১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, মঙ্গলবার, ৮:০৫

সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজ

বগুড়ায় অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করলেন ছাত্রলীগ নেতারা

উচ্চমাধ্যমিকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রাক্নির্বাচনী পরীক্ষায় অসদাচরণের অভিযোগে দুই ছাত্রকে বহিষ্কারের জেরে বগুড়ার সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় অধ্যক্ষ এজাজুল হককেও লাঞ্ছিত করা হয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। কলেজের অধ্যক্ষের অভিযোগ, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ কুমার সাহার নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটানো হয়।

এ ঘটনায় গতকাল রাতেই শাজাহানপুর থানায় বিশ্বজিৎ কুমার সাহাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন অধ্যক্ষ এজাজুল হক। হামলা-ভাঙচুর ও সরকারি সম্পদ বিনষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। মামলার পর এস এম জোবায়ের নামে কলেজের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী এবং অনিক নামে স্নাতকের এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অধ্যক্ষ এজাজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৬ আগস্ট থেকে কলেজে উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণির প্রাক্নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হয়। ফি পরিশোধ করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের নিয়ম। কিন্তু ছাত্রলীগ নামধারী কয়েকজন ফি পরিশোধ না করেই পরীক্ষায় অংশ নেয়। ২৬ আগস্ট খণ্ডকালীন শিক্ষক নিলুফার রহমান পরীক্ষার ফি চাওয়ায় মেজবাহুল হোসেন ও জোবায়ের হোসেন নামে দুই শিক্ষার্থী তাঁর সঙ্গে অসদাচরণ করে। গতকাল সোমবার প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষার হলে ওই দুই শিক্ষার্থী আবারও অসদাচরণ করলে তাৎক্ষণিক তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এজাজুল হক বলেন, ওই দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের জেরে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বিশ্বজিতের নেতৃত্বে দুপুরে তাঁর কক্ষে হামলা চালানো হয়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে লাঞ্ছিত ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা বিশ্বজিৎ বলেন, ঘটনার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত থাকলেও হামলা-ভাঙচুরের সঙ্গে তাঁর নিজের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ছাত্রলীগের কেউ ভাঙচুর করেননি।

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, গতকালের ঘটনায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের কারও সংশ্লিষ্টতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত নয়টার দিকে মামলা করেন অধ্যক্ষ এজাজুল হক। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে গতকাল রাতে জরুরি বৈঠক করে বগুড়া জেলা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সরকারি আজিজুল হক কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারুক আহমেদ বলেন, জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এরপর কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1320411