২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৯:০৪

গণহত্যার ওপর শান্তির প্রলেপ

অন্য দৃষ্টি

জসিম উদ্দিন

আবারো বোঝা গেল অং সান সু চি একটি কারাগারে রয়েছেন। এই কারাগার আগের গৃহবন্দিত্বের মতো নয়। এটা একটা বৃহত্তর কারাগার, যার সীমানা আসলে পুরো মিয়ানমার। এখানে আগের মতো পরাধীনতা নেই, আছে বরং ক্ষমতার কিছুটা অংশ, যা সানন্দে উপভোগ করা যাচ্ছে। এই কারাগারের মধ্যে থেকেও তিনি হয়তো সত্য কথা কিছু বলতে পারতেন। সেটা তিনি করেননি, ভান করেছেন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। আংশিক সত্য বলে বাস্তবতাকে আড়াল করার অপচেষ্টা করেছেন। সত্য কথা উচ্চারণ করলে ক্ষমতা উপভোগ করার আয়েশ হয়তো কিছুটা ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। সেই ঝুঁকি তিনি নেননি। শান্তিতে নোবেল পাওয়া সু চি দেশের লাখ লাখ অধিবাসীর জীবন রক্ষার চেয়ে বরং আপসকামিতাকে পছন্দ করছেন। পৃথিবীর মানবতাকর্মীরা তাকে যেদিকে ডাকছেন তার চেয়েও সু চির নিজের কাছে ক্ষমতায় টিকে থাকা গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে। গণহত্যা পরিচালনাকারী সেনাবাহিনীর জন্য এটি একটি বাড়তি সুযোগ। আত্মরক্ষার একটি ঢাল হিসেবে সু চিকে তারা পেয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর গতি তাকে সামনে রেখে সুবিধাজনকভাবে অব্যাহত রাখা যাবে।

মিয়ানমারের রাজধানীর সিটি হলে জাতির উদ্দেশে ৩০ মিনিটের ভাষণ দেন সু চি। গণহত্যা ২৪ দিন চলার পর তিনি এই ভাষণ দেয়ার প্রয়োজন মনে করলেন। তার দেয়া বক্তব্যে প্রাণ হারানো শত শত নাগরিকের প্রতি কোনো সমবেদনা নেই। পালিয়ে যাওয়া লাখ লাখ মানুষের জন্য নেই কোনো দুঃখবোধ। সংবাদমাধ্যম ওই বক্তৃতাকে পরস্পরবিরোধী বলে মন্তব্য করেছে। বিশ্বসম্প্রদায়ের কঠোর প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের রাখাইন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের বিষয়ে মিয়ানমার সরকার ভীত নয়।’ তার এই বক্তব্যের পেছনে জোর রয়েছে। কারণ, তিনি জানেন মানবতা রক্ষার জন্য চারদিকে যারা শোরগোল করছেন তাদের কোনো ক্ষমতা নেই। গণহত্যা থেকে মানুষকে বাঁচাতে তারা কোনো ভূমিকা রাখতে পারবেন না। বিশ্বব্যবস্থা এতটাই গলদ এবং ত্রুটিতে ভরা, মানুষ নিজে নিজের বাঁচার অধিকার সংরক্ষণ করতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে অবশ্য সবাই সমান নয়। মানুষের ক্ষেত্রে মর্যাদাগত পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। কারো জীবন ভবিষ্যতে আশঙ্কার মধ্যে পড়তে পারে সেই আশঙ্কা দূর করার জন্য অগ্রিম অন্যদের হত্যা করা হচ্ছে।

