২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৯:২১

তৃতীয় দিনের মতো বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণ বন্ধ

ধর্মঘটীদের সাথে আজ এনসিটিবির বৈঠক

আজ বেলা ১১টায় ধর্মঘটরত বিনামূল্যের পাঠ্যবই সরবরাহকারীদের নেতাদের বৈঠকে ডেকেছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান। এনসিটিবিতেই এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বোর্ড চেয়ারম্যান ও মুদ্রণশিল্প সমিতির সভাপতি। বোর্ড চেয়ারম্যানই ধর্মঘটের ৪৮ ঘণ্টা পর টেলিফোন করে সমিতির নেতৃবৃন্দকে বৈঠকে বসার অনুরোধ জানিয়েছেন। বৈঠকের ব্যাপারে মুদ্রণশিল্প সমিতির পক্ষ থেকে সম্মতির কথা জানানো হয়েছে বলে গতকাল নয়া দিগন্তকে নিশ্চিত করেছেন সমিতির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ।

বৈঠক সম্পর্কে মুদ্রণশিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, তিন দফা দাবি এনসিটিবি মেনে নিলে তাৎক্ষণিকভাবেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে পাঠ্যবই ছাপার কাজ শুরু হবে। বৈঠক ব্যর্থ হলে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, এনসিটিবি দাবি মেনে নিলে ধর্মঘটের কারণে পিছিয়ে পড়ার ক্ষতি নিজ দায়িত্বেই পুষিয়ে নেয়ার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। তবে এনসিটিবিকে টেন্ডারের শর্তানুসারে কার্যাদেশ নিশ্চিত করতে হবে। যোগ্যতা নেই, অবকাঠামো নেই হিসেবে এনসিটিবির প্রতিবেদনে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া যাবে না। প্রাথমিকের বইয়ের জন্য সময় বাড়াতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বই প্যাকিং বিগত বছরগুলোর মতো অর্থাৎ আগের নিয়মে করতে হবে।

এ দিকে আগামী শিক্ষাবর্ষের (২০১৮) জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যবই মুদ্রণ-বাঁধাই-সরবরাহ গতকাল তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ ছিল। বিনামূল্যে পাঠ্যবই সরবরাহকারীদের আহূত ধর্মঘটের কারণে গতকালও সারা দেশে দুই শতাধিক ছাপাখানায় নতুন বইয়ের ছাপাসহ সব কাজ বন্ধ ছিল। গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এ ধর্মঘট চলছে। টেন্ডারের শর্তানুসারে কার্যাদেশ দেয়াসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প সমিতি অনেকটা আকস্মিকভাবেই এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
বিনামূল্যে পাঠ্যবইয়ের মূল নিয়ন্ত্রক জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) শীর্ষ কর্মকর্তারা গতকাল দিনভর দৌড়-ঝাঁপ করছেন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের কাছে। কর্মকর্তারা ধর্মঘটী মুদ্রাকরদের সাথে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের জন্য বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গতকাল দুপুরের পর এনসিটিবির চেয়ারম্যান এবং সদস্যকে (কারিকুলাম) মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের কথা বলতে দেখা গেছে।

তৃতীয় দিনের মতো ধর্মঘট অব্যাহত থাকায় আগামী বছরের বিনামূল্যে পাঠ্যবই সময়মত শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প সমিতির নেতাদের সাথে গতকাল আলাপ করে জানা গেছে, দাবি আদায় এবং টেন্ডারের শর্ত মতো কাজ না দেয়া হলে ধর্মঘট চলবে। তারা বলেন, এনসিটিবি নিজের দেয়া শর্ত মানতে হবে। শর্ত না মানলে আগামী বছরের শুরুতে যখন বই দেয়া যাবে না, তখন মুদ্রাকরদের দায়ী করা হবে। শুধু তাই নয়, এবার বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তকের ছাপা কাজ কোনো বিদেশী প্রতিষ্ঠান পায়নি। এতেই ুব্ধ এনসিটিবির কিছু কর্মকর্তা। শিল্প সমিতির নেতারা অভিযোগ করেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যর্থ করে দিতে এবং আগামীতে বই ছাপার পুরো কাজ বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই একের পর এক শর্তারোপ করছে।

এবার বিনামূল্যে বই বিতরণের জন্য সরকার পাঁচটি টেন্ডারে ভাগ করে ৩৫ কোটি ১৩ লাখ ২৬ হাজার ২০৭টি বই মুদ্রণ কাজ চলছে। মাধ্যমিকের পাঠ্যবই বিশেষ করে পরিমার্জিত বইগুলোর কোনো কার্যাদেশ দেয়া হয়নি।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/253461