চার দিকে বৃষ্টির পানি থৈ থৈ। ভেসে গেছে মাথা গোঁজার ঠাঁইও। সাঁতরে ত্রাণ আনতে যাচ্ছে এক রোহিঙ্গা শিশু
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, বুধবার, ১০:১৯

শরণার্থী শিবিরে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া

পাহাড়ধসের আশঙ্কা

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ডায়রিয়া ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তা মহামারী আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। অন্যান্য রোগব্যাধিও মারাত্মকরূপে ছড়িয়ে পড়ছে। যারা অসুস্থ হচ্ছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু, প্রসূতি ও দুগ্ধদানকারী মা। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা নিরলসভাবে সেবাদান করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। এ দিকে, টানা বৃষ্টিতে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পগুলো তছনছ হয়ে যাচ্ছে। শিশুসন্তানসহ ওইসব ক্যাম্পের বাসিন্দারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। কোনো কোনো ক্যাম্পে তিন দিন ধরে পানি জমে থাকার কারণে রোহিঙ্গারা অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। এ দিকে, অপরিকল্পিতভাবে পাহাড়ে ঘর তৈরি করায় পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ দিকে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বিপুল ত্রাণ এলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা। কোথাও কোথাও রোহিঙ্গাদেরকে খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে দেখা গেছে। বৃষ্টির মধ্যে ছোট্ট ছোট্ট শিশুকে নিয়ে রাস্তার পাশে ত্রাণের আশায় দাঁড়িয়ে আছেন রোহিঙ্গা মায়েরা। অপুষ্টিজনিত কারণে শত শত শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। স্বজনহারা অভুক্ত মানুষগুলো এখন কেবল বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে উখিয়া-টেকনাফের রাস্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শত শত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল মিলিটারি পুলিশকেও রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। এ দিকে, সীমান্ত এলাকা হয়ে এখনো দলে দলে শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। ওপারে এখনো হাজার হাজার মানুষ আটকে আছে বলে জানা গেছে।

গতকাল উখিয়া ও টেকনাফের কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় অগণিত মানুষ আসছে চিকিৎসার জন্য। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে অসুস্থ মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এদের মধ্যে অধিকাংশই আসছেন ডায়রিয়ায় অসুস্থ হয়ে। রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা দিতে বিভিন্ন ক্যাম্পের আশপাশে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের চারটি টিম কাজ করছে। গতকাল গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের বালুখালি ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায় কয়েক শ’ রোগীর ভিড়। সেখানে দায়িত্বরত ডাক্তার শিমুল এবং ডাক্তার মারুফা নাসরিন জানান, তাদের কাছে যারা চিকিৎসা নিতে আসছেন তাদের মধ্যে শতকরা ৭০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এর সাথে জ্বর, মাথা ব্যথাসহ ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা রয়েছে। যারা আসছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু। এই শিশুদের অনেকেই রয়েছে যারা অপুষ্টিজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন এই ক্যাম্পে ৭-৮ শ’ রোগী আসছে চিকিৎসাসেবা নেয়ার জন্য। এখানে দায়িত্বরত ডাক্তাররা বলেন, এখনো পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তখন ডায়রিয়া মহামারী আকার ধারণ করবে।

অপুষ্টিতে ভুগছে রোহিঙ্গা শিশুরা : রোহিঙ্গা শরণার্থী দ্বীন মোহাম্মদের ছেলে ইয়াসিন। শিশুটির বয়স ৭ মাস। সে অনুযায়ী শিশুটির ওজন হওয়ার কথা প্রায় ৬ কেজি। কিন্তু ওজন আছে চার দশমিক তিন কেজি। অসুস্থ এই শিশুটিকে নিয়ে বাবা-মা এসেছেন বেসরকারি সংস্থা এসইএফ এর বালুখালি ক্যাম্পে। শিশুটির ওজন করে সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানালেন, শিশুটি মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। এমন শিশু বিকলাঙ্গসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এভাবে অসংখ্য শিশু অপুষ্টিজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাচ্ছে। এসইএফের ওই কেন্দ্রে দায়িত্বরতা বলেছেন, প্রতিদিন তাদের ওখানে মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে এমন ২০-২৫ জনসহ ৪০-৫০টি শিশু আসছে। যারা সবাই অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগছে। এই সংস্থাটি ওইসব শিশুদের চিকিৎসা ও খাবার সরবরাহ করছে। এরূপ আরো বেশকিছু কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