ইরাক ও আফগানিস্তান এ ধরনের উৎকৃষ্ট উদারণ। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের মূল ব্যাপার হচ্ছে অভিজাত বিশ্বের প্রাণের ওপর হামলার আশঙ্কা দূর করা। উত্তর কোরিয়া আমেরিকায় হামলা করতে পারে এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। রোহিঙ্গারা শত শত প্রাণ হারাচ্ছেন, লাখে লাখে বাড়িঘর থেকে উৎখাত হচ্ছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারেনি। কারণ, এরা মানুষ হিসেবে ওই মর্যাদা অর্জন করতে পারেনি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কুশলাদি জানতে চান। হাসিনা রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টি তার সামনে উত্থাপন করলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার বহু আগেই তার অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন। তার মতে সাদাদের অধিকার সুরক্ষিত করতে হবে। খ্রিষ্টানদের সম্মান যথাস্থানে থাকতে হবে। এর বাইরে তিনি একটি ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা চান। এর বিপরীতে মুসলিমদের তিনি আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করতে চান। নতুন করে মুসলিম দেশগুলো থেকে যেন কোনো অভিবাসন আমেরিকায় না হয় সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নেন। সু চি এ বিষয়ে অন্তত নিশ্চিত, রোহিঙ্গাদের সব মানুষকে মেরে ফেললেও তাদের ওপর কেউ হামলা করতে আসবে না। বড়জোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার দন্তনখরহীন হুমকি-ধমকিও একসময় থেমে যাবে। জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া সরাসরি মিয়ানমানের রোহিঙ্গা নিধনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে বিষয়টি একান্তই মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ। এ ব্যাপারে বাইরের কেউ কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করুক, সেটা রাশিয়া চায় না। এর আগে থেকে মিয়ানমারের পক্ষে চীন কড়া অবস্থান নিয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতও মিয়ানমারের ভালোবাসা পেতে চায়। দেশটি যতই দুর্বৃত্তপনা করুক, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। অন্যান্য আন্তর্জাতিক পক্ষগুলো যখন এই অন্যায় অনায়াসে সহ্য করছে, ভারত তখন ঝুঁকি নিয়ে ভালোবাসা হারাতে চাইবে কেন।

একটি পত্রিকা লিখেছে, রোহিঙ্গা সঙ্কটে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত। বিমানেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ শেখ হাসিনাকে এই বার্তা দেন। এর ওপর ভিত্তি করে পত্রিকাটি একটি আশা জাগানিয়া বিশ্লেষণ দেয়। দিল্লির অবস্থান কিভাবে পরিবর্তন হয়ে গেল তা উঠে আসে ওই বিশ্লেষণে। পত্রিকাটির মতে সব ক্রেডিট যাবে দুই হাইকমিশনারের পকেটে। তারা হলেন দিল্লিতে অবস্থানরত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এবং ঢাকায় অবস্থানরত ভারতের হাইকমিশনার। এই বিশ্লেষণ থেকে এটাই মনে হতে পারে, দিল্লির কাছে ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বের চেয়ে উপস্থিত দুই হাইকমিশনারের বক্তব্য অনেক বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। পরের দিন ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, নিউ ইয়র্কে শেখ হাসিনার সাথে সুষমার সাক্ষাৎ হলেও রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো কথা হয়নি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রভিশ কুমার নিউ ইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎটি ছিল আসলে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং খুবই সংক্ষিপ্ত। এ সময় আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি আসেনি।

