২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৯:১৫

রাজশাহীতে চালের বাজারে পাগলা ঘোড়া সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

ঊর্ধ্বমূল্যের পাগলা ঘোড়া ছুটে চলেছে রাজশাহীর চালের বাজারে। দফায় দফায় চালের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠার উপক্রম। বর্তমান বাজারে মোটা চালই ৫০ টাকা, মাঝারি ৬০ টাকা আর চিকন চাল ৭০ টাকা উঠেছে।
গতকাল পর্যন্ত খবর নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগর ও আশেপাশের উপজেলাগুলোতে চালের দাম ক্রমাগত হারে বেড়েই চলেছে। আর এতে করে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। ঈদের পর থেকে শুল্ক কমানোর পরও বাড়তেই আছে। মোটা, মাঝারি ও চিকন চালে প্রতি কেজিতে মানভেদে কমপক্ষে দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। অথচ এর আগে ব্যবসায়ীরা বলেছিলেন, শুল্ক কমলে চালের দামও কমবে। কিন্তু কথার সাথে কাজের কোন মিল নেই। চালের মওজুদকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েও সুফল মিলছে না। গত সোমবার বিকেলে রাজশাহীর বিসিক এলাকায় চাল ৫ হাজার বস্তা মজুদের দায়ে দু’জন কে আটক করে জরিমানা আদায় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সূত্রে জানা গেছে, সরকার গত এক মাসের ব্যবধানে চালে আমদানি শুল্ক ২৬ শতাংশ কমিয়ে মাত্র ২ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। অথচ এর ইতিবাচক প্রভাব এখনো দৃশ্যমান হয়নি। সরজমিনে রাজশাহী মহানগরীর বাজারগুলো ঘুরে জানা গেছে, ঈদের দু’সপ্তাহ আগেও বাজারে মোটা চাল কেজি প্রতি (ইরি/স্বর্ণা) ৪৫ টাকা দামে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা, বিআর-আটাশ চালের কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৫৪ টাকা, মিনিকেট চাল কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মানভেদে নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। ব্যবসায়িরা জানান, সরকার মূলত অনেক বেশি দামে চাল ক্রয় করার কারণে বেসরকারি পর্যায়ের আমদানিকারকদের বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। তাদেরকেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাছাড়া সরকার চালের ওপর শুল্ক কমানোর সংবাদে সাপ্লাইয়ারগণ বুকিং রেট বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে করে আমদানিকারকগণ শুল্ক কমানোর সুবিধা পাচ্ছে না। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, গত বোরোতে চালের উৎপাদন ২০ লাখ টন কম হয়েছে। চালের আমদানি বাড়াতে গত ২০ জুন চাল আমদানিতে শুল্কহার ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে; কিন্তু এরপরও বাজারে তেমন প্রভাব না পড়ায় গত ১৭ আগস্ট আমদানি শুল্ক আবার কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়।

বাড়ছে সবজির দামও : এদিকে চালের দামের সাথে সাখে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সবজির দাম। যে কোন সময়ের চেয়ে সবজি প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর স্টেশন বাজারে চাল কিনতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, এ বছর যেভাবে সময়ে অসময়ে চালের দাম বাড়ছে তাতে আমাদের মত গরীব মানুষের জন্য খুব সমস্যা হচ্ছে। কারণ যেভাবে চালসহ সবজির দাম বাড়ছে সেভাবে তো দিনমজুরদের আয় বাড়ে না। আরেক ব্যক্তি বলেন, তাদের মত নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য কি যে সমস্যা তা বলে বোঝানো যাবে না। সাহেব বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে এবং ভারতীয় রসুনের দাম ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে । করলা প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, পটল ৩৫-৪০ টাকা, কচুরমুখী ২০, ঝিঙ্গা ২৫, পেঁপে ২০ টাকা, বরবটি ২০ টাকা, কাকরল ৪০ টাকা, কচুর লতি ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ২৫/৩০ টাকা, চিচিংগা ২৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা। ঈদের আগ থেকে পেয়াজ প্রতি কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা এবং বিদেশী ৩০ টাকায়। কাঁচা মরিচের দাম আবারও বেড়ে ১০০ টাকায় ঠেকেছে। আলুর দাম ২০-২৫ টাকা কেজি দরে।

http://www.dailysangram.com/post/300519