরই বর্ধিত অংশ’Ñ যুদ্ধবিদ্যার একজন খ্যাতনামা গুরু কজেভিস তা আগে থেকেই বলে রেখেছেন। যে সরকারের ক্ষমতার উৎস অন্যত্র নিহিত, তারা কী করে ঝুঁকি নেবে?

একটি কর্তৃত্বপরায়ণ সরকারের উদ্দেশ্যই হলো রাষ্ট্রের সব অঙ্গÑ আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করা। আইন বিভাগ তথা জাতীয় সংসদ অকার্যকর রয়েছে। নির্বাহী বিভাগকে নিকৃষ্ট দলীয় ক্যাডারে পরিণত করা হয়েছে। বিচার বিভাগের নি¤œ আদালতগুলো করায়ত্ত করার পর খায়েস হয়েছে সর্বোচ্চ আদালতকে বাগে নেয়া। তাই ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের বিচার করার ক্ষমতা সরকার হাতে নিয়েছে। এটা অত্যন্ত ভাগ্যের বিষয় যে সুড়ঙ্গের অবশেষে হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতো সুরেন্দ্র সিনহা সাহস দেখালেন। তাতেই তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেল। দেশে যদি সত্যিকার গণতন্ত্র থাকত তাহলে উচ্চ আদালতকে ঠ্যাঙানোর সাহস তারা দেখাতে পারত না।

এখন একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য আপাতভরসা। একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্যেই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিহিত। বাংলাদেশের শান্তিকামী মানুষ সহিংসতা পছন্দ করে না। তারা নিয়মতান্ত্রিক পথেই সরকার পরিবর্তন চায়। গোটা জাতি আশা করছে যে, দেশের অভিভাবকসম জাতীয় নেতৃবৃন্দ যে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন তাতে সব দল-মত নির্বিশেষে জনগণের সমর্থন থাকবে। এই মুহূর্তে সব রাজনৈতিক দলের উচিত দলীয় কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রেখে শুধু গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়া। বিগত সময়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সে রণকৌশল গ্রহণে অভিজ্ঞতা রয়েছে। আইয়ুব আমলের ৯ নেতার বিবৃতির কথা মনে আছে। এরশাদের উচ্ছেদে ত্রিদলীয় ঐক্যজোটের কথা ভুলে যায়নি মানুষ। এ ক্ষেত্রে কোনো সঙ্কীর্ণতা, ব্যক্তিগত সঙ্ঘাত ও আদর্শিক দ্বন্দ্ব যেন গণতন্ত্রের কাক্সিক্ষত লড়াইকে ব্যাহত না করে। জাতীয় ঐক্যই হচ্ছে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পূর্বশর্ত। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দ্য তকভিল মনে করেন, ‘সাধারণভাবে সমাজের রাজনৈতিকভাবে সচেতন একটি বড় অংশ যখন জাতীয় জীবনের সম্পদ, অধিকার ও কর্তৃত্বের বণ্টন নিয়ে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ও সচেতনভাবে লক্ষ্য অর্জনে নিয়োজিত হয়, তখন তারা সফলকাম হয়।
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/253692