রোহিঙ্গা গণহত্যা চলার সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মিয়ানমার সফর করতে কোনো ধরনের বিব্রতবোধ করেননি। এমনকি এই সময় সু চির প্রশংসা করতেও কোনো ইতস্তত করেননি তিনি। এর বিপরীত বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোরালো তদবির চালানো হলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যমসারির এক কর্মকর্তা একটি বিবৃতি দেন। ওই বিবৃতিতে রোহিঙ্গা নিধনের বিপক্ষে কোনো কথা ছিল না। এরমধ্যে ভারত শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে বাংলাদেশে। অনেক দেশ ও সংস্থা রোহিঙ্গাদের জন্য দফায় দফায় ত্রাণ এর মধ্যে পাঠিয়েছে। তবে ভারতীয় হাইকমিশনার একেবারে আয়োজন করে এই ত্রাণ হস্তান্তর করেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের হাতে। এরপর মিডিয়াও ফলাও করে এই ছবি ও খবর প্রকাশ করে। ভারতের ব্যাপারে বাংলাদেশের মিডিয়া বরাবর কিছুটা আবেগের বশবর্তী হয়ে চলে। প্রকৃত অবস্থার চেয়ে অনেক গুণ বাড়িয়ে বলার চেষ্টা করে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলও অনেকটাই দেশটির ওপর নির্ভর করতে চায়। বাস্তবে এর প্রতিফলন ঘটে না। ভারত নিরেট নিজেদের দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। রোহিঙ্গা নিধনের ফলে মিয়ানমারের সাথে ভারতের সম্পর্কের কোনো ঘাটতি হয়নি। নরেন্দ্র মোদি মিয়ানমার সফরে যে সমর্থন তাদের প্রদর্শন করেছেন সেখান থেকে সরে গেছে দেশটি এমন কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে অন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিবেশী ও দূরের কোনো প্রভাবশালী দেশই রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচানোর পক্ষে অবস্থান নেয়নি। মূলত রোহিঙ্গা নিধন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক ধরনের পরোক্ষ সমর্থন পেয়ে চলেছে। সেই ক্ষেত্রে প্রতারণাপূর্ণ একটি বক্তৃতাই সু চি উপহার দেবেন। এর চেয়ে বেশি কিছু প্রত্যাশা করা ভুল।
সু চি তার বক্তৃতায় বলেছেন, রাখাইন থেকে কেন মুসলমান জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে পালিয়ে যাচ্ছে সেটা অনুন্ধান করতে চান সু চি। এ ব্যাপারটি সারা বিশ্বের মানুষ জানে কেন সেখান থেকে রোহিঙ্গারা পালাচ্ছে। এর ওপর সু চির নির্দেশে গঠিত আনান কমিশনের প্রতিবেদনে বিষয়টা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। এরপরও রয়েছে সংবাদমাধ্যমে রোহিঙ্গা গণহত্যার অসংখ্য প্রামাণ্যচিত্র। গণহত্যা থেকে পালিয়ে বেঁচে যাওয়া এক আবদুল আজিজের কথা বিবিসি তুলে ধরে। তিনি জানান, বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় সৈন্যরা। চোখ খুলে তিনি দেখতে পান অন্য অনেক মানুষের সাথে গাদাগাদি করে তিনি একটি গোয়ালঘরে রয়েছেন। সবাইকে গরুর রশি দিয়ে বাঁধা হয়েছে। এদের কাউকে গুলি করে, কাউকে গলা কেটে হত্যা করা হচ্ছে। গুলি করার পরও যদি কেউ নড়েচড়ে তাকে আবার গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করা হচ্ছে। অনেক মানুষের মধ্যে তিনি পালানোর সুযোগ পেয়ে যান। বাড়ি ফিরে তিনি দেখতে পান সেই বাড়িটি ভস্ম হয়ে গেছে। প্রতিবেশীদের কাছে জানতে পারেন তার বাড়ির ওপর বোমা মারা হয়েছে। আজিজের বাবা-মা ছিল। তাদের আর কোনো খোঁজ তিনি পাননি। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা তিনি জানেন না। রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মানুষের জীবনের কাহিনীটি এ মানুষটির মতো। সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যম এর সাক্ষী। দুর্ভাগ্য হচ্ছে সু চি কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না।

বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেয়া ওই রোহিঙ্গা জানান, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন এমন কোনো রোহিঙ্গা তিনি পাননি। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় অপরাধ সংঘটনের বিচারে গঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক গণ-আদালত (পারমেনান্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল)। আদালতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও সরকারপ্রধান সু চির বিরুদ্ধে বিচার চলছে। আদালত রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রকৃতপক্ষে এই ধরনের প্রশ্নের উত্তরে জানা গেল এর সদস্য সংখ্যা ৫০-এর কম। নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ হওয়ার যে দাবি মিয়ানমার তুলেছে সেটাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। মূলত এই ধরনের ঘটনা সত্য কি না। না এটা সৃষ্টি করা হয়েছে পরিকল্পনা করে। একটি জাতিগোষ্ঠীকে মুছে ফেলার জন্য আরসার নাম করে বিবৃতি দেয়া হচ্ছে কি না। এগুলো নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এই ধরনের সংগঠন শুধু ‘নাম’ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে জাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্ব বিনাশ করে দেয়ার জন্য।