বৃষ্টিতে তছনছ রোহিঙ্গা ক্যাম্প : গত শনিবার থেকে টানা বৃষ্টিতে তছনছ হয়ে গেছে রোহিঙ্গাদের কোনো কোনো ক্যাম্প। ওইসব ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা তাদের বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। কাস্টমস ছড়া ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, গতকালও সেখানে হাঁটু সমান পানি। এই পানির ভেতরেই বসে আছেন অনেক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। তাদের শিশুদের বুকে আগলে রেখে এভাবেই গত শনিবার থেকে তাদের দিন কাটছে। ওই ক্যাম্পে ৪১৮টি ঘর আছে। গতকাল সেখানে দেখা যায়, বেশির ভাগ ক্যাম্পের বাসিন্দা তাদের ঘর ভেঙে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ক্যাম্পের বাসিন্দা ফিরোজ আলম বলেন, শনিবার থেকে তারা ঘুমাতে পারেননি। তার পাঁচটি সন্তান। এই সন্তানদের নিয়ে শনিবার রাত থেকে তারা নির্ঘুম আছেন। ঘরের মধ্যে হাঁটু পানি থাকায় তাদের ঘুমানোর কোনোই সুযোগ নেই। ফিরোজ বলেন, এখন কোথায় যাবেন তা চিন্তা করে কিনারা করতে পারছেন না। ঘর যেসব সরঞ্জাম দিয়ে বানিয়েছিলেন তা বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে এগুলো আবার কিভাবে সংগ্রহ করবেন সেই চিন্তাও রয়েছে। এ ছাড়া ঘরে কোনো খাবার নেই। ঘর সরাবেন, না খাবার সংগ্রহ করবেন? সব মিলিয়ে নতুন করে আবারো তারা সমস্যায় পড়েছেন। শনিবার থেকে পানির মধ্যে থেকে ওই ক্যাম্পের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গতকাল দুপুরের দিকে পাশেই উঁচু স্থানে কয়েকজনকে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করতে দেখা যায়।

পাহাড়ধসের আশঙ্কা : গতকাল কুতুপালং, বালুখালী, মধুছড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাহাড়ে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের ঘর। কোথাও কোথাও উঁচুতে পাহাড় কেটে সেখানে ঘর তোলা হয়েছে। স্থানীয়রা বলেছেন, এতে পাহাড়েও ওইসব স্থানে পানি শোষণ করে তাতে ধস দেখা দিতে পারে। এভাবে আরো কয়েকদিন বৃষ্টি হলে ওইসব পাহাড়ের অংশ ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে ভয়াবহ বিপদের মধ্যে পড়তে পারে সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গারা।
প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ কম আসছে : বিপুল পরিমাণ ত্রাণ এলেও রোহিঙ্গারা বলছে প্রয়োজনের তুলনায় তা কম। গতকাল বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার সাথে কথা বলে জানা যায় তারা দিনে একবেলাও পুরোপেট খেতে পারছেন না। শিশুদের জন্য কোনো খাবার নেই। বয়স্করা যা খাচ্ছেন শিশুদেরও তাই খেতে হচ্ছে। আবার শিশুদের কি খাওয়ানো যাবে আর খাওয়ানো যাবে না, অনেক রোহিঙ্গা তা-ও জানে না। গতকাল দুপুরের দিকে কাস্টমস এলাকায় দেখা যায়, এক নারীকে একটি দুধের প্যাকেট দেয়া হয় তার শিশুর জন্য। কিন্তু ওই নারী জানে না কিভাবে ওই দুধ খাওয়াতে হবে। বালুখালী এলাকায় ইয়াসিন নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, তারা যে পরিমাণ খাবার পাচ্ছেন তা যথেষ্ট নয়। এমনও পরিবার আছে যাদের সংসারে ১০ জন সদস্য রয়েছেন; কিন্তু খাবার পেয়েছেন এক প্যাকেট।

২১ দিনের শিশুকে কোলে নিয়ে খাবারের খোঁজে মা : হামিদা বেগম (২৯)। সাত ছেলেমেয়ের মা। স্বামীকে মেরে ফেলেছে মগ ও বর্মিবাহিনী। অন্তঃসত্ত্বা হামিদা সন্তানদের নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পথে সন্তান জন্ম দেন শাহপরীর দ্বীপ এলাকায়। ২১ দিনের সন্তান নিয়ে গতকাল তাকে দেখা যায় কাস্টমস ছড়া এলাকায়। সাথে তার আরো দু’টি শিশুসন্তান। হামিদা বলেন, তার ঘরে মজুদ কোনো খাবার নেই। তাই বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় বের হতে হয়েছে। বৃষ্টিতে ওই ২১ দিনের শিশুটিও ভিজছে। একটি তোয়ালে দিয়ে তাকে মুড়িয়ে রেখেছে হামিদা। হামিদা বলেন, যে পরিমাণ খাবার পান তা দিয়ে ছেলেমেয়েদের এক বেলাও চলে না। এখানে এমন হয়েছে কেউ ডেকে খাবার দেয় না। সবাই অভুক্ত। কেউ কারো খোঁজ রাখে না। খাবার জোগাড় করে নিতে হয়। কিন্তু সন্তান প্রসবের পর থেকেই অসুস্থ থাকায় এবং রাত-দিন এভাবে পরিশ্রম করায়, না খেয়ে থাকায় তিনি এখন খুবই দুর্বল। তারপরও শিশুসন্তানদের জন্য তাকেই খাবার জোগাড় করতে হয়।

ত্রাণের সুষ্ঠু বণ্টন হচ্ছে না : গতকাল কুতুপালং এলাকায় সিয়ার আলী নামে এক রোহিঙ্গা বলেন, ত্রাণের সুষ্ঠু বণ্টন হচ্ছে না। কোথাও মানুষ পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছে, আর কোথাও পাচ্ছে না। দেখা যায় যেসব এলাকায় ত্রাণের গাড়ি রাখার ব্যবস্থা আছে সেখানের মানুষ বেশি ত্রাণ পাচ্ছে। আবার যেসব এলাকায় গাড়ি রাখার ব্যবস্থা নেই, সেখানের মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে না। যেসব এলাকায় গাড়ি ঢুকতে পারে না সেখানেও ত্রাণ যাচ্ছে না। এ দিকে প্রশাসন যেসব গাড়ি তাদের জিম্মায় নিচ্ছে সেসব গাড়ির ত্রাণও সুষ্ঠু বণ্টন হচ্ছে না বলে অভিযোগ মিলেছে।
রাস্তায় কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরেছে : গতকাল উখিয়া থেকে কক্সবাজারের রাস্তায় গাড়ি চলাচলে বেশ শৃঙ্খলা দেখা যায়। কোনো এলাকাতেই তীব্র যানজট ছিল না। রাস্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন দেখা যায়। তারা রাস্তায় কোনো গাড়ি থামতে দিচ্ছে না। ভ্রাম্যমাণ আদালতও সক্রিয় দেখা গেছে। রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে ত্রাণ দিতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এতে রাস্তার জটলা অনেকাংশেই কমে আসছে।