বাংলাদেশের নিরাপত্তা
বাংলাদেশের নিরাপত্তার বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের উৎখাত করে ক্ষান্ত হচ্ছে না। অনেক উদ্ধত ও আগ্রাসী মনোভাবে তারা প্রদর্শন করছে। সীমান্তে দেশটির সামরিক কর্মকাণ্ডের বিপুল তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে। সামরিক বিমান যুদ্ধজাহাজ রীতিমতো বাংলাদেশ সীমান্তে মহড়া দিচ্ছে। এরমধ্যে তারা বাংলাদেশের আকামসীমা লঙ্ঘন করেছে। শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এমন মনোভাবের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ কড়া কোনো প্রতিবাদ করেনি। সীমান্তে এত বিপুল সামরিক অভিযানের পরও বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী কোনো মুভমেন্ট করেনি। সৈন্য সমাবেশ করায়নি। বাস্তবতা হচ্ছে শান্তি একপক্ষীয় কোনো বিষয় নয়। বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় এ মনোভাব দশকের পর দশক ধরে দেখিয়ে আসছে। রোহিঙ্গাদের এ দেশে ঠেলে দেয়ার ক্ষেত্রে তারা যে স্বাধীনতা ভোগ করছে তা নজিরবিহীন। শান্তিপ্রিয়তাকে মিয়ামনার দুর্বলতা হিসেবে নিয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সুনাম অর্জন করেছে। সেবা দেয়ার মানসিকতা, অসাম্প্রদায়িক মানোভাব ও পেশাদারিত্বের জন্য তারা প্রশংসিত হয়েছে বিশ্বব্যাপী। রোহিঙ্গা সঙ্কটে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ভবিষ্যতে এর গতিপ্রকৃতি কোন দিকে যায় সেটা এখনো আঁচ করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সক্ষম এর প্রমাণ থাকতে হবে। শান্তির মনোভাবকে আগ্রাসী কোনো শক্তি যেন দুর্বলতা না ভেবে বসে, সেটা বোঝাতে হবে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যয়, সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ও যুদ্ধসরঞ্জাম মোট কথা প্রতিরক্ষা নীতি সুগঠিত হওয়া প্রয়োজন। নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিরাপত্তা আঞ্জাম নিজেদের অটুট করতে হবে। এক্ষেত্রে বন্ধু বলে আমরা কারো ওপর নির্ভর করতে পারি না। বন্ধুত্বের বিষয়টি অত্যন্ত আপেক্ষিক। একসময়ের বন্ধু সবসময়ের বন্ধু থাকবে এমন ভাবার আর সুযোগ নেই।

সামরিক বাহিনীর প্রয়োজন জাতির নিরাপত্তা রক্ষায়। যেকোনো আগ্রাসন মোকাবেলায় যথেষ্ট সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। এই প্রমাণ ও ধারণাও অন্যের কাছে পৌঁছাতে হবে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ে অনেক নেতিবাচক প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ করে উচ্চ ব্যয়ের বিষয়ে অনেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রকৃতপক্ষে দেশকে বহিঃশত্রুর হাত থেকে রক্ষার জন্য যতটা ব্যয় প্রয়োজন করতে হবে। একইভাবে অন্যরাও যাতে এটা বোঝে যে শুধু শান্তি রক্ষা নয় অন্যের আক্রমণ প্রতিহত করতেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী স¤পূর্ণরকমে সক্ষম।
jjshim146@yahoo.com

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/253426