চলছে প্রতারণা : গতকাল কুতুপালং বাসস্টানের পাশে এক রোহিঙ্গার ঘরে দেখা যায় একটি পোস্টার টাঙানো। পোস্টারে লেখা রয়েছে ‘জান্নাতি কাফেলা’। নিচে লেখা রয়েছে, সহযোগিতায় : মামুনুর রশিদ। ওই ঘরের বাসিন্দা ফরিদা বলেন, ওই পোস্টারটি ঘরে টাঙিয়ে দিয়ে একজন ছবি করে নিয়ে গেছে। বলে গেছে ওটা একটি টোকেন। পরদিনই তাদের কাছে বিপুল সাহায্য চলে আসবে। যাদের ঘরে ওই পোস্টার পাওয়া যাবে তাদেরই সাহায্য দেয়া হবে। সাত দিন ধরে ত্রাণ পাওয়ার আসায় ফরিদা তার ঘরের ভেতরে ওই পোস্টার টাঙিয়ে রেখেছেন। কিন্তু কেউ সাহায্য নিয়ে আসছে না। একটি সূত্র বলেছে, এটি একটি প্রতারণা। অনেকেই নানা উপায়ে এভাবে প্রতারিত করছে রোহিঙ্গাদের। অনেকেই বলেছেন, ফরিদার ঘরের যে ছবি তুলে নেয়া হয়েছে তা দেখিয়ে হয়তো কেউ অন্য কোথাও থেকে অর্থ হাতিয়ে নেবে।

মা-মেয়ে দুইজনই এখন বিধবা : আমিনা খাতুন (৪২)। স্বামী ওমর মিয়া। ওমর মিয়াকে বর্মিবাহিনী গুলি করে হত্যা করে। ঘরের মধ্যেই আগুনে পুড়ে ফেলা হয় তাকে। গত ২৫ আগস্ট বুচিডংয়ের টংবাজারে এই ঘটনা ঘটে। তাদের মেয়ে হামিদা (২২)। হামিদার স্বামী রহমতা করিমও বর্মিবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর আমিনা খাতুন তার অপর দুই মেয়ে আছিয়া আর খোদেজাকে নিয়ে চলে আসেন বাংলাদেশে। আর তার মেয়ে হামিদা তার দুই সন্তান সোলায়মান ও জান্নাত আরাকে নিয়ে এপারে আসেন। দুই মা-মেয়ের মধ্যে দেখা হয় শাহপরীর দ্বীপে। যখন দেখা হয় তখন মা-মেয়ে দুইজনই বিধবা।
এখনো আসছে শরণার্থীরা : গতকালও বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে শরণার্থীরা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন বলে জানা যায়। তবে এখন আগের চেয়ে কমে আসছেন বলে সীমান্ত সূত্র বলেছে।

রোহিঙ্গা ধর্ষণ ও ছিনতাই : পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দু-একজন এপারেও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ মিলেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলেছেন, এই দুর্বৃত্তরা কেউ রেহাই পাবে না। টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালী পাড়ার সাগর পয়েন্টে মিয়ানমার থেকে ট্রলারে করে রোহিঙ্গা আসার পথে মেয়েদের স্বর্ণালঙ্কার কেড়ে নেয় এবং কয়েকজন রোহিঙ্গা তরুণীকে পাশের ঝোপ জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা হলোÑ আবদুস শুক্কুর, মো: তৈয়ব, সিরাজ, মো: আবদুল্লাহ, মো: আমিন, আব্দুল আমিন, নাসির কেফায়েত উল্লাহ, হাসান, শেখ আবদুল্লাহ, আলী হোসেন ও হোসেন আলী। জানা গেছে, এদের মধ্যে তৈয়ব ও আবদুল্লাহ ইয়াবা ব্যবসার সাথেও জড়িত। এর আগেও এরা এই জঘন্য কাজ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার রাতে শাহপরীর দ্বীপ এলাকায়ও কয়েক রোহিঙ্গা নারীর স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাই হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন বলেছেন, তাদের কাছে যেসব নৌকার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রত্যেক নৌকার মাঝির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যারা এই কাজ করেছে তাদের নৌকা আগুনে পুড়ে ফেলা হয়েছে। সূত্র জানায়, যে ক’টি নৌকা ও ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে তার প্রায় বেশির ভাগই ঘটেছে মাঝনদী বা সাগরে ছিনতাই করার সময় ধস্তাধস্তির সময়। এ দিকে টেকনাফ থানার ওসি মাঈন উদ্দিন খান গত রাতে বলেছেন, এমন কোনো অভিযোগ তাদের কাছে যায়নি।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/253246